জলপাইগুড়ি, 15 ফেব্রুয়ারি: কোরক হোমকাণ্ডের তদন্তে এবার জলপাইগুড়ির কোতোয়ালি থানার আইসিকে তলব করল সিবিআই । মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে প্রায় তিন ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাঁকে । জলপাইগুড়ি সরকারি কোরক হোমে বিচারাধীন আবাসিকের কিশোরের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে এদিন নাবালকের বাড়িতেও যান সিবিআই আধিকারিকরা (CBI interrogates IC after Family of Deceased in Korok Home)। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় কোতোয়ালি থানার পুলিশ কর্মী, হোমের আধিকারিক-সহ একাধিক জনের নামে এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই । সূত্রের খবর, কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে তদন্তে নামে সিবিআই ।
গত 15 ডিসেম্বর জলপাইগুড়ি জুভেনাইল কোরক হোমে লাবু ইসলাম নামে বিচারাধীন এক কিশোরের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় । গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় লাবুর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ । অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্তে অসঙ্গতি-সহ একাধিক গরমিল পাওয়া যায় ৷ এরপরেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের ডিভিশন বেঞ্চ । মঙ্গলবার কোচবিহার জেলার 1 নম্বর ব্লকের টাপুরহাট এলাকায় অবস্থিত মৃত কিশোর লাবু ইসলামের বাড়িতে গিয়ে তার মা সাহিদা বিবি এবং মাসতুতো দিদি শিখা রায়ের সঙ্গে কথা বলেন সিবিআই আধিকারিকরা । আড়াই ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ চলে । 2021 সালে 24 অগস্ট কী ঘটনা ঘটেছিল ? কেন লাবুকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল ? এই সমস্ত বিষয় নিয়েই সিবিআই আধিকারিকরা তাঁদের কাছ থেকে জানতে চান । যদিও সংবাদমাধ্যমের সামনে তদন্তকারীরা কোনও মন্তব্য করতে চাননি ।
আরও পড়ুন : সরকারি হোমে 'নাবালকের' অস্বাভাবিক মৃত্যু, সিবিআই তদন্তের নির্দেশ
তবে মৃত কিশোরের মা সাহিদা বিবি বলেন, "সিবিআই তদন্তকারীদের জানিয়েছি আমার ছেলেকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছিল । তারপর থেকেই ছেলে জলপাইগুড়ির কোরক হোমে ছিল । সেখানে তিনজন বাংলাদেশী ছেলের উপর অত্যাচার চালাত । এই কথা হোম কর্তৃপক্ষকে জানালেও তাতে কোনও লাভ হয়নি ।" মৃত কিশোরের বাড়ি থেকে আসার পর মঙ্গলবার বিকেলে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার আইসি অর্ঘ্য সরকারকে ডেকে পাঠান সিবিআই আধিকারিকরা । তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন তদন্তকারীরা ।
দিল্লিতে সিবিআইয়ের স্পেশাল ক্রাইম ব্রাঞ্চ জোন ওয়ানের তরফে এফআইআরে অভিযুক্তের তালিকায় রয়েছেন জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার একাধিক অফিসার, সরকারি হোমের আধিকারিক-সহ আরও কয়েকজন । ভারতীয় দণ্ডবিধির 306 ধারা অর্থাৎ আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া, 195 ধারা অর্থাৎ ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল তথ্য পেশ ও 201 ধারা অর্থাৎ তথ্য প্রমাণ লোপাট ছাড়াও 2015 সালের জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্টের 75 নম্বর ধারায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে বলে জানা গিয়েছে ।
আরও পড়ুন : কোরক হোম-কাণ্ডে পুলিশ ও হোম আধিকারিকদের বিরুদ্ধে এফআইআর সিবিআইয়ের