জলপাইগুড়ি, 12 অগস্ট: অবসর গ্রহণের পরেও হাতিদের বাঁচানোর জন্য কাজ করে চলেছেন স্বপন সেন ৷ জলপাইগুড়ি বনবিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিট অফিসার স্বপন সেন হাতিদের জন্য বাকি জীবনটা কাজ করে যেতে চান ৷ আন্তর্জাতিক হাতি দিবসে তাঁর এই মহান অবদানের জন্য সংবর্ধনা পেয়ে আপ্লুত স্বপন সেন ৷ হাতিদের নিয়ে ভালো কাজ করার সুবাদে আজকের এই বিশেষদিনে বনকর্মীদের সংবর্ধনা দিল বন দফতর ৷ গরুমারা বন্যপ্রাণ বিভাগ এবং জলপাইগুড়ি বনবিভাগের পক্ষ থেকে জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদ হলে মোট 12 জন বনকর্মী-সহ ময়নাগুড়ি রোড পরিবেশ প্রেমী সংগঠনকে সংবর্ধিত করা হয় ৷
হাতিদের রক্ষার দায়িত্বে কেবল বনকর্মীরাই নন ৷ জঙ্গল সংলগ্ন একাধিক বনবস্তি এলাকার বাসিন্দা থেকে শুরু করে বিভিন্ম স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এই কাজ করছে ৷ এদিন জেলা পরিষদ হলে স্কুল ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বন্যপ্রাণ এবং পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতামূলক বার্তা প্রচার করা হয় ৷ এক্ষেত্রে বন দফতরকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন জেলার একাধিক পরিবেশ প্রেমী ৷
জলপাইগুড়ি জেলার নাগরাকাটার শুল্কা পাড়ার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত বন দফতরের কর্মী স্বপন সেন ৷ তিনি বলেন, ‘‘30 জুন আমি অবসর নিয়েছি ৷ কিন্তু আমি কাজ চালিয়ে যেতে চাই বলে ডিএফও-কে জানিয়েছিলাম ৷ আমি কোনও পারিশ্রমিক ছাড়াই কজা করতে চেয়েছিলাম ৷ যতদিন পারব হাতির জন্য কাজ করে যাব আমি ৷ রাতের বেলায় যেমন হাতি তাড়াতে যাই ৷ তেমনি রেললাইনে হাতি চলে এলে স্থানীয় ষ্টেশনে ফোন করে জানিয়ে দিই ৷ হাতি ও মানুষের সংঘাত যাতে না হয়, সেই কাজটা করছি ৷’’
আরও পড়ুন: ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু ঠেকাতে রেলের নয়া প্রযুক্তি, বরাদ্দ 77 কোটি
গরুমারা জাতীয় উদ্যানে 25টি কুনকি হাতি রয়েছে ৷ এই হাতিদের পরিচর্যা রক্ষণাবেক্ষণের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন একাধিক বনকর্মী ৷ যাদের মধ্যে হাতির মাহুত এবং পাতাওয়ালারা রয়েছেন ৷ ভালো কাজের জন্য বিট অফিসার এমডি আজাদ আলি, ফরেস্ট গার্ড নরেশ মুণ্ডা, মাহুত জয়দেব রায়, যোগেশ রায় ছাড়াও, পাতাওয়ালা রাজেশ মুণ্ডাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে ৷ তাঁরা নিজ নিজ জায়গা থেকে ব্যতিক্রমী কাজ করেছেন ৷ জানা গিয়েছে, বহু বছর ধরে রাজ মুণ্ডা হাতির খাবারের যোগান দিয়ে আসছেন ৷
আরও পড়ুন: ট্রেনের ধাক্কায় গর্ভবতী হাতির মৃত্যু, পেট থেকে ছিটকে গেল শাবক
এদিন বন দফতরের সঙ্গে মূল উদ্যোক্তা সংস্থার কর্তা কৌস্তুভ চৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা বন দফতরের সঙ্গে যৌথ উদ্যাগে হাতি দিবসে সচেতনা বৃদ্ধির চেষ্টা যেমন করেছি ৷ তেমনি হাতি সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ভালো কাজের জন্য বেশ কিছু বনকর্মী এবং পরিবেশ প্রেমী সংগঠনকে সংবর্ধিত করেছি ৷’’
রাজ্যের অতিরিক্ত প্রধান মুখ্য বনপাল (উত্তরবঙ্গ) উজ্জ্বল ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের দফতরের এই সকল কর্মীরা আমাদের গর্ব ৷ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর কোন বিকল্প নেই ৷ উত্তরবঙ্গে এখন হাতির সংখ্যা প্রায় 550টি ৷ ট্রেনের ধাক্কায় কেউ হাতি ইচ্ছে করে মারেনি ৷ তবে, ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে ৷ তবে, এখনও শূন্য করা যায়নি সংখ্যাটা ৷’’