ঝাড়গ্রাম, 19 সেপ্টেম্বর: রীতি অনুযায়ী দেবীপক্ষ শুরুর আগেই পুরাতন ঝাড়গ্রামের মল্লদেব রাজপরিবারে শুরু হয়ে গেল দুর্গাপুজো ৷ প্রথা অনুযায়ী কৃষ্ণপক্ষের নবমী তিথি অর্থাৎ সোমবার থেকেই শুরু হয়ে গেল দুর্গাপুজো । এই পুজো চলবে দশমী পর্যন্ত । বিগত প্রায় 400 বছর ধরে এই প্রথা চলে আসছে। এখানে দেবী পটেশ্বরী । রাজ পরিবারের কুলদেবতার মন্দির থেকে প্রাচীন একটি খড়্গকে নিয়ে এসে পুজো শুরু হয়। এখানে অস্ত্রপুজোর মাধ্যমে দেবী দুর্গার পুজো শুরু হয়(Durga Puja Started at Jhargram Mallarajbari before Devipaksha)।
রাজবাড়ির দস্তাবেজ অনুযায়ী পুজো শুরুর আনুমানিক সন 1016 বঙ্গাব্দ । ঝাড়গ্রাম রাজ পরিবারের এই পুজো আনুমানিক 400 বছরের পুরানো । তবে পুজোর উৎপত্তির ইতিহাস সম্পর্কে যা জানা যায় তা হল, রাজবংশের প্রাচীনতম কুলদেবী সাবিত্রী দেবীর মন্দিরের ভিতরে রয়েছে পৃথক চণ্ডীমণ্ডপ । সেখানেই পটে আঁকা ছবিতে পুজো পান দেবী ৷ কুলদেবী সাবিত্রীর নিত্যদিন পুজো হয় দুর্গার ধ্যানমন্ত্রে । সেই জন্য কুলদেবী থাকায় আলাদা প্রাচীন পটটি ছিল শালপাতার ঝালরে আঁকা । বর্তমানে চণ্ডীমণ্ডপের বেদীর সামনে দেওয়ালে আঁকা দেবীর পটে নবকলেবর করা হয় । নবমী তিথি থেকেই আবার অস্ত্র পূজা শুরু হয়(Jhargram Mallarajbari Durga Puja)।
আরও পড়ুন : রামমোহন-বিদ্যাসাগর-উত্তম কুমারের স্মৃতি নিয়ে 223 বছরে রায় জমিদারবাড়ির পুজো
রাজবাড়ি সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েকশো বছর আগে ঝাড়গ্রামের জংলি মল্লরাজাকে দ্বন্দ্বযুদ্ধে হারিয়ে রাজ্যপাট দখল করেন রাজপুতানার সর্বেশ্বর । তাঁর রাজ্যাভিষেকের দিনটিকে স্মরণ করে রাখার জন্য ভাদ্রমাসের শুক্লপক্ষের দ্বাদশী তিথিতে ইন্দ্রাভিষেক অনুষ্ঠানের সূচনা হয় । আবার মহাষষ্ঠীর দিন রাতে বেলগাছের তলায় মঙ্গলঘট স্থাপন করা হয় । তারপর সপ্তমীর দিন সকালে শোভাযাত্রা সহকারে খড়গ, রাজলক্ষ্মী, শালগ্রাম শিলা ও ঘট মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয় ।
রাজপরিবারের উত্তরসূরী জয়দীপ মল্লদেব বলেন, "করোনার জেরে দু'বছর মন্দিরে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল ৷ তবে এই বছর আবার সকলে মিলে পুজো দেখতে পারবেন ৷"
আরও পড়ুন : প্রতিমা হস্তে সুসজ্জিত অস্ত্র তৈরির কারখানায় কেমন ব্যস্ততা, খোঁজ নিল ইটিভি ভারত