ঝাড়গ্রাম,15 এপ্রিল : বিধবা ভাতার টাকা পোস্ট অফিস থেকে তোলার জন্য বাড়ির বাইরে বেরিয়ে ছিলেন 72 বছরের এক বৃদ্ধা । রাস্তায় তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি । সেই দৃশ্য দেখেই ছুটে যায় পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর স্বপন গড়াই । নিজের মোটরবাইকে করে ঝাড়গ্রাম হেড পোস্ট অফিসে টাকা তুলিয়ে বৃদ্ধাকে বাড়িতে ছেড়ে আসেন তিনি । স্বপন বাবু জানান, খুবই আনন্দিত বোধ করছি এই কাজ করতে পেরে ।
লকডাউনের জেরে খাঁ খাঁ করছে রাস্তা । নেই কোনও যাত্রীবাহী গাড়ি । ঝাড়গ্রাম শহরের বুকে সবচেয়ে বড় হেল্পলাইন হল টোটো পরিষেবা । কিন্তু রাস্তায় কোনও টোটো নেই । ফলে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বয়স্ক মানুষদের৷ ব্যাঙ্কে বা পোস্ট অফিসে গিয়ে পেনশনের টাকা তুলতে পারছেন না তাঁরা । বুধবার বিধবা ভাতার টাকা পোস্ট অফিস থেকে তোলার জন্য বাড়ির বাইরে বেরিয়ে ছিলেন 72 বছরের এক বৃদ্ধা । ভেবেছিলেন প্রতিবার পেনশন তুলতে যাওয়ার সময় যেভাবে টোটো করে যান সেভাবেই যাবেন । কিন্তু এদিন রাস্তায় কোনও টোটো না পেয়ে পায়ে হেঁটেই পোস্ট অফিসে যাবার সিদ্ধান্ত নেন ওই বৃদ্ধা । বয়স্ক শরীরে হেঁটে যাবার মত ক্ষমতা নেই । তার তাই তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই বৃদ্ধা । সেই দৃশ্য দেখেই ছুটে যায় পুলিশের সাব-ইনস্পেক্টর স্বপন গড়াই । স্বপন গড়াই ওই বৃদ্ধাকে নিজের মোটরবাইকে করে ঝাড়গ্রাম হেড পোস্ট অফিসে টাকা তোলার জন্য নিয়ে যান ।
এদিন এই সাব-ইন্সপেক্টরের বৃদ্ধার পাশে দাঁড়ানোর বিষয়টিকে সকলেই সাধুবাদ জানাচ্ছে । জানা যায় ওই বৃদ্ধার নাম ঝর্ণা সাহা । ঝাড়গ্রাম শহরের বাজার এলাকায় তাঁর বাড়ি । স্বামী বহু আগেই গত হয়েছেন । দুই মেয়ে ছিল তাঁদেরও বিয়ে হয়ে গিয়েছে l তাই তিনি একাই বাড়িতে থাকেন । প্রতিমাসে বিধবা ভাতার যা টাকা পান তা দিয়েই কোনওমতে চলে যায় ।
বৃদ্ধা ঝর্ণা সাহা বলেন, ''একজন পুলিশ আমাকে মোটরসাইকেলে করে পোস্ট অফিসে পৌঁছে দিলেন l আমার খুব উপকার হল। মা বিপত্তারি সবসময় ওঁকে রক্ষা করুন l'' ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের DIB ডিপার্টমেন্টের দায়িত্বে রয়েছে স্বপন গড়াই । যদিও এই বিষয় নিয়ে স্বপন গড়াই তেমন কিছু বলতে চাননি । তিনি জানান, তাঁর বাড়িতেও বয়স্ক মানুষ রয়েছে ৷ তিনি জানেন তাঁদের কতটা কষ্ট হয় দূরে কোথাও হেঁটে যেতে হলে । তিনি শুধু বলেন , ''ওঁকে পোস্ট অফিসে পৌঁছে দিতে পেরে খুবই আনন্দিত ।''