ETV Bharat / state

Youth Carries Mother Dead Body: শববাহী গাড়ি ভাড়ার টাকা নেই, হাসপাতাল থেকে কাঁধেই মায়ের দেহ নিয়ে বাড়ি ফিরল ছেলে

এক অমানবিক দৃশ্যের সাক্ষী রইল জলপাইগুড়িবাসী । শববাহী গাড়ি করে মহিলার দেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য চাওয়া হয় 3000 টাকা ৷ সেই টাকা দিতে না পাড়ায় দেহ কাঁধে নিয়েই ক্রান্তি ব্লকে বাড়ির উদ্দেশে হেঁটে রওনা দিলেন মৃতের ছেলে ও স্বামী (Son Carries Woman Body on Shoulder) ৷

দেহ কাঁধে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা মৃতের স্বামী ও ছেলের
Son Carries Woman Body on Shoulder
author img

By

Published : Jan 5, 2023, 4:51 PM IST

Updated : Jan 6, 2023, 3:36 PM IST

দেহ কাঁধে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা মৃতের ছেলে ও স্বামীর

জলপাইগুড়ি, 5 জানুয়ারি: 2016 সালে খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিলেন ওড়িশার কৃষক দানা মাঝি ৷ সেদিন অ্যাম্বুলেন্স খরচ মেটানোর ক্ষমতা না-থাকায় স্ত্রীকে দাহ করতে কাঁধে নিয়ে হেঁটে তিনি পাড়ি দিয়েছিলেন 10 কিলোমিটার পথ ৷ এই ঘটনা দারিদ্র্যতার এক অসহায় চিত্রকে তুলে ধরেছিল সমাজের কাছে ৷ এই খবর প্রকাশিত হয়েছিল দেশের বিভিন্ন জেলার সংবাদমাধ্যমগুলিতে ৷ যা দেখে শিউড়ে উঠেছিল সারা দেশ ৷ নাড়িয়ে দিয়েছিল প্রশাসনকে ৷ এরপরই প্রশাসন গুরুত্ব সহকারে বিষয়টিকে দেখে এবং দানা মাঝিকে সাহায্যে করতে এগিয়ে আসে । পরে অবশ্য তাঁকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় ৷ তীব্র দারিদ্র্যতা থেকে দানা মাঝিকে জীবনের মূল স্রোতে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয় ।

কিন্তু 150 কোটির দেশে এখনও আনাচে-কানাচে লুকিয়ে রয়েছে এমন অনেক দানা মাঝি ৷ এদিনের জলপাইগুড়ির অমানবিক দৃশ্য তা আরও একবার মনে করিয়ে দিল ৷ শববাহী গাড়ি চেয়েছিল 3000 টাকা ৷ সেই টাকা না-দিতে পারায় শববাহী গাড়ি পেল না রোগীর পরিবার (Hearse van charges exorbitant amount) ৷ এরপর মহিলার দেহ কাঁধে নিয়েই ক্রান্তি ব্লকে বাড়ির উদ্দেশে হেঁটে রওনা দিলেন মৃতের স্বামী ও ছেলে (Jalpaiguri man carries his mother body on shoulder ) । আর এই দৃশ্য দাঁড়িয়ে দেখল আশেপাশের মানুষজন ৷ কেউ এগিয়ে আসেনি তাদের সাহায্যে ৷ অনেকটা পথ যাওয়ার পর শেষমেশ সাহায্যের জন্য আসে এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ।

জানা গিয়েছে, মাল মহকুমার ক্রান্তির ব্লকের বাসিন্দা পেশায় দিনমজুর রামপ্রসাদ দেওয়ান তাঁর মা লক্ষ্মীরানিকে গতকাল রাতে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করেন ৷ আজ ভোরর দিকে মারা যান তিনি । সকালে মায়ের দেহ বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি বেসরকারি শববাহী গাড়ি ভাড়া করতে যান ছেলে ৷ অভিযোগ, দেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য শববাহী গাড়ি ভাড়া চাওয়া হয় 3000 হাজার টাকা । কাকুতি-মিনতি করার পরেও অ্যাম্বুলেন্স তাঁরা পান না । এত টাকা দিতে না পেরে মহিলার দেহ কাঁধে নিয়েই বাবা-ছেলে হাঁটা শুরু করেন ক্রান্তির উদ্দেশে ৷ পথেই এই দৃশ্য চোখে পড়ে একটি সেচ্ছাসেবী সংগঠনের সম্পাদক অঙ্কুর দাসের । সঙ্গে সঙ্গে তাদের সংগঠনের শববাহী গাড়ি ডাকা হয় ৷ তাতে করেই দেহ নিয়ে যাওয়া হয় ক্রান্তি ব্লকের উদ্দেশে ৷

