জলপাইগুড়ি, 11 এপ্রিল: ভোটের দিন গেরুয়া উত্তরীয় পরিয়ে, তিলক কেটে এজেন্টেদের বসিয়ে দিতে বললেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী । এর সঙ্গে 'আপনারা তুলসী মুখে দিয়ে ভোট দিতে যাবেন' বলে কর্মীদের টোটকা দিলেন শুভেন্দু অধিকারী । এদিন তিনি জলপাইগুড়ি সদর বিধানসভার বিজেপি প্রার্থী সৌজিৎ সিংহের সমর্থনে সভা করতে আসেন বেরুবাড়িতে । সেখানে এ ভাবেই দলীয় কর্মীদের মনের জোর বাড়ান তিনি ৷
ওই জনসভায় আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী ও জলপাইগুড়ির যুব সভাপতির নাম না করে তাঁদের তোলাবাজ বলে কটাক্ষ করেন শুভেন্দু । তিনি বলেন, 'উত্তরবঙ্গ তো আমার সিনিয়র বিজেপি। কারণ লোকসভাতে অনেক আগেই সাফ করে দিয়েছে তৃণমূলকে ।' মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর ভাইপোকেও আক্রমণ করে তিনি বলেন, 'আপনি আর আপনার তোলাবাজ ভাইপো হেলিকপ্টারের ঘুরে বেড়াচ্ছেন ।' অভিষেকের নাম না করে বলেন, 'আপনারা চেনেন তো কয়লা গাড়ি থেকেও পুলিশিরা টাকা তোলে। অঙ্শকু অরোরা সাত বছর ধরে সাইকেল সাপ্লাই দেয়। সবাই আপনাদের বিরোধিতা করছে ।'
2014 সাল থেকে এসএসসি না থাকা, বিএড পাশ করা ছেলেমেয়েদের চাকরি নেই বলে তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে তোপ দাগেন ৷ এমনকি তিনি এসএসসি-র নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন 'বড় বড় কথা এসএসসি নিরপেক্ষ । তা হলে পরেশ অধিকারীর মেয়ে চাকরি পেল কী করে ? গুটিশ না ফুটিশ আছে সেও আবার প্রাইমারিতে মাল তুলেছে ।' জলপাইগুড়ির যুব নেতার বিরুদ্ধে 'মাল তোলা'-র অভিযোগ জানিয়ে বলেন, 'এসএসসি 15 লক্ষ টাকা করে মাল তোলে । এই মুখ্যমন্ত্রীকে আর মানুষ চায় না । আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার পুরো পরিষ্কার করে দিয়েছে ।' উত্তরবঙ্গের মানুষকে লাইন দিয়ে ভোট দিতে অনুরোধ করেন । তাঁর কথায় আনন্দ বর্মনের ভোট দিতে গিয়ে শহিদ হওয়ার প্রসঙ্গ উঠে আসে ।
আরও পড়ুন: মোমবাতি হাতে প্রতিবাদ জানিয়ে মমতার রোড শো
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বর্তমান শারীরিক অবস্থা নিয়ে তিনি কটাক্ষ করে বলেন, 'শুধু নীলসাদা রঙ করলেই হবে না। এমন ক্রেপ ব্যান্ডেজ বেঁধে পা দেখাচ্ছেন আর মুখে বলছেন খেলা হবে। নন্দীগ্রামে খেলা সকালে শুরু হল আর যিনি গোলকিপার 1.45 টার সময় গোলকিপার বের হলেন ততক্ষণে খেলা শেষ হয়ে গেছে। মাথাখারাপ হয়ে গেছে তার ৷ মাদ্রাসার ছেলেদের এজেন্ট বসাবো বলছেন।'
তৃণমূল নেত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্য নিয়ে তাঁর কথায়, 'কখনো কোনও মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে বলেনি শালা । আমাকেও বলেছে, বয়সে ছোট আমি, শুনে নিয়েছি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলছেন হোদল কুতকুত । বাংলার জামাই নাড্ডাকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি, এটা বাংলার সংস্কৃতি নয় ।' শুভেন্দুর দাবি 135 টা সিটের মধ্যে 100-র কাছাকাছি পাবে তাঁর দল বিজেপি ।
অন্যান্য রাজ্যে কৃষকদের জন্য পিএম কিষাণের সুবিধা সবাই পেলেও এ রাজ্যের মানুষ তা পায়নি, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কারণেই ।
এদিনের তাঁর বক্তব্যে বাদ যায়নি 'বাংলার গর্ব মমতা' ব্যানার । এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ''বাংলার গর্ব নেতাজি, ঈশ্বরচন্দ্র, বিবেকানন্দ । আপনি বাংলার গর্ব কেন হতে যাবেন ? এখন তো জলের বোতলেই তিনি ছাপ লাগিয়ে দিচ্ছেন । এখন তো মাননীয়ার অনুপ্রেরণায় বাঘের বাচ্চাও চিড়িয়াখানায় জন্ম নিচ্ছে । মাননীয়াকে টাটা বাই বাই করে দিয়েছি । আমার অনেক পদ ছিল ছেড়ে চলে এসেছি ।''