জলপাইগুড়ি, 14 মে: নিঝুম গ্রামের প্রত্যন্ত এলাকায় অন্য রকম পরিবেশ । আন্তর্জাতিক মাতৃ দিবস উপলক্ষে রবিবার অভিনব উপায়ে মাতৃদিবস পালন করল জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি ব্লকের বারোঘরিয়া বটতলী স্বর্ণময়ী প্রাথমিক বিদ্যালয় । গত বছরের মতো এবছরও আন্তর্জাতিক মাতৃদিবসে এই স্কুলের প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হল 'মা পুজো' । বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা এদিন শ্রদ্ধা-ভক্তির সঙ্গে মায়ের পুজো করে ।
অভিনব এই 'মা পুজো' ৷ প্রথমে জল দিয়ে মায়ের পা ধুইয়ে দেয় পড়ুয়ারা, এরপর হাতজোড় করে মায়ের কাছে শপথবাক্য পাঠ করে ও প্রণাম করে মাকে পায়েস খাইয়ে দেয় । মায়েরাও তাঁদের সন্তানদের পায়েস খাইয়ে মিষ্টি মুখ করান । এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন,জলপাইগুড়ি জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ সভাপতি লক্ষমোহান রায়, ধূপগুড়ি পুরসভার প্রশাসক মন্ডলীর ভাইস চেয়ারম্যান রাজেশ কুমার সিং-সহ বিশিষ্ট জনেরা ।
মায়ের সঙ্গে সন্তানদের যে নাড়ির টান, প্রত্যেকের কাছে নিজের মা দেবীতুল্য সেটা মাথায় রেখেই মায়ের সঙ্গে সন্তানদের সম্পর্ককে সুদৃঢ় করতে এদিনের এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা ৷ বিদ্যালয়ের এই উদ্যোগে খুশি অভিভাবকরাও । ছোটো থেকেই সেখান হয়, সকলের জীবনের প্রথম গাইড, দার্শনিক, পরামর্শদাতা এবং বন্ধু হল 'মা '। ভিন্ন ভিন্ন ভাষায় আলাদা আলাদা ভাবে ডাকা হলেও প্রত্যেকে সন্তানের কাছে তাদের মা এক অমূল্য সম্পদ ৷
প্রতি বছর মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার পালিত হয় মাতৃ দিবস । চলতি বছরে 14 মে মাতৃ দিবস । মাতৃ দিবসে মায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল দেখাতে অজস্র সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট দেখা যায় । কিন্তু সেই মাকেই শেষ বয়সে যেতে হয় বৃদ্ধাশ্রমে । তা যাতে না হয়, এই অনুষ্ঠান থেকেই সেই বার্তা দেওয়া হল এদিন ৷
আরও পড়ুন: তুঝে সব হ্যায় পতা...
এই বিষয়ে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শিক্ষারত্ন জয় বসাক বলেন,"সন্তানরা যাতে নিজের মা-বাবাকে ভালোবাসে, তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকে সেই উদ্দেশ্যেই মা পুজোর আয়োজন করা হয়েছে । প্রচুর অসহায় মা বাবাকে শেষ বয়সে বৃদ্ধাশ্রমে যেতে হয় এমনকী যৌথ পরিবার ভেঙে যায় । সেজন্য মা-বাবার প্রতি শ্রদ্ধাশীল মনোভাব গড়ে তুলতেই এই উদ্যোগ ।" এদিন মোট 203 জন পড়ুয়া এই অনুষ্ঠানে যোগ দেয় ৷
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান লক্ষমোহন রায় জানান, আজকের দিনটি স্মরণীয় দিন হয়ে থাকবে । ছাত্রছাত্রীরা মায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল মনোভাব দেখালো এই দৃশ্য মনে রাখার মতো ।