ময়নাগুড়ি, 14 জানুয়রি : জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ির দোমোহনির কাছে আপ বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত (Bikaner-Guwahati Express Accident) হওয়ার ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ইতিমধ্যেই বেড়ে হয়েছে 9 ৷ আহত হয়েছেন 36 জন ৷ এদিন সকালে ঘটনাস্থলে যান নর্থ ফ্রন্টিয়ার রেলের জেনারেল ম্যানেজার অংশূল গুপ্তা ৷ কিন্তু এরমধ্যেই এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার আসল কারণ নিয়ে জল্পনা বাড়ছে ৷ ট্রেনের গতিই কি এই দুর্ঘটনার আসল কারণ, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে ৷
আরও পড়ুন : দোমোহনির রেল দুর্ঘটনায় মৃত অন্তত 9, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার কাজ শুরু
রেল সূত্রে খবর, এই এলাকা দিয়ে সর্বোচ্চ 40 কিমি প্রতি ঘণ্টা বেগে ট্রেন চলার কথা, কিন্তু চালক কি ট্রেনের গতি আরও বাড়িয়েছিলেন, সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷ তবে কি লোকো পাইলট বিবেক কুমারের সামান্য ভুলেই এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ? রেলের অতিরিক্ত গতি ময়নাগুড়ির দোমোহনির ট্রেন দুর্ঘটনার নেপথ্যে থাকতে পারে, তেমনটাই মনে করছেন কিছু রেল ইঞ্জিনিয়ার ৷ পাশাপাশি একাংশের অনুমান, দুর্ঘটনা এত ভয়াবহ হওয়ার পিছনে রয়েছে কাপুরথালায় নির্মিত রেলের পুরানো বগিগুলিও । যদিও এসব নিয়ে এখনও চলছে তদন্ত । তদন্তের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে কিছুই জানা যাবে না ।
রেলের ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশের বক্তব্য, যে ট্র্যাক পয়েন্টে বিকানের এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়েছে, তার এক কিলোমিটারের মধ্যেই রয়েছে তিস্তা রেল সেতু । ওই সেতুতে ট্রেনের গতিবেগ ঘণ্টায় 40 কিলোমিটার নির্ধারিত করা রয়েছে । নির্দিষ্ট কসান এরিয়ার দু’দিকে আরও কিছুটা এলাকায় ট্রেনের গতিবেগ নিয়ন্ত্রণ করা নিয়ম । কিন্তু বিকানের এক্সপ্রেস যেভাবে লাইনচ্যুত হয়েছে, তাতে মনে করা হচ্ছে দুর্ঘটনার সময় ট্রেনের গতিবেগ ঘণ্টায় 80 কিলোমিটারের আশেপাশে ছিল । সম্ভবত সেটা লক্ষ্য করেই লোকো পাইলট ট্রেনকে নির্দিষ্ট গতির আওতায় আনতে ব্রেক কষেন । হঠাৎ ব্রেক লক হয়ে যাওয়াও অসম্ভব নয় । ইঞ্জিনের ঠিক পিছনের বগি দেখলেই দুর্ঘটনার অভিঘাত বোঝা যায় । একটি বগির উপর আরেকটি বগি উঠেও যায় ।
আরও পড়ুন : উদ্ধারকাজ শেষ, কেন দুর্ঘটনা ঘটল জানতে এসেছি, দোমোহনি পৌঁছে বললেন রেলমন্ত্রী
দুর্ঘটনার অভিঘাত এত বেশি হওয়ার পিছনে পুরানো বগিকেও দায়ী করছেন ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশ । তাঁরা জানাচ্ছেন, বিকানের এক্সপ্রেসে বহু পুরানো বগি ব্যবহার করা হয়েছিল । এগুলি ইন্টিগ্রাল কোচ (Integral Coach Factory- ICF) হিসাবেই রেল বিভাগে পরিচিত । কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে এই কোচগুলিতে তার অভিঘাতও বেশি হয় । সেসব এড়াতে পরবর্তীতে দেশে চালু হয় লিংক হফম্যান বুশ (Linke Hofmann Busch coaches- LHB) কোচ । দুর্ঘটনা ঘটলে কিংবা লাইনচ্যুত হলেও এইসব কোচ অনেক বেশি অভিঘাত সহ্য করতে পারে । সেকারণেই এখন রাজধানী এক্সপ্রেস, শতাব্দী এক্সপ্রেস-সহ সমস্ত প্রথমসারির ট্রেনে এই কোচ ব্যবহার করা হয় । তবে এই দুর্ঘটনার পিছনে আসল কারণ কী, তা পর্যাপ্ত তদন্তের পরেই জানা যাবে বলে জানাচ্ছেন রেলের শীর্ষ আধিকারিকরা ।
নর্থ ফ্রন্টিয়ার রেলের জেনারেল ম্যানেজার অংশূল গুপ্তা জানিয়েছেন, শুক্রবার দুপুর 1টার মধ্যে যাতে রেললাইন পরিষ্কার করা যায় সেই চেষ্টা হচ্ছে ৷