ETV Bharat / state

Kali Puja 2023: বংশপরম্পরায় মুসলিম সেবায়েতের হাতেই পুজোয় মাতে দেবী চৌধুরানী শ্মশানকালী মন্দির

Jalpaiguri Devi Choudhurani Shamshankali Temple: দেবী চৌধুরানী শ্মশানকালী মন্দির ৷ দেবী চৌধুরানী এই মন্দিরে পুজো দিতেন ৷ তাই তাঁর নামেই এর নামকরণ ৷ মন্দিরের আরেকটি বিশেষত্ব, এখানকার প্রধান সেবায়েত ৷ যিনি একজন মুসলমান ৷ বংশপরম্পরায় তিনি মন্দিরের সবকাজ করে আসছেন ৷ আর আগামী রবিবার কালীপুজো ৷ ওই দিন তাঁর ব্যস্ততা সবচেয়ে বেশি ৷

ETV BHARAT
ETV BHARAT
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Nov 10, 2023, 10:48 PM IST

পুজোয় মাতে দেবী চৌধুরানী শ্মশানকালী মন্দির

জলপাইগুড়ি, 10 নভেম্বর: জলপাইগুড়ি জেলার গোশালা মোড়ের দেবী চৌধুরানী শ্মশানকালী মন্দির ৷ উত্তরবঙ্গে দেবী চৌধুরানীর একাধিক ডেরা ছিল ৷ তার মধ্যে এটি অন্যতম ৷ এই শ্মশানকালী মন্দিরে পুজো দিয়ে গিয়েছিলেন দেবী চৌধুরানী ৷ সেই কারণেই পরবর্তীকালে এই মন্দিরের নাম দেবী চৌধুরানী শ্মশানকালী মন্দির দেওয়া হয় ৷ আর এই মন্দিরের অন্যতম বিশেষত্ব, মন্দিরের প্রধান সেবায়েত হলেন একজন মুসলমান ৷ বংশপরম্পরায় ওই পরিবারের সদস্যরা, মন্দিরের নিত্যদিনের কাজ করেন ৷ বর্তমানে সেই দায়িত্ব পালন করেন মমতাজ মহম্মদ ৷

দেবী চৌধুরানী শ্মশানকালী মন্দিরে দেবীকে ভোগ দেওয়া হয়, বোয়াল মাছ, শোল মাছ ও মাংস দিয়ে ৷ আর মমতাজ মহম্মদ নিজে সেই সব আয়োজন করেন ৷ রোজ সকালে মন্দিরে পুজো জন্য ফুল তোলা, মন্দির প্রাঙ্গন পরিষ্কার রাখা-সহ অন্যান্য সব কাজই করেন তিনি ৷ আর দু’দিন পরেই কালীপুজো, এই সময় মমতাজ মহম্মদের দম ফেলার সময় থাকে না ৷ মায়ের পুজোর সব আয়োজনের দায়িত্ব যে তাঁরই উপরে ৷ ভক্তি ভরে কালীপুজোর আয়োজন করেন তিনি ৷ গোশালা মোড়ের এই দেবী চৌধুরানী শ্মশানকালী মন্দির সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য পীঠস্থান হয়ে উঠেছে ৷

এমনকী এই মন্দিরে হিন্দুরা যেমন মা কালীর দর্শনে আসেন, তেমনি মুসলমানরাও দু’বেলা মন্দিরে প্রণাম করে যান ৷ তেমনই এক ভক্ত মহম্মদ সাইদুল হক ৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি সকালে কাজে যাওয়ার আগে ও কাজ থেকে ফেরার পরে, মা কালীকে দর্শন করে প্রণাম করে যাই ৷ আমার সব মনের বাসনা মা পূরণ করেন ৷ আমি রোজ নমাজ না পরতে পারলেও, মা কালীকে দর্শন করে মানসিক শান্তি পাই ৷’’

জলপাইগুড়ির দেবী চৌধুরানী মন্দিরের প্রধান পুরোহিত সুভাষ চৌধুরী ৷ তিনি বলেন, ‘‘দেবী চৌধুরানী শ্মশানকালী মন্দিরে কালী ঠাকুরকে ভোগ দেওয়া হয় বোয়াল মাছ, শোল মাছ ও মাংস দিয়ে ৷ তন্ত্র মতেই মায়ের পুজো হয় ৷ এই মন্দির সব ধর্মের মানুষের মিলন স্থল ৷ প্রায় আড়াইশো বছর থেকে এই পুজো হয়ে আসছে ৷ শ্মশানকালী হিসেবে পুজো হন দেবী ৷ আমিষ ভোগে দেওয়া হয় বোয়াল মাছ, শোল মাছ, ডাল, ভাত আর নিরামিষ তরকারিও দেওয়া হয় ৷

মন্দির কমিটির সম্পাদক দেবাশিস সরকার বলেন, ‘‘শোনা যায় দেবী চৌধুরানী এখানে এসেছিলেন ৷ এই মন্দিরে মা কালীর পুজো দিয়ে গিয়েছেন ৷ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তের দেবী চৌধুরানীর ডেরা ছিল ৷ তার একটা ডেরা ছিল জলপাইগুড়ি ৷ দেবী চৌধুরানী দরিদ্র মানুষকে দান করতেন ৷ এই মন্দিরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া রুকরুকা নদী থেকে বজরায় করে তিস্তা নদী হয়ে যাতায়াত করতেন দেবী চৌধুরানী ৷ এই মন্দির সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটা বার্তা বহন করে ৷ এখানে যিনি প্রধান সেবায়েত তিনি মুসলমান ৷ মমতাজই সব কাজ করে আসছেন বংশপরম্পরায় ৷’’

আরও পড়ুন:

