ফুলবাড়ি, 3 জুন: 3 জুন পালিত হয় বিশ্ব বাইসাইকেল দিবস হিসাবে । সাইকেল চালানোর উপকারিতা অল্পবিস্তর সবারই জানা । একটা সময়ে যাতায়াতের এক নির্ভরযোগ্য মাধ্যম ছিল এই সাইকেল । যত সময় গড়িয়েছে, প্রযুক্তির হাত ধরে উন্নত হয়েছে সাইকেলও । আর এই বিশ্ব সাইকেল দিবসে এক অনবদ্য শিল্পীর কারুকার্য তুলে ধরল ইটিভি ভারত। কাঠের শিল্পী সতীশ সরকার । বাড়ি শিলিগুড়ি সংলগ্ন ফুলবাড়ি 1 নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অম্বিকানগর এলাকায় । আর তিনিই কাঠ, বেত আর বাঁশ দিয়ে একটা আস্ত সাইকেল তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন সকলকে।
1986 সালে স্ত্রী, দুই মেয়েকে নিয়ে ভারতে আসেন সতীশ । ইন্দো-বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন অম্বিকানগরে আসলেও কাজ মেলেনি । এরপর স্থানীয় এক কাঠ মিস্ত্রীর হাত ধরে কাঠের কাজ শুরু করেন । ধীরে ধীরে কাঠের কারুকার্যই পেশা আর নেশা দুটোই হয়ে ওঠে সতীশ সরকারের । সব ঠিকই চলছিল । এরপর আসে করোনার প্রকোপ । চারিদিকে লকডাউন । সেই সময় ঘরবন্দি জীবন সাধারণ মানুষের । দোকানপাট, বাজারহাট, অফিস কাছারি সব বন্ধ ।
সতীশ সরকার বলেন, "কাঠের কাজ করি । ফলে দিনরাত কাঠ হাতুরি বাটালি নিয়েই সময় কাটে । ওই কাজের মাঝেই এই সমস্ত মডেল তৈরি করি । আর সাইকেলটি আমি খুব শখ করে তৈরি করেছি । যা দেখতে অনেকেই আমার বাড়িতে আসে এবং ছবি তুলে বেশ আনন্দ পায় ।"
আরও পড়ুন: প্রতিদিন কয়েক মিনিট সাইকেল চালালেই শরীর থাকবে সুস্থ, আজ থেকেই শুরু করুন
ঘরবন্দি সাধারণ মানুষের সেইসময় জীবন থমকে গিয়েছিল । সেই সময়ই নিজের জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের কথা মনে যায় সতীশের ৷ যখন তিনি সাইকেল নিয়ে ঘুরে বেরানোর পাশাপাশি কাজে সেই সাইকেল করে যাতায়াত করতেন । ঘরবন্দি জীবনে তখন ঘরে বসে শুরু করেন সেই কাঠের সাইকেল বানানোর কাজ । ধীরে ধীরে তৈরি করেন সাইকেল । চাকা থেকে, হ্যান্ডেল সবটাই কাঠের । সাইকেল তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে গামারি ও সেগুন কাঠ । সাইকেলের স্পোক তৈরি করেছেন বাঁশের অংশ দিয়ে । আর স্প্রিংগুলি বানিয়েছেন বেত দিয়ে । আর তাঁর সেই অভূতপূর্ব সৃষ্টি দেখতে এখন দূর দূর থেকে বহু মানুষ ভিড় জমায় সতীশের বাড়িতে। তাঁর তৈরি ওই সাইকেলটি দেখলে বোঝাই মুশকিল যে সেটা আসল নাকি নকল । শুধু সাইকেলই নয় । তিনি তৈরি করেছেন আরও নানা দেবদেবীর মূর্তি । গোটা বাড়িকে মোটামুটি মিউজিয়াম বানিয়ে ফেলেছেন তিনি ।
আরও পড়ুন: আজ বিশ্ব বাইসাইকেল দিবস ! জেনে নিন ইতিহাস ও তাৎপর্য