কালিম্পং, 20 জানুয়ারি: দার্জিলিংয়ের পর এবার প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার (Pradhan Mantri Awas Yojana) তদন্তে কালিম্পংয়ে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। কালিম্পং জেলার আবাস যোজনার পরিস্থিতি দেখে সন্তোষ প্রকাশ করলেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। দূর্গম পাহাড় পেরিয়ে এদিন পরিদর্শন করেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।
প্রক্রিয়াগত কারণে দীর্ঘদিন আবাস যোজনার কাজ নিয়ে জটিলতা তৈরি হলেও সিংহভাগ শেষ হয়ে গিয়েছে। ফলে জেলা প্রশাসনের কাজে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। বৃহস্পতিবার সকালে দার্জিলিংয়ের সার্কিট হাউজ থেকে কালিম্পং পৌঁছেছেন রিসার্চ ফাউন্ডেশনের দুই সদস্য এসকে শর্মা ও অনুজ যোশী। এরপর শুক্রবার, অর্থাৎ আজ সকালে তাঁরা পরিদর্শনে বেরন। এদিন সকালে কালিম্পং জেলার 1 নম্বর ব্লকের কাফের গাঁও অঞ্চলের কাঙ্কেবঙ গাঁওয়ে যান তাঁরা। সেখানে প্রথম পর্যায়ে 42 জন উপভোক্তার নাম তালিকাভুক্ত হয়েছিল। প্রথম পর্যায়ের তালিকা অনুসারে চারজন উপভোক্তার খোঁজ মেলেনি। অর্থাৎ সংশোধিত তালিকায় তারা আনআইডেন্টিফায়েড।
তবে বাকি 38 জন উপভোক্তার বাড়ি ইতিমধ্যে তৈরি হয়ে গিয়েছে। যে সকল উপভোক্তাদের চিহ্নিত করা যায়নি সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখার পাশাপাশি যে সকল উপভোক্তাদের বাড়ি ইতিমধ্যে তৈরি হয়েছে তাঁদের নথিও খতিয়ে দেখেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। যদিও এদিনের পরিদর্শন নিয়ে জেলাশাসক কিংবা প্রতিনিধি দলের সদস্যরা কেউ মুখ খোলেননি ৷ প্রসঙ্গত, কালিম্পং নতুন একটি জেলা। 2017 সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দার্জিলিং থেকে আলাদা হয়ে গিয়ে নতুন জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে কালিম্পং। কিন্তু দার্জিলিংয়ের পাশাপাশি জটিলতা রয়েছে কালিম্পং জেলাতেও।
2018 সালের তালিকার ভিত্তিতে তদন্ত করা হলেও জিটিএ (গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়্যাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) এলাকায় 2011 সালের তালিকার উপরই তদন্ত করতে হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে ৷ কারণ 2000 সালে শেষ দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলায় পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়েছিল। পঞ্চায়েত না-থাকায় নতুন করে তালিকা তৈরি হয়নি। এরপর 2017 সালের আন্দোলনের ফলে থমকে গিয়েছিল বরাদ্দ অনুমোদনের কাজ। পরে বিনয় তামাং প্রশাসক থাকাকালীন 2019 সালে আবাস যোজনার বরাদ্দ ছাড়া হয়। পাহাড়ের ভৌগোলিক অবস্থানের জন্য কিছু অতিরিক্ত টাকা কেন্দ্রের তরফে আবাস যোজনার জন্য বরাদ্দ করা হয়।
আরও পড়ুন: আবাস যোজনার তদন্তে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল ! হরিশ্চন্দ্রপুরে খ্যাপা মোষের তাড়া
সমতলের জন্য 3 লক্ষ 68 লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হলেও পাহাড়ের জন্য কেন্দ্রের তরফে 4 লক্ষ 41 হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়। তবে দার্জিলিং জেলার চাইতে কালিম্পং জেলার আবাস যোজনার পরিস্থিতি অনেকটাই ভালো এবং সেরকম দুর্নীতির অভিযোগও কম রয়েছে বলে জানা গিয়েছে ৷ কালিম্পং জেলায় 264টি দফায় মোট 2 লক্ষ 30 হাজার 13 জনের জন্য আবাস যোজনায় তালিকা নাম নথিভুক্ত করা হয়েছিল। তার মধ্যে 1 লক্ষ 7 হাজার 120টি বাড়ির জন্য বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মাত্র 61 হাজার 635 জনের বাড়ির কাজ শেষ হয়েছে বা উপভোক্তারা বাড়ি পেয়েছেন। বাকিরা কেন তালিকাভুক্ত হওয়ার পরে বরাদ্দ পাননি বা কেন প্রক্রিয়ায় আটকে রয়েছে সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।