ETV Bharat / state

জলপাইগুড়িতে তৈরি হচ্ছে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর

জলপাইগুড়ি শহরের বাসিন্দা ও ন্টিগ্রেটেড ফায়ার প্রোটেকশন প্রাইভেট লিমিটেডের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর অনুজিৎ কুমার মুখোপাধ্যায় প্রিয়জনকে হারিয়েছেন ৷ যাতে আর কাউকে সেই যন্ত্রণা না ভোগ করতে হয় তার জন্য দুর্গাপুরের এনআইটি(NIT)-র সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর তৈরি করেছেন ৷

জলপাইগুড়িতে এবার তৈরি হচ্ছে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর
জলপাইগুড়িতে এবার তৈরি হচ্ছে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর
author img

By

Published : Jul 13, 2021, 10:06 PM IST

জলপাইগুড়ি, 13 জুলাই : অক্সিজেনের অভাবে বন্ধুদের হারিয়েছেন । আর কাউকে হারাতে চান না । হারাতে দিতে চান না ৷ এই ভাবনা থেকে শুরু হয় অক্সিজেনের চাহিদা মেটানোর উদ্যোগ । অবশেষে বানিয়ে ফেললেন অক্সিজেন কনসেনট্রেটর । স্বল্প মূল্যে জলপাইগুড়ি শহরের বুকেই অক্সিজেন কনসেনট্রেটর পাওয়া যাচ্ছে ৷ উদ্যোক্তা ইন্টিগ্রেটেড ফায়ার প্রোটেকশন প্রাইভেট লিমিটেডের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর অনুজিৎ কুমার মুখোপাধ্যায় । জলপাইগুড়ি শহরের রাজবাড়ি পাড়ায় এই সংস্থার কারখানায় তৈরি হচ্ছে স্বল্প মূল্যের অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ।

2020-র ফেব্রুয়ারি মাস ৷ করোনার প্রথম ঢেউ আছড়ে পড়েছিল দেশে ৷ হাজার হাজার মানুষ সংক্রামিত ৷ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে বহু মানুষ ৷ তারপর লকডাউন ৷ ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে ৷ স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে শুরু করে দেশ ৷ কিন্তু, তা ক্ষণিকের ৷ করোনার আবার একটা ঢেউ ৷ এবার তা আরও ভয়ংকর ৷ তার উপর দেশজুড়ে অক্সিজেনের অভাব ৷ একের পর এক মানুষ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে ৷ অক্সিজেনের অভাবে কোথাও একদিনে 11 জনের মৃত্যু, কোথাও আরও বেশি ৷ শ্মশানে মৃতদেহ পোড়ানোর লাইন ৷ যেন মৃত্যুমিছিল ৷ কত মানুষ এভাবে তাঁদের প্রিয়জনকে হারিয়েছেন ৷ অক্সিজেন না পেয়ে চোখের সামনে প্রিয়জনকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে দেখেছেন ৷ জলপাইগুড়ি শহরের বাসিন্দা অনুজিৎ কুমার মুখোপাধ্যায়ও প্রিয়জনকে হারিয়েছেন ৷ যাতে আর কাউকে সেই যন্ত্রণা না ভোগ করতে হয় তার জন্য দুর্গাপুরের এনআইটি(NIT)-র সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর তৈরি করেছেন ৷ অনুজিৎ কুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, "আমি করোনার সময় আমার পাঁচ বন্ধুকে হারিয়েছি । অক্সিজেনের সমস্যায় আমিও পড়েছি । সেই বিষয়টি মাথায় ছিল । আমি জলপাইগুড়ি থেকেই এই উদ্যোগ শুরু করেছি । কেন মফস্বলের শহর থেকে কিছু করা যাবে না । তাই আমি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর বানানোর উদ্যোগ নিয়েছি । সফলও হয়েছি । আমাদের দুর্গাপুরের NIT-র সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এটা করা হচ্ছে । আর এটা দেশীয় পদ্ধতিতে ভারতে তৈরি হচ্ছে ।"

এই অক্সিজেন কনসেনট্রেটর থেকে খুব সহজে অক্সিজেন নিতে পারবে
এই অক্সিজেন কনসেনট্রেটর থেকে খুব সহজে অক্সিজেন নিতে পারবে

আরও পড়ুন, সুন্দরবনে রোগীদের ঘরে দু'চাকায় পাড়ি দেন অক্সিজেন ম্যান

তাঁদের সংস্থা মূলত ফায়ার ফাইটিং নিয়ে কাজ করে । 1984 থেকে এই ফায়ার ফাইটিং প্রোডাক্ট তৈরি করা হচ্ছে । অনুজিৎবাবু বলেন, "করোনাকালে আমরা অক্সিজেন সিলিন্ডার ও কনসেনট্রেটর পাচ্ছিলাম না । এরপরেই আমাদের সংস্থার সদস্য অর্ক আমাকে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর তৈরির কথা বলেন । মাত্র একমাসের মধ্যেই আমরা এটা বানাতে পেরেছি । এটা আগামীতে সবার বাড়ির চাহিদা মেটাবে ৷ মাত্র 29 হাজার 999 টাকা দিয়ে বিক্রি করা হবে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর । এর বেশি টাকা দিয়ে নয় । আগে বাইরে থেকে আসত বলে অনেক টাকা খরচ হত ৷ এখন স্বল্প মূল্যেই সাধারণ মানুষের হাতে এটা আমরা তুলে দেব । আমার ইচ্ছা জলপাইগুড়িতে কর্মসংস্থান তৈরি করার ৷ জলপাইগুড়ির উন্নতি করতে চাই ৷ এটাই আমার লক্ষ্য । মেডিকেল যন্ত্রও আমরা তৈরি করব। "

জলপাইগুড়িতে এবার তৈরি হচ্ছে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর

সংস্থার ডাইরেক্টর অশ্বিনী কর্মকার জানান, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে অক্সিজেনের হাহাকার পড়ে যায় ৷ আমরা আগে স্যানিটাইজ়ার বানিয়েছি । আমাদের মাথায় ছিল অক্সিজেনের বিষয়টি । আমরা দিন রাত পরিশ্রম করেই এই অক্সিজেন কনসেনট্রেটর বানিয়ে ফেলেছি । বিশেষ করে ইলেকট্রিক ছাড়াও ব্যাটারিতে চলবে এই কনসেনট্রেটর । যেখানে সেনাবাহিনী থাকে, বিদ্যুৎ নেই, সেখানেই সৌরচালিত বা ব্যাটারি দিয়ে 20 ঘণ্টা অক্সিজেন দেওয়া যাবে ।

আরও পড়ুন, স্বদেশের টানে 1 হাজার অক্সিজেন কনসেনট্রেটর পাঠালেন আমেরিকাবাসী বাঙালি অর্থনীতিবিদ

তাদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন শহরবাসী । এদিন শহরের ব্যবসায়ী পুরজিৎ বক্সী গুপ্ত বলেন, "আমাদের গর্বের দিন । জলপাইগুড়ি ইন্টিগ্রেটেড ফায়ার প্রোটেকশন প্রাইভেট লিমিটেড আজ অক্সিজেন কনসেনট্রেটর বানিয়ে নতুন দিগন্ত খুলে দিল । দুর্গাপুর এনআইটি(NIT)-র সঙ্গে যৌথভাবে করা হয়েছে । পিছিয়ে পড়া জলপাইগুড়ির গর্ব এই ফ্যাক্টরি । যে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর বিভিন্ন দেশ থেকে আনা হত । তা আজ জলপাইগুড়ির মতো জায়গা থেকেই তৈরি হচ্ছে ।"

জলপাইগুড়ি, 13 জুলাই : অক্সিজেনের অভাবে বন্ধুদের হারিয়েছেন । আর কাউকে হারাতে চান না । হারাতে দিতে চান না ৷ এই ভাবনা থেকে শুরু হয় অক্সিজেনের চাহিদা মেটানোর উদ্যোগ । অবশেষে বানিয়ে ফেললেন অক্সিজেন কনসেনট্রেটর । স্বল্প মূল্যে জলপাইগুড়ি শহরের বুকেই অক্সিজেন কনসেনট্রেটর পাওয়া যাচ্ছে ৷ উদ্যোক্তা ইন্টিগ্রেটেড ফায়ার প্রোটেকশন প্রাইভেট লিমিটেডের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর অনুজিৎ কুমার মুখোপাধ্যায় । জলপাইগুড়ি শহরের রাজবাড়ি পাড়ায় এই সংস্থার কারখানায় তৈরি হচ্ছে স্বল্প মূল্যের অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ।

