জলপাইগুড়ি, 14 জুলাই: দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালেই এক বৃদ্ধা তাঁর পঙ্গু মেয়ে ও সদ্যজাত নাতনি ও নাবালক নাতিকে নিয়ে দিন কাটাচ্ছিলেন ৷ খবর পেয়ে এই অসহায় পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন রাজ্যের শিশু অধিকার সুরক্ষা আয়োগের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী (Even After the Assurance of SCPCR Jalpaiguri Family Living Their Life in Footpath)৷ জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে বাচ্চা দু'টির থাকা-খাওয়া ও সবার থাকার ব্যবস্থা করার নির্দেশও দিয়েছিলেন । কিন্তু ওই নির্দেশ 'কথাই' থেকে গিয়েছে ৷ পরিবারটি এখনও সাহায্য পায়নি ৷
অন্যদিকে, তৃণমূল নেতাদের কাটমানি দিতে পারছেন না বলেই সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন না পরিবারটি ৷ এমনটাই অভিযোগ এনেছে বিজেপি । শিশুর পরিবারকে আশ্রয় দেবে বা সহযোগিতা করবে কে, তা নিয়েই এখন দড়ি টানাটানি চলছে । সহায়-সম্বলহীন হয়ে পঙ্গু মেয়ে ও তাঁর দুধের শিশুকে নিয়ে হাসপাতালে দিন কাটাচ্ছেন অসহায় বৃদ্ধা । অভাবের তাড়নায় নাবালক নাতি পেটের তাগিদে ভিক্ষে করছে । সঙ্গে পঙ্গু মেয়েও ফুটপাতে ভিক্ষে করছেন ।
ইটিভি ভারতের কাছে খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন রাজ্যের শিশু অধিকার সুরক্ষা আয়োগের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী । জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে বাচ্চার থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিলেও এখনও কোনও ব্যবস্থাই হয়নি বলে অভিযোগ । ফলত খোলা আকাশের নীচেই রাত কাটাতে হচ্ছে পরিবারটিকে ।
আরও পড়ুন: জলপাইগুড়িতে অসহায় পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন রাজ্য শিশু সুরক্ষা আয়োগের চেয়ারপার্সন
সহায়-সম্বলহীন অবস্থায় এই পরিবারের বাচ্চা ছেলেটি রুটি-রুজির তাগিদে ফেলে দেওয়া কাগজ, বোতল কুড়োতে শুরু করেছে ৷ এমনকী মাঝে-মধ্যে ভিক্ষেও করে পেটের তাগিদে। একটা সময় তাদের বাড়ি-ঘর সবই ছিল কিন্তু বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে নিঃস্ব হয়ে যায় ।
গত মাসে 21 জুন রাজ্যের শিশু অধিকার সুরক্ষা আয়োগের চেয়ারপার্সন অন্যন্যা চক্রবর্তী জলপাইগুড়িতে আসেন। চেয়ারপার্সন তাঁদের থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন ডিস্ট্রিক্ট চাইল্ড প্রোটেকশন ইউনিট এর প্রধান সুদীপ ভদ্রকে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত প্রশাসনের তরফে পরিবারের সঙ্গে দেখা করা হলেও তাঁদের নুন্যতম সাহায্য করা হয়নি। গত 5 জুলাই পৌরসভার চেয়ারম্যানকে ওয়েলফেয়ার অফিসার চিঠি দিয়ে পরিবারের কী ব্যবস্থা নেওয়া হল তার রিপোর্ট চেয়েছেন মাত্র।
আরও পড়ুন: টাকা নিয়ে উজ্জ্বলা গ্যাস দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার বিজেপি নেতা
জোৎস্না বর্মন ও তাঁর মেয়ে মীরা দেবী বলেন, "আমাদের কাছে এসে সাহায্য করবেন বলে রাজ্যের শিশু অধিকার সুরক্ষা আয়োগের চেয়ারপার্সন এসেছিলেন। তারপর যেমন ছিলাম তেমনই আছি। আমরা বলছি আমাদের মাথার ওপর একটা চাল চাই। খাওয়াতে হবে না। আমরা ভিক্ষে করেই খাব। কিন্তু বাচ্চাগুলোকে মানুষ করতে চাই। কিন্তু আমাদের কোনও সাহায্যই করা হল না।"