জলপাইগুড়ি, 16 মে : অভ্যন্তরীণ সমস্যার জন্য শ্রীলঙ্কা বিদেশে চা রফতানি করতে পারছে না ৷ সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এ বার শ্রীলঙ্কার বিদেশের বাজার ধরতে চাইছে ভারত (Indian Tea Council Try to Catch Foreign Market of Sri Lanka) ৷ তেমনি উদ্যোগ নিয়েছে ভারতীয় চা পর্ষদ ৷ রাশিয়া ও ইরান এই দুই দেশের বাজারে বর্তমানে নানা কারণে সমস্যা চলছে ৷ তাই পশ্চিম ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, ইরাক এই সমস্ত দেশের বাজার ধরতে আগ্রহী ভারতীয় চা পর্ষদ ৷ চালসাতে টি অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া (Tea Association of India)-র 50তম বার্ষিক সাধারণ সভায় এসে এমনটাই জানালেন ভারতীয় চা পর্ষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান সৌরভ পাহাড়ি ৷ শ্রীলঙ্কার তৈরি করা বিদেশি বাজার ধরতে আগ্রহী ভারতের চা ব্যবসায়ীরাও ৷
ভারতীয় চা পর্ষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান সৌরভ পাহাড়ি জানান, ‘‘ভারত 195 মিলিয়ন কেজি চা প্রতি বছর বিদেশে রফতানি করে ৷ সেখানে শ্রীলঙ্কা 250 মিলিয়ন কেজি চা রফতানি করে প্রতি বছর ৷ আমরা চেষ্টা করছি ভারতীয় চায়ের রফতানি বাড়াতে ৷ তবে, আমাদের যে ট্রাডিশনাল বাজার আছে যেমন রাশিয়া ও ইরান ৷ এই দুটো বাজারে বর্তমানে নানা কারণে সমস্যা চলছে ৷ তাই আমরা পশ্চিম ইউরোপ, আমেরিকার উত্তরভাগ, ইরাক এই সমস্ত বাজারগুলিকে ধরতে পারি ৷ তাদের সঙ্গে কথা বলছি ৷ তাই সেই সব দেশে যারা ভারতের চা কিনতে আগ্রহী, তাদের আমাদের দেশে নিয়ে এসে চা উৎপাদনের পুরো প্রক্রিয়া দেখানো হবে ৷ ভারত সরকারের থেকে অনুমতি নিয়েই সেই কাজ করা হবে ৷ মূলত ভারতে উৎপাদিত চায়ের গুণগত মান তাদের দেখানো হবে ৷ ভারত থেকেও কিছু রফতানিকারী ব্যবসায়ীদের আমরা পাঠাব বিদেশে ৷ তাঁরাও চায়ের স্যাম্পেল বিদেশি ব্যবসায়ীদের দেখাবেন ৷’’
ভারতীয় চা পর্ষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান জানান, ‘‘শ্রীলঙ্কার প্রধান বাজার ছিল ইরান ৷ বর্তমানে শ্রীলঙ্কা তাদের আভ্যন্তরীণ সমস্যার জেরে চা রফতানি করতে পারছে না ৷ আমরা চাইছি শ্রীলঙ্কা যে মার্কেটের চাহিদা রেখে গেছে ৷ আমরা যাতে সেই মার্কেটটা ধরতে পারি, সেই চেষ্টা করছি ৷
আরও পড়ুন : Rangeet Tea Garden : বৃহস্পতিবার থেকে খুলছে দার্জিলিংয়ের রঙ্গীত চা-বাগান
এ নিয়ে টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার কলকাতা শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রবীর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমরা ইরানে 56 মিলিয়ন কেজি চা রফতানি করেছি ৷ কিন্তু, এখন তা 25 মিলিয়ন কেজিতে দাঁড়িয়েছে ৷ টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার কলকাতা শাখার সভাপতি অজয় জালান বলেন, ‘‘শ্রীলঙ্কার চায়ের বিদেশে একটা অন্য মার্কেট রয়েছে ৷ শ্রীলঙ্কার চা বিদেশে রফতানির ক্ষেত্রে সেখানকার সরকারের বিরাট সহযোগিতা রয়েছে ৷ এই রফতানির উপর নির্ভর করে শ্রীলঙ্কা সরকারের বড় রাজস্ব আসে ৷ আমাদের সেটা নেই ৷ যদিও শ্রীলঙ্কার অভ্যন্তরীণ সমস্যার জন্য একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে ৷ তবে, এটাও ঠিক নয় যে, শ্রীলঙ্কার এমন পরিস্থিতির জন্য আমরা দ্রুত সেই সুযোগ পেয়ে যাব ৷ তবে, আমরা চেষ্টা করছি শ্রীলঙ্কার মার্কেট ধরার জন্য ৷’’
আরও পড়ুন : Assam Manohari Gold Tea : এক কেজি মনোহরি চায়ের নিলাম হল এক লাখে !
তবে শ্রীলঙ্কার চা রফতানি না করতে পারার কারণে একটা চাহিদা তৈরি হবে ৷ শ্রীলঙ্কার থেকে যে চা পাওয়া যাবে না সেটা ভারতের কাছ থেকেই নিতে হবে অধিকাংশ দেশকে ৷ যেমন শ্রীলঙ্কার অকশন সেন্টারে সমস্যা চলছে বলে কোচিতে চায়ের চাহিদা বেড়েছে । অজয় জালান জানান বর্তমানে গুণমান ভাল হচ্ছে না ৷ ফলে চায়ের দাম ভারতের ব্যবসায়ীরা পাচ্ছেন না ৷