জলপাইগুড়ি, 16 অক্টোবর: ধূপগুড়ি শহরের বৈরাতিগুড়ি 2 নম্বর সিএস প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে প্রতিবছর কালীপুজো হয় ৷ এমনকী সেই সময় স্কুল বন্ধ থাকে বলে সমস্যাও হয় না ৷ কিন্তু, এবার পরিস্থিতি পুরোপরি আলাদা ৷ কালীপুজোর আগেই এ বছর সব স্কুল খুলে গিয়েছে ৷ আর তার মধ্যেই স্কুলের সামনে পড়ে রয়েছে মণ্ডপ তৈরির বাঁশ ও কাঠ ৷ এই পরিস্থিতিতে যে কোনও সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে ৷ তাই গত শুক্রবার পড়ুয়াদের স্কুল থেকে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছেন অভিভাবকরা (Bairatiguri Primary School Students Return Home) ৷ ঘটনার জেরে বিপাকে পড়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও পুজো উদ্যোক্তারা ৷
বৈরাতিগুড়ি 2 নম্বর সিএস প্রাথমিক বিদ্যালয়ে 448 জন পড়ুয়া রয়েছে ৷ কালীপুজো কমিটি এ নিয়ে দাবি করেছে, ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে তাঁরা সবদিক মাথায় রেখেই পুজোর আয়োজন করছে ৷ তবে, অভিভাবকরা অভিযোগ করেছেন, স্কুল খোলার পর তাঁরা দেখেন, স্কুল চত্বরে কাঠ, বাঁশ-সহ মণ্ডপ তৈরির নানান সামগ্রী ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ৷ বাঁশ পোতার জন্য গর্তও করা হয়েছে ৷ যেখানে ছোট ছোট পড়ুয়াদের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে (Students Return Home Due to Security Reason) ৷ যা দেখে তাঁরা রীতিমত ক্ষুব্ধ হয়ে যান ৷ এর পরেই ছেলেমেয়েদের স্কুল না ঢুকিয়ে, ফিরিয়ে নিয়ে যান অভিভাবকরা ৷
এ নিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক অনিরুদ্ধ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘স্কুল খোলার পর ভিতর বাঁশ, কাঠ দেখে অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন ৷ তাঁদের আশঙ্কা, এ ভাবে বাঁশ ও অন্যান্য জিনিসপত্র স্কুলের মধ্যে ছড়িয়ে থাকলে সমস্যা হতে পারে ৷ যে কোনও সময় বাচ্চারা আহত হতে পারে ৷ আর তার পরেই নিরাপত্তার কথা ভেবে পড়ুয়াদের অভিভাবকরা ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছেন ৷ তার আগে বিক্ষোভও দেখিয়েছে ৷’’
এ নিয়ে বৈরাতিগুড়ি সর্বজনীন শ্যামাপুজো কমিটির সভাপতি তথা ধূপগুড়ি ব্লক তৃণমূল সভাপতি ইভান দাস বলেন, ‘‘বেশ কয়েক বছর ধরেই এই স্কুলের মধ্যে কালীপুজো হচ্ছে ৷ অন্যান্যবার এই সময় স্কুল বন্ধ থাকত ৷ এ বারে প্রাথমিক স্কুল খুলে গিয়েছে ৷ ফলে আমরাও একটু সমস্যায় পড়েছি ৷ তবে আমরা ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেই মণ্ডপ করছি ৷ যাতে স্কুলও চলে, আর পুজোও হয় সব আমরা দেখছি ৷ আমাদের ছেলেমেয়ে এই স্কুলে পড়ে ৷ ফলে স্কুল যাতে সুষ্ঠুভাবে চলে, সেই দায়িত্বটা আমাদেরও ৷
আরও পড়ুন: একদিনেই মূর্তি তৈরি-পুজো-বিসর্জন, 500 বছরের পুরনো দেবীনগর কালীবাড়ির শ্য়ামাবন্দনা
বিষয়টি নিয়ে জলপাইগুড়ি জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান লৈক্ষ্যমোহন রায় জানিয়েছেন, পুজো কমিটিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয় সেইভাবে মণ্ডপ তৈরি করতে ৷ তবে, একটা প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে ৷ আর তা হল, কীভাবে নিরাপত্তার বিষয়টি দেখা হবে ? কারণ, প্রাথমিকের পড়ুয়ারা অনেক ছোট ৷ তাঁরা সুযোগ পেলেই ছোটাছুটি করে ৷ ফলে কোনও পড়ুয়া কখন, কোথায় যাচ্ছে, তা সবসময় কে খেয়াল রাখবে ? তাও আবার স্কুল চত্বরের মধ্যে ৷ যার কোনও সদূত্তর কেউ দিতে পারেনি ৷ এখন দেখার অভিভাবকরা সোমবার পড়ুয়াদের স্কুলে পাঠান কিনা ৷