জলপাইগুড়ি, 22 জানুয়ারি : নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মর্মর মূর্তি দেশের মধ্যে প্রথম জলপাইগুড়ি শহরে স্থাপিত হয়েছিল । শহরের করলা সেতুর পাশে নেতাজি রোডে রয়েছে সুভাষ ফাউন্ডেশন ৷ সেখানে স্বাধীনতা সংগ্রামী সতীশচন্দ্র লাহিড়ী তাঁর সহযোগীদের নিয়ে নেতাজির প্রথম মর্মর মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন । মূর্তিটির আবরণ উন্মোচন করেন বিচারপতি রাধা বিনোদ পাল ।
১৯৬৮ সালে জলপাইগুড়িতে বন্যায় মূর্তিটি ক্ষতিগ্রস্ত হয় । ২০০৭ সালে মূর্তিটি সংরক্ষণ করা হয় জলপাইগুড়ি নেতাজি সুভাষ ফাউন্ডেশনের তরফে । পরে আজাদ হিন্দ বাহিনীর শহিদ সেনাদের অস্থি সংগ্রহ করে সেখানে সৌধ তৈরি করা হয় । পাশাপাশি কোহিমা, হলদিঘাট, পানিপথ এবং কুরুক্ষেত্রের মাটি ও নর্মদার পাথর রাখা হয়েছে এই স্মারক স্মৃতিস্তম্ভের বেদিতে ।
নেতাজি দু'বার জলপাইগুড়িতে এসেছিলেন ৷ প্রথমবার এসেছিলেন ১৯২৮ সালে । তিনি তখন বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেসের সম্পাদক এবং কলকাতা পৌর কর্পোরেশনের মেয়র । সেই সময় জলপাইগুড়ি পৌরসভা তাঁকে সংবর্ধনা দিয়েছিল । দ্বিতীয়বার জলপাইগুড়িতে আসেন ১৯৩৯ সালে । সেইসময় তিনি জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন । সেবারও তাঁকে সম্বর্ধনা দেওয়া হয়।
জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশনের পাশে ৩০ বিঘা জমিতে এক সভার আয়োজন করা হয় । সভায় যোগ দেওয়ার জন্য নর্থবেঙ্গল এক্সপ্রেসে চেপে জলপাইগুড়ি আসেন নেতাজি ও শরৎচন্দ্র বসু । বঙ্গীয় প্রাদেশিক রাষ্ট্রীয় কংগ্রেসের সেই সভামঞ্চ থেকেই নেতাজি ইংরেজদের ছয় মাসের মধ্যে ভারত ছাড়ার জন্য চরম হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন । শরৎচন্দ্র বসু, চারুচন্দ্র সান্যাল, প্রফুল্লচন্দ্র ঘোষ সহ অন্যরা সভায় উপস্থিত ছিলেন । পরে সুভাষচন্দ্র বসুকে আর্য নাট্য সমাজের ভবনে পৌরসভার পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয় ।
সংবর্ধনা এবং সেই সময়ের অভ্যর্থনা কমিটির কার্যকলাপ এবং সচিত্র তথ্য নেতাজি সুভাষ ফাউন্ডেশনে সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে বলে জানান জলপাইগুড়ির প্রাক্তন বিধায়ক তথা নেতাজি সুভাষ ফাউন্ডেশনের সম্পাদক গোবিন্দ রায় ।