একদিকে রামপ্রসাদ দেওয়ান অভিযোগ করেন, "শববাহী গাড়ি চেয়েও পাইনি । অনেক টাকা দাবি করেছে । আমাদের কাছে টাকা নেই, তাই আমরা কাঁধে করে মাকে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলাম ।" জলপাইগুড়ি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সম্পাদক অঙ্কুর দাস অভিযোগ করে বলেন, "দেহ বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য সরকারি শববাহী গাড়ি পায়নি । এমনকী বেসরকারি শববাহী গাড়ি বেশি টাকা দাবি করে । টাকা না থাকায় মৃতের পরিবার কাঁধে করেই দেহ নিয়ে বাড়ি যাচ্ছিলেন ৷ আমরা দেখতে পেয়ে আমাদের শববাহী গাড়ি দিয়ে দেহ বাড়িতে পাঠাই ।"

আরও পড়ুন: অল ইজ ওয়েল ! প্রসব বেদনায় কাতর গর্ভবতীকে শহরের রাস্তায় রিকশাতে প্রসব করালেন আরেক মা

অপরদিকে জলপাইগুড়ি বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালক সংগঠনের সম্পাদক দিলীপ দাস বলেন, "আমাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন । আমাদের কাছে মৃতের পরিবার এসেছিল সকালে । তাঁদের কাছে যে টাকা দাবি করা হয়েছিল, তাঁরা তা দেননি ৷ তবে তাঁরা আমাদের এটা বলেননি যে তাঁদের কাছে টাকা নেই । যদি বলতো, তাহলে আমরা বিনামুল্যে পরিষেবা দিতাম । আমরা প্রচুর রোগীর পরিবারকে বিনামূল্যে পরিষেবা দিই । আমাদের বদনাম করার চক্রান্ত করা হয়েছে । একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আমাদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করল ।" তবে এদিনের মতো ঘটনা এখন আকছাড় দেখা যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ৷ যেখানে দারিদ্র্যতা এনে দাঁড় করিয়ে দেয় আয়নার সামনে ৷ তুলে ধরে সমাজের অন্য রূপ ৷

দেহ কাঁধে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা মৃতের ছেলে ও স্বামীর

জলপাইগুড়ি, 5 জানুয়ারি: 2016 সালে খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিলেন ওড়িশার কৃষক দানা মাঝি ৷ সেদিন অ্যাম্বুলেন্স খরচ মেটানোর ক্ষমতা না-থাকায় স্ত্রীকে দাহ করতে কাঁধে নিয়ে হেঁটে তিনি পাড়ি দিয়েছিলেন 10 কিলোমিটার পথ ৷ এই ঘটনা দারিদ্র্যতার এক অসহায় চিত্রকে তুলে ধরেছিল সমাজের কাছে ৷ এই খবর প্রকাশিত হয়েছিল দেশের বিভিন্ন জেলার সংবাদমাধ্যমগুলিতে ৷ যা দেখে শিউড়ে উঠেছিল সারা দেশ ৷ নাড়িয়ে দিয়েছিল প্রশাসনকে ৷ এরপরই প্রশাসন গুরুত্ব সহকারে বিষয়টিকে দেখে এবং দানা মাঝিকে সাহায্যে করতে এগিয়ে আসে । পরে অবশ্য তাঁকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় ৷ তীব্র দারিদ্র্যতা থেকে দানা মাঝিকে জীবনের মূল স্রোতে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয় ।