  1. হিন্দু গ্রামে পুজো শুরু করেছিলেন মুসলিম বধূ, তাঁর নামেই 'শেফালি কালীর পুজো' এখন সর্বজনীন
  2. বদ্রীনাথ থেকে বুর্জ খলিফা, বারাসতের কালীপুজোর নজরকাড়া থিম
  3. ফের বাড়ছে চাহিদা, 24 ঘণ্টা কাজ করেও অর্ডারের মোমবাতি জোগাতে পারছেন না রায়গঞ্জের শ্রমিকরা

পুজোয় মাতে দেবী চৌধুরানী শ্মশানকালী মন্দির

জলপাইগুড়ি, 10 নভেম্বর: জলপাইগুড়ি জেলার গোশালা মোড়ের দেবী চৌধুরানী শ্মশানকালী মন্দির ৷ উত্তরবঙ্গে দেবী চৌধুরানীর একাধিক ডেরা ছিল ৷ তার মধ্যে এটি অন্যতম ৷ এই শ্মশানকালী মন্দিরে পুজো দিয়ে গিয়েছিলেন দেবী চৌধুরানী ৷ সেই কারণেই পরবর্তীকালে এই মন্দিরের নাম দেবী চৌধুরানী শ্মশানকালী মন্দির দেওয়া হয় ৷ আর এই মন্দিরের অন্যতম বিশেষত্ব, মন্দিরের প্রধান সেবায়েত হলেন একজন মুসলমান ৷ বংশপরম্পরায় ওই পরিবারের সদস্যরা, মন্দিরের নিত্যদিনের কাজ করেন ৷ বর্তমানে সেই দায়িত্ব পালন করেন মমতাজ মহম্মদ ৷

দেবী চৌধুরানী শ্মশানকালী মন্দিরে দেবীকে ভোগ দেওয়া হয়, বোয়াল মাছ, শোল মাছ ও মাংস দিয়ে ৷ আর মমতাজ মহম্মদ নিজে সেই সব আয়োজন করেন ৷ রোজ সকালে মন্দিরে পুজো জন্য ফুল তোলা, মন্দির প্রাঙ্গন পরিষ্কার রাখা-সহ অন্যান্য সব কাজই করেন তিনি ৷ আর দু’দিন পরেই কালীপুজো, এই সময় মমতাজ মহম্মদের দম ফেলার সময় থাকে না ৷ মায়ের পুজোর সব আয়োজনের দায়িত্ব যে তাঁরই উপরে ৷ ভক্তি ভরে কালীপুজোর আয়োজন করেন তিনি ৷ গোশালা মোড়ের এই দেবী চৌধুরানী শ্মশানকালী মন্দির সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য পীঠস্থান হয়ে উঠেছে ৷

এমনকী এই মন্দিরে হিন্দুরা যেমন মা কালীর দর্শনে আসেন, তেমনি মুসলমানরাও দু’বেলা মন্দিরে প্রণাম করে যান ৷ তেমনই এক ভক্ত মহম্মদ সাইদুল হক ৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি সকালে কাজে যাওয়ার আগে ও কাজ থেকে ফেরার পরে, মা কালীকে দর্শন করে প্রণাম করে যাই ৷ আমার সব মনের বাসনা মা পূরণ করেন ৷ আমি রোজ নমাজ না পরতে পারলেও, মা কালীকে দর্শন করে মানসিক শান্তি পাই ৷’’

জলপাইগুড়ির দেবী চৌধুরানী মন্দিরের প্রধান পুরোহিত সুভাষ চৌধুরী ৷ তিনি বলেন, ‘‘দেবী চৌধুরানী শ্মশানকালী মন্দিরে কালী ঠাকুরকে ভোগ দেওয়া হয় বোয়াল মাছ, শোল মাছ ও মাংস দিয়ে ৷ তন্ত্র মতেই মায়ের পুজো হয় ৷ এই মন্দির সব ধর্মের মানুষের মিলন স্থল ৷ প্রায় আড়াইশো বছর থেকে এই পুজো হয়ে আসছে ৷ শ্মশানকালী হিসেবে পুজো হন দেবী ৷ আমিষ ভোগে দেওয়া হয় বোয়াল মাছ, শোল মাছ, ডাল, ভাত আর নিরামিষ তরকারিও দেওয়া হয় ৷

মন্দির কমিটির সম্পাদক দেবাশিস সরকার বলেন, ‘‘শোনা যায় দেবী চৌধুরানী এখানে এসেছিলেন ৷ এই মন্দিরে মা কালীর পুজো দিয়ে গিয়েছেন ৷ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তের দেবী চৌধুরানীর ডেরা ছিল ৷ তার একটা ডেরা ছিল জলপাইগুড়ি ৷ দেবী চৌধুরানী দরিদ্র মানুষকে দান করতেন ৷ এই মন্দিরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া রুকরুকা নদী থেকে বজরায় করে তিস্তা নদী হয়ে যাতায়াত করতেন দেবী চৌধুরানী ৷ এই মন্দির সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটা বার্তা বহন করে ৷ এখানে যিনি প্রধান সেবায়েত তিনি মুসলমান ৷ মমতাজই সব কাজ করে আসছেন বংশপরম্পরায় ৷’’

আরও পড়ুন:

  1. হিন্দু গ্রামে পুজো শুরু করেছিলেন মুসলিম বধূ, তাঁর নামেই 'শেফালি কালীর পুজো' এখন সর্বজনীন
  2. বদ্রীনাথ থেকে বুর্জ খলিফা, বারাসতের কালীপুজোর নজরকাড়া থিম
  3. ফের বাড়ছে চাহিদা, 24 ঘণ্টা কাজ করেও অর্ডারের মোমবাতি জোগাতে পারছেন না রায়গঞ্জের শ্রমিকরা
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.