ঝাড়গ্রাম,2 ফেব্রুয়ারি : ১১ বছর পর লালগড়ে ফিরলেন । এলেন লোধাসুলি জঙ্গলে । তবে অভ্যর্থনা পেলেন সেই আগের মতোই। ছত্রধর মাহাতকে সংবর্ধনা জানালেন তৃণমূল নেতা বীরবাহা সোরেন, ুডুরা । সংবর্ধনায় আপ্লুত ছত্রধরও বললেন," আমি তোমাদেরই লোক ।" মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা করলেও তৃণমূলে যোগদানের বিষয়ে মনস্থির করেননি বলে জানান তিনি ।
শনিবার জামিন পেয়েছেন । বিকেলে ক্লিন শেভড্ আর গোঁফে রঙ করা ছত্রধর SSKM থেকে বেরিয়ে আসেন । আর আজ সকাল সকাল রওনা দেন ঝাড়গ্রামের উদ্দ্যশে । দীর্ঘদিন প্রেসিডেন্সি জেলে কাটান । গত এক বছর ছত্রধরের ঠিকানা ছিল SSKM হাসপাতালের উডবার্ণ ওয়ার্ড । লোধাসুলি জঙ্গলে তৃণমূলের বীর বাহ সরেন ও রবিন টুডুরা সম্বোর্ধনা জানালেও তৃণমূল সম্পর্কে প্রশংসায় কিছুটা সংযত থাকলেন ছত্রধর । এখনই তৃণমূলে যোগ দেওয়া নিয়ে মনস্থির করেননি জানালেও রাজনীতিতেই যে থাকবেন তা নিয়ে কোনও লুকোছাপা করেননি । জঙ্গলমহলে উন্নয়নের দাবি তুলেই বাম জমানায় মমতার হাত ধরেন ছত্রধর । জঙ্গলমহলে উন্নয়ন নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ছত্রধর বলেন,"উন্নয়নের কাজ 100 পারসেন্ট হয়েছে এটা বলব না ,তবে এখনো অনেক কাজ বাকি আছে l "
2008 সালে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কনভয় বিস্ফোরণের মূল অভিযুক্ত ছিলেন ছত্রধর মাহাতো । এই ছত্রধর মাহাতো কে সেই সময় পুলিশ গ্রেফতার করার জন্য বহু রকম চেষ্টা করেছিলেন । পরবর্তীকালে ছত্রধর "পুলিসী সন্ত্রাসবিরোধী জনসাধারণ কমিটি" গড়ে তুলে তাঁর নেতা হয়ে যান । 2009 সালে এক সাংবাদিক বৈঠকের সময় সাংবাদিক সেজে ছত্রধর কে গ্রেপ্তার করে CID । তাঁর বিরুদ্ধে মোট 27 টি কেস দেওয়া হয় । 2011 সালে বাম সরকারকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনে (UAPA) যাবজ্জীবন হয় ছত্রধরের । শেষমেশ 11 বছর পর ছাড়া পান তিনি ।
ছত্রধর এদিন মিলিত হলেন গ্রামবাসীদের সঙ্গে । সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, যেসব দাবি নিয়ে তিনি আন্দোলন করছিলেন তার মধ্যে জঙ্গলমহলের মানুষের জন্য খাদ্যের দাবি ছিল প্রধান । মমতা ব্যানার্জি সেই দাবি পুষিয়ে দিয়েছেন পাশাপাশি এই লালগড়ে চিত্র তিনি বদলে দিয়েছেন । তিনি বলেন," জন্মস্থান লালগড় আমি আর চিনতে পাচ্ছি না । তাই রাস্তায় আসার পথে বারবার জিজ্ঞেস করছিলাম এটা কোন রাস্তা , কারণ এই নদী, এই রাস্তা আগে কোনওদিন ছিল না । এখানকার আমূল পরিবর্তন করেছেন মমতা ব্যানার্জি ।" মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূয়সী প্রশংসা করেন ছত্রধর । BJP নেতা মুকুল রায়ের প্রসঙ্গে প্রশ্নের উত্তরে ছত্রধর সাংবাদিকদের বলেন, " একসময় তৃণমূলে মুকুলবাবুও ছিলেন । তিনি ভালো করে বলতে পারবেন ছত্রধর মাহাতোকে কি কাজে ব্যবহার করা হতো । গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমার বাড়ি এসেছিলেন মুকুল বাবু সহানুভূতি পাওয়ার আশায় । সেখানে আমার মা-বাবা তাঁকে বলেছিলেন আপনিও তো তৃণমূলের ছিলেন কিভাবে ব্যবহার করত আমাকে সেটা আপনিও জানতেন । আপনি এখন তৃণমূল ছেড়ে এসে এসব কথা বলছেন ।" বাম জমানায় তাঁর সঙ্গীদের মধ্যে এখন কেউ তৃণমূল, কেউ BJP, কেউ আবার CPI(M) করেন । ছত্রধর বলেন,"রাজনৈতিকভাবে অনেকে অনেক কিছুই করেন । কিন্তু আমাকে সকলেই সম্বর্ধনা দিয়েছেন । আমি তাতে আপ্লুত l"