ঝাড়গ্রাম, 3 জুন : রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়সহ বিভিন্ন রাজ্যে পঙ্গপালের হানা ইতিমধ্যেই আতঙ্ক তৈরি করেছে । এবার ঝাড়গ্রামে পঙ্গপাল জাতীয় পোকার দেখা মেলায় চিন্তায় জেলার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চাষিরা । বন বিভাগে খবর দিলে তারা জানায়, এই পোকা পঙ্গপাল প্রজাতিরই । তবে, উত্তর-পশ্চিম ভারতে যে পঙ্গপাল হানা দিয়েছে সেই প্রজাতির থেকে ছোটো ।
ঝাড়গ্রামের সাঁকরাইল ব্লকের জোড়াশাল গ্রামে অজয় দে নামে এক ব্যক্তির চাষজমির শালগাছে দেখা যায় পঙ্গপাল জাতীয় পোকা। গত চারদিন ধরে সেই পোকা ওই বাগানে ঘুরে বেড়াচ্ছে । খেয়ে ফেলেছে লাউ, কুমড়ো, লঙ্কা, পুঁই গাছের পাতা । যাতে শুকিয়ে যাচ্ছে গাছগুলি । বিষয়টি নিয়ে গতকাল বনবিভাগকে জানান অজয় দে । বনবিভাগের কর্মীরা পোকাগুলি দেখে জানান, এগুলি পঙ্গপাল প্রজাতিরই । তবে এবিষয়ে জেলা প্রশাসন নিশ্চিতভাবে কিছু বলতে পারেনি । এদিকে, প্রাণীবিদ্যার এক অধ্যাপক জানান, এটা পঙ্গপাল নয় । গতকাল বিকেলে জোড়াশাল গ্রামে যান সাঁকরাইলের BDO মিঠুন মজুমদার ও কলাইকুন্ডা রেঞ্জের বনকর্মীরাও । তাঁরাও বিষয়টি খতিয়ে দেখেন ।
এবিষয়ে অজয় দে বলেন, "লকডাউনের জন্য বাইরে কাজকর্ম নেই । তাই বাড়ির সামনে ছ'বিঘা জমিতে সবজি লাগিয়েছিলাম । কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে টিভিতে যে পোকাটি দেখাচ্ছে, আমার সবজি খেতের উপরে সেই ধরনের পোকা দেখছি । পঙ্গপালের মত পোকা দেখায় চিন্তিত গ্রামবাসীরাও ।"
এবিষয়ে খড়গপুরের DFO অরূপ মুখোপাধ্যায় বলেন, "এগুলি পঙ্গপাল । তবে অন্য ধরনের । এগুলো আকারে ছোটো । উত্তর-পশ্চিম ভারতে যে পঙ্গপাল হানা দিয়েছে তার মতো নয় । এরা সাধারণত ফসলের ক্ষতি করে । পরিস্থিতির উপর আমরা নজর রেখেছি । প্রয়োজন হলে কীটনাশক প্রয়োগ করা হবে ।" তবে ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজের প্রাণীবিদ্যার অধ্যাপক তথা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দেবনারায়ণ রায় বলেন, "এগুলো পঙ্গপাল নয় । এক ধরনের গঙ্গাফড়িং । দেহের গঠনের মধ্যে পার্থক্য এবং বর্ণবৈচিত্র রয়েছে । পঙ্গপালের আকার আয়তন এর থেকে বড় হয় ।"
আপাতত আতঙ্ক না ছড়িয়ে গ্রামবাসীকে সচেতন হওয়ার বার্তা দিয়েছে জেলা প্রশাসন । পরিস্থিতির উপর তাঁরা নজর রেখেছেন বলে জানিয়েছেন ।