জলপাইগুড়ি, 1 জুন: কয়েকদিনের ব্যবধানে ফের হাতির হানায় মৃত্যু হল আরও এক কৃষকের ৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়াল জলপাইগুড়ির নাথুয়ার চর এলাকায়। মৃত কৃষকের নাম সাগর দাস (25)। কৃষকের মৃতদেহ জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পর পর দুই কৃষকের মৃত্যুতে এলাকার কৃষকরা ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বনফতরের বিরুদ্ধে। তাই রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে পথ অবরোধে নেমেছেন স্থানীয়রা।
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় বাসিন্দা জগন্নাথ দাসের বড় ছেলে সাগর দাস ও ছোট ছেলে সোহেল দাস বাড়ির পাশেই নাথুয়ার চরে বাদাম ক্ষেতে যান। সে সময় আচমকাই পিছন থেকে একটি দাঁতাল হাতি তাড়া করে ধরে ফেলে সাগর দাসকে। ঘটনাস্থলেই সাগরের মৃত্যু হয়। কোনওক্রমে পালিয়ে প্রাণ বাঁচেন সোহেল দাস। অন্যদিকে, শুক্রবার মধ্যরাতে নাথুয়ার চরের পাশের চর ঠেঙ্গিপাড়ায় উত্তর 24 পরগনার এক মহিলা কৃষক সন্ধ্যাকে দাঁতাল হাতি পিষে মারে। পরপর দুই কৃষকের প্রাণ যাওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয়রা।
জানা গিয়েছে, এলাকায় প্রায় 100টি হাতির একটি দল দাপিয়ে বেড়াচ্ছে গত তিন মাস ধরে। মূলত তিস্তা নদীর চরে ভুট্টা, বাদাম, চালকুমড়ো-সহ বিভিন্ন ফসল খাওয়ার লোভেই বৈকুন্ঠপুরের জঙ্গল থেকে লোকালয়ে বেড়িয়ে আসছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বনদফতর হাতিগুলিকে ফেরৎ পাঠানোর কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না ৷ যার কারণে পর পর কৃষক-সহ সাধারণ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে ৷ এদিন কৃষকের মৃত্যুর ঘটনার পরেই প্রতিবাদে স্থানীয় বাসিন্দারা রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে পথ অবরোধ শুরু করেন।
আরও পড়ুন: সারেঙ্গায় হাতির দলের হানা; ভাঙল বাড়ি, আহত এক
বনদফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হাতিগুলিকে বারংবার এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হলেও তারা ফের এলাকায় চলে আসছে। এলাকায় বনকর্মীদের মোতায়েন করা হয়েছে। সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে এলাকায় মাইকিংও শুরু হচ্ছে। উল্লেখ্য, উত্তর 24 পরগনা জেলার হিঙ্গলগঞ্জ থানা এলাকার বাসিন্দা ছিলেন 30 বছরের সন্ধ্যা। তাঁর মৃত্যুর দু'দিন আগেই সুন্দরবন থেকে স্বামীর সঙ্গে, বাচ্চাদের নিয়ে জলপাইগুড়ি পাতকাটা গ্রামপঞ্চায়েতের ঠেঙ্গিপাড়ায় এসেছিলেন সন্ধ্যা দেবী। বাদাম তোলার কাজ করতে শুরু করেছিলেন।