2020-র ফেব্রুয়ারি মাস ৷ করোনার প্রথম ঢেউ আছড়ে পড়েছিল দেশে ৷ হাজার হাজার মানুষ সংক্রামিত ৷ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে বহু মানুষ ৷ তারপর লকডাউন ৷ ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে ৷ স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে শুরু করে দেশ ৷ কিন্তু, তা ক্ষণিকের ৷ করোনার আবার একটা ঢেউ ৷ এবার তা আরও ভয়ংকর ৷ তার উপর দেশজুড়ে অক্সিজেনের অভাব ৷ একের পর এক মানুষ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে ৷ অক্সিজেনের অভাবে কোথাও একদিনে 11 জনের মৃত্যু, কোথাও আরও বেশি ৷ শ্মশানে মৃতদেহ পোড়ানোর লাইন ৷ যেন মৃত্যুমিছিল ৷ কত মানুষ এভাবে তাঁদের প্রিয়জনকে হারিয়েছেন ৷ অক্সিজেন না পেয়ে চোখের সামনে প্রিয়জনকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে দেখেছেন ৷ জলপাইগুড়ি শহরের বাসিন্দা অনুজিৎ কুমার মুখোপাধ্যায়ও প্রিয়জনকে হারিয়েছেন ৷ যাতে আর কাউকে সেই যন্ত্রণা না ভোগ করতে হয় তার জন্য দুর্গাপুরের এনআইটি(NIT)-র সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর তৈরি করেছেন ৷ অনুজিৎ কুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, "আমি করোনার সময় আমার পাঁচ বন্ধুকে হারিয়েছি । অক্সিজেনের সমস্যায় আমিও পড়েছি । সেই বিষয়টি মাথায় ছিল । আমি জলপাইগুড়ি থেকেই এই উদ্যোগ শুরু করেছি । কেন মফস্বলের শহর থেকে কিছু করা যাবে না । তাই আমি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর বানানোর উদ্যোগ নিয়েছি । সফলও হয়েছি । আমাদের দুর্গাপুরের NIT-র সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এটা করা হচ্ছে । আর এটা দেশীয় পদ্ধতিতে ভারতে তৈরি হচ্ছে ।"

এই অক্সিজেন কনসেনট্রেটর থেকে খুব সহজে অক্সিজেন নিতে পারবে
এই অক্সিজেন কনসেনট্রেটর থেকে খুব সহজে অক্সিজেন নিতে পারবে

আরও পড়ুন, সুন্দরবনে রোগীদের ঘরে দু'চাকায় পাড়ি দেন অক্সিজেন ম্যান

তাঁদের সংস্থা মূলত ফায়ার ফাইটিং নিয়ে কাজ করে । 1984 থেকে এই ফায়ার ফাইটিং প্রোডাক্ট তৈরি করা হচ্ছে । অনুজিৎবাবু বলেন, "করোনাকালে আমরা অক্সিজেন সিলিন্ডার ও কনসেনট্রেটর পাচ্ছিলাম না । এরপরেই আমাদের সংস্থার সদস্য অর্ক আমাকে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর তৈরির কথা বলেন । মাত্র একমাসের মধ্যেই আমরা এটা বানাতে পেরেছি । এটা আগামীতে সবার বাড়ির চাহিদা মেটাবে ৷ মাত্র 29 হাজার 999 টাকা দিয়ে বিক্রি করা হবে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর । এর বেশি টাকা দিয়ে নয় । আগে বাইরে থেকে আসত বলে অনেক টাকা খরচ হত ৷ এখন স্বল্প মূল্যেই সাধারণ মানুষের হাতে এটা আমরা তুলে দেব । আমার ইচ্ছা জলপাইগুড়িতে কর্মসংস্থান তৈরি করার ৷ জলপাইগুড়ির উন্নতি করতে চাই ৷ এটাই আমার লক্ষ্য । মেডিকেল যন্ত্রও আমরা তৈরি করব। "

জলপাইগুড়িতে এবার তৈরি হচ্ছে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর

সংস্থার ডাইরেক্টর অশ্বিনী কর্মকার জানান, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে অক্সিজেনের হাহাকার পড়ে যায় ৷ আমরা আগে স্যানিটাইজ়ার বানিয়েছি । আমাদের মাথায় ছিল অক্সিজেনের বিষয়টি । আমরা দিন রাত পরিশ্রম করেই এই অক্সিজেন কনসেনট্রেটর বানিয়ে ফেলেছি । বিশেষ করে ইলেকট্রিক ছাড়াও ব্যাটারিতে চলবে এই কনসেনট্রেটর । যেখানে সেনাবাহিনী থাকে, বিদ্যুৎ নেই, সেখানেই সৌরচালিত বা ব্যাটারি দিয়ে 20 ঘণ্টা অক্সিজেন দেওয়া যাবে ।

আরও পড়ুন, স্বদেশের টানে 1 হাজার অক্সিজেন কনসেনট্রেটর পাঠালেন আমেরিকাবাসী বাঙালি অর্থনীতিবিদ

তাদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন শহরবাসী । এদিন শহরের ব্যবসায়ী পুরজিৎ বক্সী গুপ্ত বলেন, "আমাদের গর্বের দিন । জলপাইগুড়ি ইন্টিগ্রেটেড ফায়ার প্রোটেকশন প্রাইভেট লিমিটেড আজ অক্সিজেন কনসেনট্রেটর বানিয়ে নতুন দিগন্ত খুলে দিল । দুর্গাপুর এনআইটি(NIT)-র সঙ্গে যৌথভাবে করা হয়েছে । পিছিয়ে পড়া জলপাইগুড়ির গর্ব এই ফ্যাক্টরি । যে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর বিভিন্ন দেশ থেকে আনা হত । তা আজ জলপাইগুড়ির মতো জায়গা থেকেই তৈরি হচ্ছে ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.