ঝাড়গ্রাম, 18 মার্চ: উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার খাতা পাওয়া গেল পরীক্ষার্থীর বাড়ি থেকেই (Hs Examinee Returned Home by Submitting Question Paper)। এমনই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গেল ঝাড়গ্রাম শহরের শ্রীরামকৃষ্ণ সারদাপিঠ উচ্চ বিদ্যালয়ে। শনিবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার কলাবিভাগের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষার শুরু থেকেই সবই ঠিক ছিল। পরীক্ষা শেষে খাতা জমা নেওয়ার সময় উত্তরপত্রের পরিবর্তে প্রশ্নপত্র জমা নিয়ে নেন পরীক্ষক। খাতা প্যাকিং করার সময় দেখা যায় একটি উত্তরপত্রের বদলে প্রশ্নপত্র রয়েছে। তারপরে বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ করে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ইলা পট্টনায়ক।
স্কুলের গেটের বাইরে বেরিয়ে দেখে কোনও পরীক্ষার্থী নেই সকলেই বাড়ি চলে গিয়েছে। খোঁজখবর করে জানা যায়, ওই পরীক্ষার্থী ঝাড়গ্রাম ননীবালা বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী। তারপর এই বিষয়টি ননীবালা বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা অরুন্ধতী সেনকে ফোন করে জানানো হয়। ননীবালা বালিকা বিদ্যালয় জানায় ওই পরীক্ষার্থীর বাড়ি ঝাড়গ্রাম শহরের 4 নম্বর ওয়ার্ডের বাবুনঝরিয়া এলাকায়। সেইসঙ্গে ছাত্রীর বাড়িতে ফোন করেন প্রধান শিক্ষিকা।
আরও পড়ুন: সিট খোঁজা নিয়ে বচসা দু'টি স্কুলের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের মধ্যে, উত্তেজনা ভিঙ্গোলে
ছাত্রীর বাবা জানান, এখনও সে পরীক্ষা দিয়ে বাড়িতে ফেরেনি। সারদাপীঠ স্কুলের দুই অফিস স্টাফ সঙ্গে পুলিশ নিয়ে রওনা দেন ওই ছাত্রীর বাড়ির উদ্দেশ্যে। তাঁরা যখন বাড়ি পৌঁছন দেখেন, সবেমাত্র ওই পরীক্ষার্থী টোটো থেকে নেমে বাড়িতে ঢুকেছে। পরীক্ষার্থীকে বাইরে ডাকা হলে বাইরে এসে স্কুলের অফিসের স্টাফ এবং পুলিশ দেখে অবাক হয়ে যায় ওই পরীক্ষার্থী। পরীক্ষার্থীকে বলা হয় তুমি উত্তরপত্র সঙ্গে নিয়ে এসেছ, সে বলে না আমি তো জমা দিয়ে এসেছি। পরীক্ষার্থীকে তার ব্যাগ নিয়ে আসতে বলা হয় ৷ বাড়ির ভিতর থেকে ব্যাগ নিয়ে এসে ব্যাগ খুললে দেখা যায় পিটবোর্ডে সাঁটানো রয়েছে উত্তরপত্র ।
উত্তরপত্র দেখে চমকে যায় সে। সে বলে আমি তো জমা দিয়েছিলাম ব্যাগে কীভাবে এল! তারপরে সেই উত্তরপত্র সংগ্রহ করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। ওই পরীক্ষার্থী বলে, "আমি পরীক্ষার শেষে খাতা জমা দিয়েছিলাম। ভুল করে হয়তো খাতার বদলে প্রশ্নপত্র জমা দেওয়া হয়ে গিয়েছিল। পরীক্ষার্থীর বাবা মঙ্গল মুর্মু বলেন, "আমাকে স্কুল থেকে ফোন করেছিল। আমি বললাম মেয়ে এখনও বাড়ি ফিরেনি। মেয়ের বাড়ি ফেরার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ আসে এবং স্কুলের লোকজন আসে পরীক্ষার খাতা বাড়ি থেকে নিয়ে যান। বাড়িতে পুলিশ দেখে আমার মেয়ে খুব ভয় পেয়ে গিয়েছে।"
আরও পড়ুন: বাবার মৃতদেহ বাড়িতে রেখে উচ্চমাধ্যমিক দিল মেয়ে, ফিরে করল মুখাগ্নি
যদিও শ্রীরামকৃষ্ণ সারদাপীঠ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ইলা পট্টনায়ক বিদ্যালয়ের পরীক্ষক তথা শিক্ষিকার ভুলের জন্যই এই সমস্যাটা হয়েছে বলে দাবি করেন । তিনি বলেন, "বিষয়টি আমার নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের বিদ্যালয়ের কর্মীরা এবং পুলিশ গিয়ে ছাত্রীর বাড়ি থেকে উত্তরপত্র নিয়ে আসে। দায়িত্বে থাকা পরীক্ষক শিক্ষিকাকে আমি সতর্ক করেছি।" ঝাড়গ্রাম জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক তথা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার কনভেনার শক্তিভূষণ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "এই বিষয়টি কখনও কাম্য নয়। ভুলবশত হয়ে গিয়েছে। পরবর্তী ক্ষেত্রে এই ধরনের ঘটনা যেন না-ঘটে তার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে ৷"