কোচবিহার, 9 এপ্রিল : কোরোনার জেরে কোচবিহারের সাগরদিঘিতে মদনমোহনের নৌকাবিহার বাতিল করেছে দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ড। ফলে, ওই দিঘির জল মদনমোহন বাড়িতে এনে প্রায়শ্চিত্ত করলেন কোচবিহারের কুলদেবতা মদনমোহন। রাজ আমলের রীতি মেনে মদন কামদেব পুজোর পরদিন প্রথমে পাঁঠার পচা নাড়িভূরির জল দিয়ে স্নান করে প্রায়শ্চিত্ত করেন মদনমোহন। এরপর সাগরদিঘির জলে নৌকাবিহার করেন তিনি। কিন্তু এবছর জমায়েত এড়াতে দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের তরফে আগেই সাগরদিঘিতে সেই উৎসব বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও, সেই দিঘির জল মন্দিরে এনে প্রায়শ্চিত্ত করানো হয়।
কোচবিহারের রাজাদের আরাধ্য দেবতা মদনমোহন। একবার মদনমোহন বন্ধুদের সঙ্গে মদন-কামদেব পুজো দেখতে গিয়ে সেখানে পুজোয় ব্যবহৃত ভাঙের বড়া সহ মাদক খেয়ে ফেলেন। নেশাগ্রস্ত হয়ে খাসির মাংস খান। এরপর নেশার ঘোর কাটতেই বুঝতে পারেন তিনি ভুল করেছেন। এরপর তার বন্ধুদের সাথে পাপ মোচনের বিষয়ে আলোচনা করেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঠিক করেন, যে মাংস তিনি খেয়েছেন সেই পাঁঠার ভূড়ির জল দিয়ে স্নান করে প্রায়শ্চিত্ত করবেন। সেইমতো মদন-কামদেব পুজোর পরদিন সাগরদিঘিতে যান। সেখানে পাঁঠার পচা নাড়িভূরির জল দিয়ে স্নান করানো হয় মদনমোহনকে। পরে তাঁকে ভালো জল দিয়ে স্নান করানোর পর সাগরদিঘির পূর্বদিকের ঘাট থেকে নৌকায় করে নামানো হয় এবং নৌকাবিহার হয়। শেষে মদনমোহনবাড়িতে ফিরে আসেন তিনি। কোচবিহারের রাজ আমল থেকেই এই প্রথা চালু রয়েছে। কিন্তু কেরোনার কারণে এবার সাগরদিঘিতে সেই উৎসব বাতিল করা হয়।
রাজ পুরোহিত হীরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, "বিধান মেনে সাগরদিঘির জল মন্দিরে এনেই সেই রীতি পালন করা হয়েছে।"