কিন্তু 150 কোটির দেশে এখনও আনাচে-কানাচে লুকিয়ে রয়েছে এমন অনেক দানা মাঝি ৷ এদিনের জলপাইগুড়ির অমানবিক দৃশ্য তা আরও একবার মনে করিয়ে দিল ৷ শববাহী গাড়ি চেয়েছিল 3000 টাকা ৷ সেই টাকা না-দিতে পারায় শববাহী গাড়ি পেল না রোগীর পরিবার (Hearse van charges exorbitant amount) ৷ এরপর মহিলার দেহ কাঁধে নিয়েই ক্রান্তি ব্লকে বাড়ির উদ্দেশে হেঁটে রওনা দিলেন মৃতের স্বামী ও ছেলে (Jalpaiguri man carries his mother body on shoulder ) । আর এই দৃশ্য দাঁড়িয়ে দেখল আশেপাশের মানুষজন ৷ কেউ এগিয়ে আসেনি তাদের সাহায্যে ৷ অনেকটা পথ যাওয়ার পর শেষমেশ সাহায্যের জন্য আসে এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ।

জানা গিয়েছে, মাল মহকুমার ক্রান্তির ব্লকের বাসিন্দা পেশায় দিনমজুর রামপ্রসাদ দেওয়ান তাঁর মা লক্ষ্মীরানিকে গতকাল রাতে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করেন ৷ আজ ভোরর দিকে মারা যান তিনি । সকালে মায়ের দেহ বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি বেসরকারি শববাহী গাড়ি ভাড়া করতে যান ছেলে ৷ অভিযোগ, দেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য শববাহী গাড়ি ভাড়া চাওয়া হয় 3000 হাজার টাকা । কাকুতি-মিনতি করার পরেও অ্যাম্বুলেন্স তাঁরা পান না । এত টাকা দিতে না পেরে মহিলার দেহ কাঁধে নিয়েই বাবা-ছেলে হাঁটা শুরু করেন ক্রান্তির উদ্দেশে ৷ পথেই এই দৃশ্য চোখে পড়ে একটি সেচ্ছাসেবী সংগঠনের সম্পাদক অঙ্কুর দাসের । সঙ্গে সঙ্গে তাদের সংগঠনের শববাহী গাড়ি ডাকা হয় ৷ তাতে করেই দেহ নিয়ে যাওয়া হয় ক্রান্তি ব্লকের উদ্দেশে ৷

একদিকে রামপ্রসাদ দেওয়ান অভিযোগ করেন, "শববাহী গাড়ি চেয়েও পাইনি । অনেক টাকা দাবি করেছে । আমাদের কাছে টাকা নেই, তাই আমরা কাঁধে করে মাকে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলাম ।" জলপাইগুড়ি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সম্পাদক অঙ্কুর দাস অভিযোগ করে বলেন, "দেহ বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য সরকারি শববাহী গাড়ি পায়নি । এমনকী বেসরকারি শববাহী গাড়ি বেশি টাকা দাবি করে । টাকা না থাকায় মৃতের পরিবার কাঁধে করেই দেহ নিয়ে বাড়ি যাচ্ছিলেন ৷ আমরা দেখতে পেয়ে আমাদের শববাহী গাড়ি দিয়ে দেহ বাড়িতে পাঠাই ।"

আরও পড়ুন: অল ইজ ওয়েল ! প্রসব বেদনায় কাতর গর্ভবতীকে শহরের রাস্তায় রিকশাতে প্রসব করালেন আরেক মা

অপরদিকে জলপাইগুড়ি বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালক সংগঠনের সম্পাদক দিলীপ দাস বলেন, "আমাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন । আমাদের কাছে মৃতের পরিবার এসেছিল সকালে । তাঁদের কাছে যে টাকা দাবি করা হয়েছিল, তাঁরা তা দেননি ৷ তবে তাঁরা আমাদের এটা বলেননি যে তাঁদের কাছে টাকা নেই । যদি বলতো, তাহলে আমরা বিনামুল্যে পরিষেবা দিতাম । আমরা প্রচুর রোগীর পরিবারকে বিনামূল্যে পরিষেবা দিই । আমাদের বদনাম করার চক্রান্ত করা হয়েছে । একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আমাদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করল ।" তবে এদিনের মতো ঘটনা এখন আকছাড় দেখা যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ৷ যেখানে দারিদ্র্যতা এনে দাঁড় করিয়ে দেয় আয়নার সামনে ৷ তুলে ধরে সমাজের অন্য রূপ ৷

Last Updated : Jan 6, 2023, 3:36 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.