জলপাইগুড়ি, 5 অক্টোবর: সিকিমের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে জলপাইগুড়ি জেলায় তিস্তা নদীর জলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ৷ সেই অবস্থা খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়িতে আসেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক । এ দিন সকালে বাগডোগরা বিমানবন্দরে নেমে মন্ত্রী গাজোলডোবায় সেচ দফতরের হাওয়া মহলে প্রশাসনিক কর্তাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন ।
এ দিন বৈঠক শেষে সেচমন্ত্রী জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন । সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘‘আমরা টেকনিক্যাল টিমের সঙ্গে কথা বলেছি। কী করা উচিত, তা দেখা হচ্ছে । মুখ্যমন্ত্রীর (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) নির্দেশে কাজ করা হচ্ছে । আমরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গিয়ে দেখব । বিপর্যয় আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘কিন্তু স্পারের মুখ ভেঙেছে । তিস্তার জল উপচে পড়েছে । জল না কমলে বোঝা যাবে না ক্ষতি কতটা হয়েছে । যা যা করণীয়, তা করব । জেলাপ্রশাসনের সঙ্গে সব সময় কথা হচ্ছে আমাদের দফতরের । গাজোলডোবার যা ক্ষমতা আছে, আশাকরি সামলে দিতে পারব ৷ চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । তারা ইরিগেশনের পাশে এসে চাষ করছে ৷ তাই আমরা বাধা দিই না । মানবিক ভাবে দেখি আমরা ।’’
এ দিন সেচ দফতরের বৈঠকে ছিলেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক, সেচ প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন, আদিবাসী উন্নয়ন মন্ত্রী বুলুচিক বড়াইক, মন্ত্রী গুলাম রব্বানি, সাংসদ প্রকাশচিক বড়াইক, জলপাইগুড়ির জেলাশাসক শামা পারভিন, পুলিশ সুপার খাণ্ডবাহালে উমেশ গণপত, বিধায়ক খগেশ্বর রায়-সহ সেচ দফতরের আধিকারিকরা ।
উল্লেখ্য, সিকিমে মেঘভাঙা বৃষ্টির জলে প্লাবিত হয় ওই রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকা । তিস্তা নদীতে জলস্ফীতির ফলে বানভাসি হন সিকিমের মানুষ । তিস্তা নদী ফুঁলে ফেপে ওঠার ফলে সতর্কতা জারি করা হয় এই রাজ্যের কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, দার্জিলিংয়ে ৷
সিকিম থেকে জলপাইগুড়িতে নেমে আসা তিস্তা নদী বাংলাদেশে গিয়ে মিশেছে । ফলে জলপাইগুড়ি জেলা ও কোচবিহার জেলায় বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয় । জলপাইগুড়ি জেলার তিস্তা নদীর তীরবর্তী মালবাজার, ময়নাগুড়ি, ক্রান্তি সদর ব্লকের কয়েক হাজার মানুষকে ত্রাণ শিবিরে সরিয়ে নেওয়া হয় । চারটি ব্লকের 17টি ক্যাম্পে 3288 জনকে সরিয়ে নেওয়া হয় বলে জানান জেলাশাসক শামা পারভিন । এদিকে কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ ব্লকের কয়েকশো মানুষকে ত্রাণ শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয় ।
আরও পড়ুন: সিকিমের বিপর্যয়ে নড়চড়ে বসল রাজ্যের সেচ দফতর, জলপাইগুড়িতে ক্ষতিগ্রস্ত তিস্তা বাঁধ সংস্কার