জলপাইগুড়ি, 21 অগস্ট : উত্তরবঙ্গ (North Bengal) ও জঙ্গলমহলকে (Jangal Mahal) আলাদা রাজ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবির মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকতা দেখতে পাচ্ছেন না বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) ৷ আর এই দাবি নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) সাংসদ জন বারলার সরব হওয়ার বিষয়টিতেও কোনও ক্ষতি নেই বলেই মনে করেন তিনি ৷ শনিবার জন বারলাকে (John Barla) পাশে নিয়েই এই কথা বললেন মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ৷
রাজ্য জুড়ে ভারতীয় জনতা পার্টির (BJP) শহিদ সম্মান যাত্রা নামে এক কর্মসূচি চলছে ৷ সেই কর্মসূচিতে যোগ দিতে জলপাইগুড়িতে (Jalpaiguri) এসেছেন দিলীপ ঘোষ ৷ সেখানে জন বারলাকে সঙ্গে নিয়ে এক সাংবাদিক বৈঠক করেন ৷ ওই সাংবাদিক বৈঠকে উত্তরবঙ্গ ও জঙ্গলমহলকে আলাদা রাজ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া নিয়ে এই মন্তব্য করেন ৷ পাশাপাশি তিনি গোটা ঘটনার দায় চাপিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর ৷
আরও পড়ুন : Post Poll Violence : হাইকোর্টের রায়ের সঙ্গে বাংলার জনজীবনের সম্পর্ক নেই, ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে মত তৃণমূলের
তাঁর বক্তব্য, ‘‘উত্তরবঙ্গ, জঙ্গলমহল যদি আলাদা হতে চায় তার সমস্ত দায়দায়িত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) নিতে হবে ।’’ এর সঙ্গে তিনি যোগ করেছেন, ‘‘গোর্খাল্যান্ডের (Gorkhaland) দাবি অনেকদিন থেকেই উঠছে । দিদিমণি তো সমঝোতা করে সরকার চালাচ্ছে । তখন প্রশ্ন ওঠেনি । ওখানে জিটিএ-তে (GTA) গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে জিইয়ে রেখে দিদিমণি সই করে দিলেন । তখন প্রশ্ন ওঠেনি ৷ তখন ঠিক ছিল । যখন আমাদের সময় এসেছে । সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা তুলে ধরছি, তখন বিচ্ছিন্নতাবাদী হয়ে গেল ?’’
এই সূত্রেই উত্তরবঙ্গ ও জঙ্গলমহলকে আলাদা রাজ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিকে সাধারণ মানুষের দাবি হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন দিলীপ ৷ তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘কেন এখানকার মানে মানুষকে ভিন রাজ্যে যেতে হবে ? কেন এখানকার মানুষ স্বাধীনতার লাভ পাবে না ? কেন রোজগার পাবে না ? কেন তারা গুজরাত-সহ ভিন রাজ্যে যাবে ?’’
আরও পড়ুন : Ajanta-CPIM : শূন্য থেকে মহাশূন্যের পথে সিপিএম, অজন্তার পাশে দাঁড়িয়ে টুইট কুণালের
একই সঙ্গে তিনি এটাও স্পষ্ট করেছেন যে বাংলার এই দুই এলাকাকে আলাদা রাজ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি বিজেপির নয় ৷ বিজেপির সাংসদ হিসেবে সাধারণ মানুষের দাবি তুলে ধরেছেন জন বারলা ৷ দিলীপের কথায়, ‘‘জন বারলা যদি এখানকার মানুষের আওয়াজ তুলে থাকে, তাহলে ক্ষতি কী ? তারা যদি দাবি করে থাকে তাহলে অস্বাভাবিক কিছু নয় ।’’
পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন যে সাধারণ মানুষের দাবি তুলে ধরার জন্যই তো সাংসদ হয়েছেন জন বারলা ৷ বিজেপি জিতেছে ৷ জন বারলা, নিশীথ প্রামাণিক (Nisith Pramanik) জিতেছেন ৷ এখন তাঁদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটিয়ে সাধারণ মানুষকে আলাদা করতে পারবে না তৃণমূল কংগ্রেস ৷ কিন্তু বিজেপিকে উত্তরবঙ্গ ও জঙ্গলমহলের মানুষের এই দাবিকে সমর্থন করবে ? এই নিয়ে দিলীপের বক্তব্য, ‘‘পার্টির একটা স্ট্যান্ড আছে সেটা পার্টি পরে ভেবে দেখবে ।’’
আরও পড়ুন : Bengal BJP : পুজোর পরে রাজ্যজুড়ে তৃণমূল বিরোধী আন্দোলন, নীল নক্সা তৈরি করছে বিজেপি
দিলীপের এই মন্তব্যের পরই জল্পনা ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে ৷ প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি বিজেপি উত্তরবঙ্গ ও জঙ্গলমহলকে নিয়ে আলাদা রাজ্যের দাবিে সমর্থন করছে ? এখন বিষয়টি ঠারেঠারো বোঝালেও বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে ? কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তথা কেন্দ্রীয় সরকারের কি এতে মত রয়েছে ?