ঝাড়গ্রাম, 11 অগস্ট: 1908 সালে আজকের দিনেই ফাঁসির মঞ্চে শহিদ হন বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসু ৷ এই দিনটিকে আত্মবলিদান দিবস হিসেবে পালন করা হল ঝাড়গ্রাম শহরে ৷ জেলার ঘোড়াধরার জেলখানা মোড়ে ক্ষুদিরাম বসুর আবক্ষ মূর্তিতে মাল্যদান করা হয় ৷ সেখানে শহিদ ক্ষুদিরাম বসুকে সম্মান জানানো হয় ৷ ঝাড়গ্রাম পৌরসভার তরফে এই শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের অনুষ্ঠান করা হয় ৷ পাশাপাশি, ঝাড়গ্রাম রিপোর্টার্স ক্লাবের তরফেও ক্ষুদিরাম বসুর আবক্ষ মূর্তিতে সম্মান জানানো হয় ৷
1889 সালের 3 ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারতের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার হবিবপুরের মোহবনী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন ক্ষুদিরাম বসু ৷ কিশোর বয়স থেকে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলেন ৷ তবে, 18 বছর বয়সে তাঁর প্রথম বিপ্লবী অভিযান ব্যর্থ হয়েছিল এবং ফাঁসি-কাঠে ওঠেন তিনি ৷ 1908 সালে 29 এপ্রিল ব্রিটিশ ভারতের মুজফ্ফরপুরের ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ডকে হত্যার চেষ্টা করেছিলেন তিনি এবং বিপ্লবী প্রফুল্ল চাকী ৷
কিন্তু, সেদিন প্রিঙ্গল কেনেডি নামে এক ব্রিটিশ ব্যারিস্টারের স্ত্রী এবং মেয়ের গাড়ির সঙ্গে কিংসফোর্ডের গাড়িকে গুলিয়ে ফেলেন তাঁরা ৷ ফলে কেনেডির স্ত্রী এবং মেয়ের গাড়িতে বোমা মারেন ক্ষুদিরাম বসু এবং প্রফুল্ল চাকী ৷ যে ঘটনায় প্রিঙ্গল কেনেডির মেয়ে ঘটনাস্থলেই মারা গিয়েছিলেন ৷ পরবর্তী সময়ে তাঁর স্ত্রীও মারা যান ৷ এই ঘটনার পর ক্ষুদিরাম বসু 25 মাইল পথ পায়ে হেঁটে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন ৷ কিন্তু, একটি জায়গায় জলের খোঁজ করতে গিয়ে পুলিশের মুখোমুখি হন তিনি ৷
তাঁকে দেখে পুলিশের সন্দেহ হয় ৷ কিন্তু, সদ্য কৈশোর পেরনো ক্ষুদিরাম পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে ধরা পড়ে যান ৷ তাঁর কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছিল বলে দাবি করে ব্রিটিশ পুলিশ ৷ এর পর বিচারে ক্ষুদিরাম বসুকে ফাঁসির সাজা শোনায় করে ব্রিটিশ বিচার ব্যবস্থা ৷ 11 অগস্ট তাঁকে ফাঁসি কাঠে ঝোলানো হয় ৷ তাই আজকের এই দিনটিকে আত্মবলিদান দিবস হিসেবে পালন করা হয় ঝাড়গ্রামে ৷ ট্রেনে করে কলকাতা ফেরার সময় তৎকালীন ব্রিটিশ পুলিশের একজন সব-ইন্সপেক্টর নন্দলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে ধরা পড়ে যান প্রফুল্ল চাকী ৷ তবে, গ্রেফতারীর আগে নিজেকে গুলি করে আত্মহত্যা করেছিলেন তিনি ৷
আরও পড়ুন: আজও শহিদ ক্ষুদিরামের স্মৃতিতে বুঁদ মুজফ্ফরপুর
এ দিন ক্ষুদিরাম বসুর আবক্ষ মূর্তিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য দেন ঝাড়গ্রাম পৌরসভার চেয়ারম্যান কবিতা ঘোষ, 10 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অজিত মাহাতো, 7 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গোবিন্দ সোমানি-সহ ঝাড়গ্রাম পৌরসভা অন্যান্য কর্তা ব্যক্তিত্বরা ৷ উপস্থিত ছিল ঝাড়গ্রাম রিপোর্টার্স ক্লাবের সদস্যরাও ৷