ঝাড়গ্রাম, 22 মে: শান্তিপুর্ণ বনধে অশান্তি ঘটাতে এলে আগুন জ্বলবে ৷ এমনটাই হুঁশিয়ারি দিলেন আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের নেতারা । কুড়মি- মাহাতোদের তপসিলি উপজাতির অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না ৷ এই দাবিকে সামনে রেখে সোমবার 12 ঘণ্টা বাংলা বনধের ডাক দিয়েছিল আদিবাসী সঙ্গেল অভিযান । সোমবার সকাল থেকে ঝাড়গ্রাম জেলা জুড়েই বনধের প্রভাব পড়েছে । সকাল থেকে রাস্তায় কোনও বেসরকারি বাসের দেখা নেই । কেবলমাত্র সরকারি বাস রয়েছে। তাও সংখ্যায় খুবই কম । পণ্যবাহী লরিও তেমন একটা চোখে পড়ছে না। ঝাড়গ্রাম শহরের বুকে সিংহভাগ দোকানই ছিল বন্ধ ।
ঝাড়গ্রাম শহরের প্রাচীন বাজার জুবলি মার্কেট এবং কোর্ট রোড চত্বরের বাজার বন্ধ রয়েছে । সবজি এবং মাছ বাজার বসলেও ব্যবসায়ীদের সংখ্যা কম । স্বাভাবিক দিনে সকালবেলায় ঝাড়গ্রাম শহরের প্রাণকেন্দ্র পাঁচ মাথার মোড়ে বাস যাত্রীদের ভিড় চোখে পড়ার মতো থাকে । কিন্তু আজ ভিড় নেই বললেই চলে । ঝাড়গ্রামে ঢোকার মুখে সারদাপিঠ মোড়ে রাস্তায় বেরিগেট রেখে বনধের সমর্থনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে দেখা যায় আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের সমর্থকদের । যদিও আদিবাসীদের সর্ববৃহৎ সংগঠন ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল এই বনধের বিরোধিতা করেছে । রবিবার রাতে তারা ঝাড়গ্রাম শহরে মাইকে প্রচার করে জানিয়েছেন, এই বনধ পালন করার দরকার নেই ৷ স্বাভাবিক দিনের মতোই জনজীবন থাকবে । বনধের বিরোধিতায় নেমেছিলেন ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের জেলার নেতা ঢেঁঙ্গা হাসদাও ।
যদিও তারপরেও সোমবার সকাল থেকেই বনধের প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে জেলা জুড়ে ৷ গোপীবল্লভপুরে দোকানপাট খোলা থাকলেও রাস্তায় যানবাহনের দেখা নেই ৷ বেলপাহাড়ি, শিলদা এলাকায় বনধের প্রভাব পড়েছে যথেষ্ট । আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের পশ্চিমবঙ্গ জোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট হেড বুদ্ধেশ্বর মুর্মু বলেন, "পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে আমাদের এই বাংলা বনধ চলছে । আমরা আশা করছি তা সফল হবে । আজ সকাল থেকে রাস্তায় একটিও বাসের দেখা নেই । গতকাল আমরা জেলা জুড়ে জোরালো প্রচার করেছি । আমাদের মূল দাবি মাহাতো কুড়মি জাতিকে এসটি করার জন্য রাজ্য সরকার যে চক্রান্ত করছে তা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে । তাদেরকে এসটি করা মানে মূল আদিবাসীদের জীবন হত্যা করার সমান ৷"
এই বনধের বিরোধিতা করেছে ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল। এই প্রসঙ্গে বুদ্ধেশ্বর মুর্মুর বক্তব্য, তাঁদের যেকোনও কার্যক্রমে ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল বিরোধিতা করে । সম্ভবত তারা চাইছে কুড়মি জাতিরা এসটি হোক । তাই কুড়মিদের সমর্থন দিয়ে তাঁদের বনধকে সফল করতে দিচ্ছে না ভারত জাগাত মাঝি পারগানা মহল । ভারত জাগাত মাঝি পারগানা মহল গুন্ডাগারদির মত কাজ করছে । ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলকে ঝাড়গ্রামের প্রশাসন সহযোগিতা করছে । তাই তার বনধের বিরোধিতায় প্রচার করতে পারছে বলে তিনি জানান । তাঁর দাবি, "আমরা শান্তিপূর্ণ বনধ পালন করছি । যদি এইভাবে আমাদের সঙ্গে হতে থাকে ৷ পুলিশ প্রশাসন যদি কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করে ৷ তাহলে ঝাড়গ্রাম জেলা জুড়ে আগুন জ্বলবে ৷ আর তার জন্য দায়ী থাকবে প্রশাসন ।"
আরও পড়ুন: রাস্তাঘাট ফাঁকা, 12 ঘণ্টার বনধ শুরু আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের