জলপাইগুড়ি, 4 অগস্ট: প্রধান শিক্ষিকা পদে বদলির ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ ৷ বছর ঘুরতে না-ঘুরতেই নিয়ম ভেঙে একের পর এক বদলি ৷ অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকার পাশাপাশি কাঠগড়ায় স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC) ৷ মামলাকারী প্রসূনসুন্দর তরফদারের অভিযোগ, শান্তা মণ্ডল নামে ওই প্রধান শিক্ষিকা প্রভাবশালী হওয়াতেই বিশেষ সুবিধা পেয়েছেন ৷ বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে (Jalpaiguri Circuit Bench) এই মামলাটি শুনানির জন্য ওঠে ৷ অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকাকে পুরনো স্কুলে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় (Justice Abhijit Ganguly) ৷ একইসঙ্গে, ঘটনার সিবিআই তদন্তেরও (CBI Investigation) নির্দেশ দেন তিনি ৷
মামলাকারী প্রসূনসুন্দর তরফদার শিলিগুড়ির শ্রীগুরু বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ৷ স্কুলের পূর্বতন প্রধান শিক্ষক অবসর নেওয়ার পর বেশ কিছু দিন সেই পদে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসাবেও দায়িত্ব সামলেছেন তিনি ৷ অন্যদিকে, এই স্কুলেই সহ-শিক্ষিকা হিসাবে যোগ দেন শান্তা ৷ পরবর্তীতে আলিপুরদুয়ারের বীরপাড়া গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা হন তিনি ৷ সেখানে কাজে যোগ দেওয়ার এক বছরের মধ্যেই শিলিগুড়ির অমিয় পালচৌধুরী স্কুলে প্রধান শিক্ষিকা হিসাবে যোগদানের জন্য শান্তার নাম সুপারিশ করা হয় ৷ কিন্তু, শান্তা সেই সুযোগ গ্রহণ করেননি ৷ বদলে শিক্ষা দফতরের কাছে একটি আবেদন পাঠান তিনি ৷ শান্তার সেই আবেদনের ভিত্তিতেই তাঁকে তাঁর পুরনো স্কুল, অর্থাৎ শিলিগুড়ির শ্রীগুরু বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকা হিসাবে নিয়োগের সুপারিশ করা হয় ৷
আর এখানেই প্রশ্ন তুলেছেন মামলাকারী ৷ তাঁর বক্তব্য, এত অল্প সময়ের মধ্য়ে একজন শিক্ষিকা এতবার বদলির সুযোগ পেলেন কীভাবে ? বিভিন্ন স্কুলে তাঁর নাম যেভাবে সুপারিশ করা হয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন প্রসূনসুন্দর ৷ এর আগে কলকাতা হাইকোর্টে এই মামলার শুনানি হয়েছিল ৷ সেই সময় সিঙ্গল বেঞ্চের তরফে শান্তার নিয়োগের উপর 10 দিনের স্থগিতাদেশ জারি করা হয় ৷ বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে মামলাটি উঠলে বিচারপতি তাঁর পর্যবেক্ষণে জানান, চাকরিতে যোগ দেওয়ার পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই কাউকে এভাবে বদলির নির্দেশ দেওয়া যায় না ৷ এক্ষেত্রে এই অনিয়ম কীভাবে হল, তা খতিয়ে দেখা দরকার ৷
এরপরই এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায় ৷ পাশাপাশি, তিনি জানিয়ে দেন, প্রধান শিক্ষিকা হিসাবে শান্তা মণ্ডল প্রথম যে স্কুলে নিয়োগ পেয়েছিলেন, আলিপুরদুয়ারের সেই বীরপাড়া গার্লস স্কুলেই শনিবারের মধ্যে তাঁকে কাজে যোগ দিতে হবে ৷ শান্তা যদি আদালতের এই নির্দেশ অমান্য করেন, তাহলে তাঁর এই পদক্ষেপ 'ব্রেক অফ সার্ভিস' বলে গণ্য করা হবে ৷ আদালতের এই রায়ে খুশি মামলাকারী ৷ তবে এ নিয়ে শান্তা মণ্ডলের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর পক্ষ থেকে কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি ৷