জলপাইগুড়ি, 12 ডিসেম্বর: দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান । নতুন বছরেই নতুন উড়ালপুল উপহার পেতে চলেছে রাজ্যবাসী । শিলিগুড়ি থেকে অসমগামী 31 নম্বর জাতীয় সড়কের উপর তৈরি হচ্ছে এই উড়ালপুল ৷ কাজ প্রায় শেষের পথে ৷ এই উড়ালপুল চালু হয়ে গেলে রেলগেটের কারণে আর কয়েক ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকতে হবে না অ্যাম্বুলেন্স থেকে দূরপাল্লার গাড়িকে । উত্তরপূর্ব ভারতের সঙ্গে যোগাযোগেও বাড়বে গতি । কারণ উত্তরপূর্ব ভারতের যাওয়ার একমাত্র সড়কমাধ্যম ময়নাগুড়ির এই রাস্তা ৷
জাতীয় সড়কের ওপর দিয়ে 1998 সালে নিউ মালবাজার চ্যারাবান্ধা রেলপথ চালু হয় । এর ফলে বিপাকে পড়তে হয় বাস থেকে শুরু করে দূরপাল্লায় গাড়িগুলিকে । রেলগেট খোলার পর শিলিগুড়ি থেকে ময়নাগুড়ি হয়ে অসমগামী 31 নম্বর জাতীয় সড়কে লেগে যায় দীর্ঘ যানজট । এই কারণে অ্যাম্বুলেন্স থেকে শুরু করে সব ধরনের গাড়ি আটকা পড়ে সেখানে । এই অবস্থায় নাভিশ্বাস উঠেছিল সাধারণ মানুষের । তবে সেই সমস্যা থেকে এবার রেহাই মিলতে চলছে ৷ কারণ আর কিছু দিনের মধ্যেই চালু হয়ে যাবে উড়ালপুল । নির্মীয়মান উড়ালপুলের দৈর্ঘ প্রায় এক কিলোমিটার । এক একটি সেতুর প্রস্থ 12 মিটার ।
রেললাইনের উপর দিয়েই তৈরি হয়েছে এই উড়ালপুল । তবে জমি জটের কারণে বেশ কয়েকবছর ধরেই উড়ালপুরের কাজটি ঠিকমত হচ্ছিল না । সেই সমস্যা মিটতে গত দু'বছর ধরে উড়ালপুরের কাজ জোরকদমে চলছে । আগামী মাসের মধ্যেই এই উড়ালপুলের উপর দিয়ে দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল করবে বলে জানা গিয়েছে । নতুন বছরের শুরুতেই 31 নম্বর জাতীয় সড়কের ওপরে নির্মিত উড়ালপুল চালু হয়ে যাবে ৷ এর ফলে উত্তরপূর্ব ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ যেমন আরও ভালো হবে । তেমনই গাড়ি চলাচলে গতি বাড়বে ।
সূত্রের খবর, 31 ডিসেম্বরের মধ্যে এই উড়ালপুল তৈরির লক্ষ্য়মাত্রা নেওয়া হয়েছে । বর্তমানে দিনে রাতে মোট 130 জন শ্রমিক কাজ করছেন উড়ালপুলে । অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে এই উড়ালপুল তৈরি করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে উড়ালপুলের নির্মাণের বরাদপ্রাপ্ত সংস্থার পক্ষ থেকে । সংস্থার আধিকারিক সৌরভ কুমার সাহা বলেন, "আমরা নতুন বছরে উড়ালপুর উপহার পেয়ে যাব । রেললাইনের সমস্যা ঘুঁচে যাবে । ইতিমধ্যেই শতাধিক শ্রমিক কাজ করছে । উড়ালপুল চালু হয়ে গেলে যানজটে আর মানুষকে পড়তে হবে না । যানজট হলে উত্তরপূর্বের মালবাহী গাড়িগুলি খুব সমস্যায় পড়ত । ইতিমধ্যেই উড়ালপুলে ওঠার দুইপাশের রাস্তা তৈরি হয়ে গিয়েছে । সেতুর রেলিং তৈরি কাজও প্রায় শেষের পথে ।"
এখন উড়ালপুল চালুর অপেক্ষায় নিত্যযাত্রীরা ৷ শংকর মণ্ডল বলেন, "আমাদের আগে খুব সমস্যায় পড়তে হয় । রেলগেট পড়ে গেলেই সমস্যা চরমে ওঠে । কয়েক ঘণ্টা যানজট লেগে যায । উড়ালপুল চালু হয়ে গেলে উত্তরপূর্ব ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ আরও ভালো হবে । আমাদের আর যানজটে পড়তে হবে না ।" ময়নাগুড়ির স্থানীয় বাসিন্দা নির্মল সন্ন্যাসীর কথায়, "জাতীয় সড়কের ওপর রেললাইনের ফলে আমাদের অনেক অসুবিধা হয় । আমাদের যানজটে দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকতে হয় । ময়নাগুড়ি রোডের রেললাইনের ওপর উড়ালপুল চালু হলে আমাদের অনেক সুবিধা হবে ৷ অসমের সঙ্গে যোগাযোগ আরও ভালো হবে । উড়ালপুল চালু হলে আমাদের যাতায়াতে গতি বাড়বে ।"
আরও পড়ুন: