জলপাইগুড়ি, 6 জানুয়ারি: সন্দেশখালি-কাণ্ড নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সমালোচনায় সরব হলেন বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ৷ তাঁর হুঁশিয়ারি, বিজেপি বাংলায় ক্ষমতায় এলে শেখ শাহজাহান কোনোভাবেই ছাড় পাবে না ৷ শনিবার জলপাইগুড়িতে বিজেপির এক কর্মসূচিতে যোগ দিতে গিয়েছিলেন বালুরঘাটের সাংসদ ৷ সেখানেই তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন ৷
সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘সন্দেশখালিতে যা হয়েছে ভালো হয়নি । দিদিমনির জান শাহজাহান । এই শাহজাহান পার পাবে না । জামাতের সঙ্গে মিলে কাজ করছে ।’’ তিনি তৃণমূল কংগ্রেসকে ভারত-বিরোধী বলেও আক্রমণ করেন ৷ সুকান্ত বলেন, ‘‘তৃণমূল কংগ্রেসে সরকার যেভাবে ভারতবিরোধী শক্তিকে সাহায্য করছে । বিভিন্ন জায়গায় জামাতের লোকের হয়ে কাজ করে তাদের মদত দিচ্ছে । এই পশ্চিমবঙ্গকে বাংলাদেশ করার চেষ্টা করছে । জামাতের সঙ্গে মিলে কাজ যারা করছে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে । শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের বাংলাকে বাঁচাতে হবে ।’’
এ দিন জলপাইগুড়িতে বিজেপির ‘চোর ধরো, জেল ভরো’ কর্মসূচি ছিল ৷ সেখানে জেলার বিজেপি বিধায়করা ছাড়াও আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারের বিধায়করাও ছিলেন । এই কর্মসূচি উপলক্ষ্যে আয়োজিত মিছিল জলপাইগুড়ির শান্তিপাড়া থেকে বের হয়ে বেগুনটারি, কমদতলা হয়ে ডিবিসি রোডে শেষ হয় । ডিবিসি রোডে বিজেপি পার্টি অফিসের সামনেই রাস্তার উপরেই অস্থায়ী মঞ্চ বেঁধে সুকান্ত মজুমদার বক্তব্য রাখেন ।
সেখানে তিনি এই কথাগুলি বলেন ৷ পাশাপাশি সুকান্ত মজুমদারের আরও বক্তব্য, ‘‘চব্বিশে সেমিফাইনাল হবে । ছাব্বিশে ফাইনাল হবে । যারা ইডি ও আধাসামরিক বাহিনীর উপর আক্রমণ করেছে, কেউ ছাড় পাবে না । গেরুয়া বুলডজার দিয়ে সন্দেশখালিতে শাহজাহান শেখের বাড়িতে বুলডজার চলবে । উত্তরপ্রদেশে যেমন বুলডজার চলে, তেমনই এখানেও ভারতীয় জনতা পার্টির বুলডজার ওই বাড়ির উপরে চলবে ৷’’
তিনি আরও বলেন, রাজ্যের সার্বভৌমত্ব চ্যালেঞ্জের মুখে । গতকালের ঘটনা তার প্রমাণ । সন্দেশখালিতে যা হয়েছে, তা সংবিধানের অবমাননা করা হিয়েছে । বাংলাদেশের যে জামাত আছে, সেই উগ্রবাদী সংগঠন এর সঙ্গে জড়িত আছে । এর বিরুদ্ধে তদন্ত হওয়া উচিত ।’’ তিনি জানিয়েছেন, বর্তমান পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনকে চিঠি লিখবেন । কারণ, তিনি মনে করেন যে রাজ্যের বর্তমান যা পরিস্থিতি, তাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়া ভোট সম্ভব নয় ।
অন্যদিকে কোচবিহারের একটি মামলায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর নিশীথ প্রামাণিকের গ্রেফতারির প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারকে বলুন গ্রেফতার করতে ৷ হিম্মত আছে তো আমাদের মন্ত্রীকে গ্রেফতার করে দেখাক ।’’ জলপাইগুড়ির তৃণমূল নেতাদের আক্রমণ করতে গিয়ে সুকান্ত বলেন, ‘‘জলপাইগুড়ি জেলা শিল্প সংস্কৃতির শহর ৷ কিন্তু এখানে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা চুরির সঙ্গে যুক্ত হয়ে গিয়েছেন।’’ এ দিন সুকান্ত মজুমদার জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের বেশ কিছুর নেতার নাম উল্লেখ করেন ।
এ দিন তাঁর মুখে তৃণমূলের বিরুদ্ধে উত্তরবঙ্গে বঞ্চনা করার অভিযোগ শোনা যায় ৷ সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গের কথা আগে কেউ ভাবতো না । একটি এইমস দেওয়া হয়েছিল । মুখ্যমন্ত্রী সেটা কল্যাণীতে নিয়ে চলে গিয়েছেন । আগামী লোকসভা নির্বাচনে আমাদের ইস্তাহারে আমরা উত্তরবঙ্গের একটি এইমসের দাবি করেছি । ইস্তাহারে যাতে উত্তরবঙ্গের একটি এইমস বিজেপি সরকার দেবে এটা যেন থাকে, আমরা সেটা বলেছি । উত্তরবঙ্গের চিকিৎসা ব্যবস্থা খুব খারাপ তাই এইমস চাই ।’’
আরও পড়ুন: