জলপাইগুড়ি, 3 এপ্রিল: জলপাইগুড়ির সরকারি কোরক হোমে বিচারাধীন আবাসিকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় রিপোর্ট পেশ করল সিবিআই । সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ির সার্কিট বেঞ্চে রিপোর্ট পেশ করেন তদন্তকারী আধিকারিকরা । সার্কিট বেঞ্চের নির্ধারিত তারিখেই এদিন খাম বন্ধ অবস্থায় তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট পেশ করা হয় সিবিআইয়ের তরফে । আগামী 5 তারিখ রিপোর্ট প্রকাশ হবে ।
জলপাইগুড়ি সরকারি কোরক হোমের আবাসিকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তের অঙ্গতি রয়েছে । তা আদালতের সামনে তুলে ধরে লাবুর পরিবারের আইনজীবীরা । কোরক হোমের বিচারাধীন আবাসিক মৃত লাবু ইসলামের বয়স ছিল 17 ৷ কিন্তু পুলিশের রিপোর্টে বয়স দেখানো হয়েছিল 34 । এমনকী তদন্ত নিয়েই অনেক প্রশ্ন ওঠে । ফলে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট কোরক হোমের মৃত আবাসিক লাবু ইসলামের কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তাঁর আইনজীবী সুমন শেহানবিশ ।
কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের অ্যাসিস্ট্যান্ট পাবলিক পসিকিউটার অদিতিশংকর চক্রবর্তী বলেন, "আজ লাবু ইসলামের মৃত্যুর তদন্তের ঘটনায় সিবিআই খামবন্ধ রিপোর্ট জমা করেছে । আগামী 5 তারিখ রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে । আমরা রিপোর্টের একটা কপি চেয়েছি ।" সিবিআইয়ের পক্ষের আইনজীবী তথা অ্যাসিস্ট্যান্ট সলিসিটার জেনারেল সুদীপ্ত মজুমদার বলেন, "আজ রিপোর্ট জমা পড়েছে । আদালত পরশু প্রকাশ করলে আমরা জানতে পারব প্রাথমিক রিপোর্টে কী উল্লখে রয়েছে ।" পাশাপাশি লাবু ইসলামের আইনজীবী সুমন শেহানবিশ জানান, তাঁরা এখনও রিপোর্ট হাতে পাননি । রিপোর্ট আগামী 5 তারিখ তাঁরা পাবেন ।
আরও পড়ুন: কোরক হোমকাণ্ডে পুনরায় ময়নাতদন্তে কবর থেকে দেহ তুলল সিবিআই
প্রসঙ্গত, সরকারি হোমে থাকাকালীন গত 15 ডিসেম্বর বিচারাধীন আবাসিকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ৷ গলায় ফাঁস লাগলো অবস্থায় লাবু ইসলাম নামে ওই কিশোরের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সেই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিটের সব্যসাচী ভট্টাচার্য ও রাই চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ । চলতি বছরেই 9 ফেব্রুয়ারি সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয় । নির্দেশের 24 ঘণ্টার মধ্যেই বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে তদন্তে নামে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ৷
কোতোয়ালি থানার তদন্তকারী অফিসার, হোমের আধিকারিক-সহ একাধিক জনের নামে এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করে সিবিআই । দিল্লিতে সিবিআইয়ের স্পেশাল ক্রাইম ব্রাঞ্চ জোন ওয়ানের তরফে এফআইআর দায়ের করা হয় । ভারতীয় দণ্ডবিধির 306 ধারা অর্থাৎ আত্মহত্যার প্ররোচনা, 195 ধারা অর্থাৎ ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল তথ্য পেশ ও 201 ধারা অর্থাৎ তথ্য প্রমাণ লোপাট ছাড়াও 2015 সালের জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্টের 75 নম্বর ধারায় অভিযোগ দায়ের করে তদন্তে নামে তদন্তকারী আধিকারিকরা । মৃত নাবালকের দেহ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্ত করে সিবিআই ।
আরও পড়ুন: সরকারি হোমে 'নাবালকের' অস্বাভাবিক মৃত্যু, সিবিআই তদন্তের নির্দেশ