জলপাইগুড়ি, 1 জুলাই: প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অব্যবহৃত ঘর (Primary Class Room) ভেঙে, সেই ইট দিয়েই তৈরি হচ্ছে মন্দির (Temple) ! কে বা কারা এই ঘটনার পিছনে রয়েছেন, তা জানা নেই কারও ! বিষয়টি জানাজানি হতেই শুরু হয়েছে কানাঘুষো ৷ স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, এলাকার পঞ্চায়েতের মদতেই নাকি স্কুলের জন্য বরাদ্দ ঘর ভেঙে মন্দির তৈরি করা হচ্ছে ! জবাব মেলেনি পঞ্চায়েতের তরফ ৷ ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া বিবেকানন্দ পল্লি এলাকায় (Jalpaiguri School Controversy) ৷
জলপাইগুড়ি শহরের কাছেই রয়েছে তিস্তার চর স্টেট প্ল্যান প্রাথমিক বিদ্যালয় ৷ এই বিদ্যালয়ের একটি ঘর বেশ কিছুদিন ধরেই পঠনপাঠনের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছিল না ৷ বদলে সেই ঘরেই চলছিল স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৷ ফলে গ্রামবাসীর সুবিধাই হচ্ছিল ৷ কিন্তু, সম্প্রতি সেই ঘরটি ভেঙে ফেলা হয় ৷ যদিও ঘর ভাঙার নির্দেশ কে দিল, কারাই বা মিস্ত্রী লাগিয়ে ঘর ভাঙল, সেটা স্পষ্ট নয় ৷ এখন দেখা যাচ্ছে, ভাঙা ঘরের ইট ব্যবহার করেই তৈরি হচ্ছে মন্দির !
আরও পড়ুন: Manipur Landslide: মণিপুরের ধসে প্রাণ হারালেন জলপাইগুড়ির সেনা জওয়ান শংকর ছেত্রী
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, স্কুলের ঘরটি যখন ভাঙার কাজ শুরু হয়, তখনই তাঁরা প্রশ্ন তুলেছিলেন ৷ সেই সময় তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে তাঁদের জানানো হয়, স্কুলের ওই ঘরের জায়গায় একটি 10 শয্য়ার হাসপাতাল গড়ে তোলা হবে ৷ ফলে গ্রামের মানুষও আর এ নিয়ে মাথা ঘামাননি ৷ তাঁদের মনে হয়েছিল, স্কুলের পাশেই যদি একটি হাসপাতাল থাকে, তাতে সকলের সুবিধাই হবে ৷ কিন্তু, সরকারি স্কুলের ইট দিয়ে মন্দির তৈরির কাজ শুরু হতেই এ নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ৷
স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় সিকদারকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "আমাদের স্কুলের অব্যবহৃত ঘরটি কে বা কারা ভেঙে নিয়ে যাচ্ছে ! বিষয়টি জানার পরই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে কোতওয়ালি থানায় আমরা অভিযোগ দায়ের করেছি ৷ তবে কার অনুমতিতে স্কুলের ওই ঘরটি ভাঙা হল, তা আমাদের জানা নেই ৷ আমরা কিছুই জানি না !"
জলপাইগুড়ি জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান লৈক্ষ্যমোহন রায় এই প্রসঙ্গে বলেন, "বিনা অনুমতিতে স্কুলের ভবন ভাঙা হচ্ছে ৷ আমাদের কাছে খবর আসার পরই আমরা এই বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছি ৷ কারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন, তা আমরা খোঁজ নিয়ে দেখছি ৷ আমরা কাউকে স্কুলের ভবন ভাঙার অনুমতি দিইনি ৷ এমন ঘটনা যে ঘটছে, সেটা তো আগে জানতামই না ! আমরা নিজেরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সবটা দেখে আসব ৷ এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলব ৷ স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য স্কুলের পরিচালন কমিটিতে রয়েছেন ৷ তাঁর সঙ্গেও কথা বলব ৷"
এদিকে, গোটা ঘটনায় খড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে ৷ এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য অমিত মণ্ডলের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর তরফ থেকে কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি ৷