জলপাইগুড়ি, 4 ফেব্রুয়ারি: জলপাইগুড়ির চোখের ডাক্তার সুশান্ত রায়ের বিরুদ্ধে ইডি'র কাছে অভিযোগ । শনিবার একাধিক অভিযোগ নিয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দ্বারস্থ হয়েছেন গ্রিন জলপাইগুড়ি নামে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সম্পাদক অঙ্কুর দাস (Ankur Das files complain to ED against Dr Susanta Roy) ।
সুশান্ত রায়ের হিসাব বহির্ভূত সম্পত্তি, স্বাস্থ্য দফতরে লাগামহীন দুর্নীতি-সহ একাধিক বিষয়ে অভিযোগ এনেছেন অঙ্কুর । সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে শববাহী গাড়ি না-পেয়ে মৃতদেহ কাঁধে নেওয়া পরিবারকে শববাহী গাড়ি দিয়ে সাহায্য করেছিলেন তিনি । তারপরেই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সম্পাদক অঙ্কুরকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ । এই ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে তিনটি মামলা করেন অঙ্কুর দাস ।
তিনি জানান, ইডি'র কাছে 13 পাতার অভিযোগপত্রে ডাঃ সুশান্ত রায়ের স্বাস্থ্য দফতরে অবৈধ কার্যকলাপ ও অর্থনৈতিক দুর্নীতির অভিযোগ তথ্য দিয়ে তুলে ধরেছেন তিনি । তাঁর অভিযোগ, স্ত্রী নীলা রায়ের নামে থাকা গাড়ি নীলবাতি লাগিয়ে স্বাস্থ্য দফতরে দিয়েছেন । ছেলেকে থ্যালাসেমিয়া বিভাগের প্রধান পদে বসিয়েছেন । ছেলে থ্যালাসেমিয়া বিভাগ থেকে বেতন নেওয়ার পাশাপাশি উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজের এমডি পদেও কাজ চালিয়ে গিয়েছেন । সরকারি হাসপাতাল থেকে বেতন ছাড়াও পড়া চলাকালীন স্কলারশিপের টাকাও নিয়েছেন । দু'জায়গা থেকেই টাকা তুলেছেন সুশান্ত রায়ের ছেলে সৌত্রিক রায় । তৎকালীন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জগন্নাথ সরকার তদন্ত শুরু করায়, তাঁকে বদলি হতে হয়েছে । যা সুশান্ত রায়ের প্রভাবেই সম্ভব হয়েছে বলে অভিযোগ অঙ্কুর দাসের । কারণ তিনি ওএসডি পদেও রয়েছেন ।
অঙ্কুর দাস বলেন, "উত্তরবঙ্গ ও জলপাইগুড়ি স্বাস্থ্য ব্যবস্থা খুবই খারাপ । তা ভালো করার জন্যই আমি ও আমার সংস্থা ইডির দ্বারস্থ হয়েছি । আমরা 13 পাতার অভিযোগ জমা করেছি ইডির দফতরে । উত্তরবঙ্গের এক রায়বাহাদুরের কারণে উত্তরবঙ্গের চিকিৎসা ব্যবস্থা নষ্ট হচ্ছে । আমরা যাবতীয় তথ্য প্রমাণ-সহ আমরা ইডির দ্বারস্থ হয়েছি । গত 5 জানুয়ারি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে মৃতদেহ পরিবহনের জন্য শববাহী গাড়ি না-পেয়ে কাঁধে করে মৃতদেহ নিয়ে যান পরিবার । আমি তাঁদের শববাহী গাড়ি দিয়ে সাহায্য করি । কিন্তু আমাকেই এক মামলায় গ্রেফতার করা হয় । প্রকৃত দোষীদের আড়াল করা হয়েছে । আমি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছি ।"
আরও পড়ুন: প্রভাবশালীর নির্দেশেই গ্রেফতার, জলপাইগুড়ি-কাণ্ডে জামিনে মুক্ত হয়ে জানালেন অঙ্কুর দাস
অঙ্কুর দাসের দাবি, পশ্চিমবঙ্গে এটাই বিরলত ঘটনা । অবসর গ্রহণ করার পর ফের সেখানে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন । তিনি বলেন, "আমিও একজন চোখের রোগী । আমি সুশান্ত রায়কে কোনওদিন হাসপাতালে পাইনি । 2020 সালে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে আরটিআই করেছিলাম, ডাঃ রায় ক'টা ওটি করেছেন সে বিষয়ে জানতে । কিন্তু 2020 সাল থেকে 2023 সাল হয়ে গেল, এখনও কেউ ডাক্তার রায়ের বিষয়ে কোনও তথ্য দিতে রাজি নয় । তথ্য জানার অধিকার আইনকেও বুড়ো আঙুল দেখাচ্ছে জলপাইগুড়ি স্বাস্থ্য দফতর । অন্যদিকে, ডাক্তার সুশান্ত রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি ।