কামারহাটি, 11 ফেব্রুয়ারি: বহুতল হেলে পড়ার পর অবৈধভাবে তৈরি বাড়ি ও বহুতলগুলির বিরুদ্ধে এবার কড়া পদক্ষেপ কামারহাটি পুরসভার। বেআইনিভাবে গড়ে ওঠা 57টি বহুতল একসঙ্গে ভেঙে ফেলার নজিরবিহীন নির্দেশ দেওয়া হল পুরসভার তরফে। পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হওয়ার পর এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। শীঘ্রই তার কাজ শুরু হবে!
পুরসভা সূত্রে খবর, 1 থেকে 7 নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে এরকম 57টি বহুতল রয়েছে। যেগুলির বৈধ কোনও অনুমতি নেই। বহুতলগুলির নকসাও প্রদান করা হয়নি পুরসভাকে। সেই সমস্ত বহুতলগুলি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে পুর কর্তৃপক্ষ।
অবৈধভাবে বাড়ি তৈরি নিয়ে যখন রাজ্যের একাধিক পুরসভা ও পুরনিগম প্রশ্নের মুখে পড়েছে, তখন কার্যত এক নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত নিল কামারহাটি পুরসভা। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, এই 57টি বহুতলের মধ্যে 17টি বহুতলের মালিকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। ইতিমধ্যে 7 নম্বর ওয়ার্ডের ধোবিয়া বাগান এলাকায় একটি বহুতল ভাঙার কাজও শুরু করে দিয়েছে পুরসভা।
- এই বিষয়ে কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে এই সব বহুতলের মালিকদের নোটিশ দেওয়া হচ্ছিল পুরসভার তরফে। পরপর তিনবার নোটিস দিয়ে ডাকা হয়েছিল তাদের। বারবার বলা হলেও ওই বহুতলের মালিকরা হাজিরা দেননি।
- পুরসভার চেয়ারম্যানের দাবি, ওই বহুতলগুলি সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে নির্মাণ করা হয়েছে এবং তার কোনও নকশা দেওয়া হয়নি পুরসভাকে। কোনও অনুমতিও নেওয়া হয়নি। আপাতত বহুতলগুলি বিপজ্জনক অবস্থায় থাকায়, সেগুলি ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তবে, 57টি বহুতল ভাঙার নির্দেশ দেওয়া হলেও, সেই তালিকায় কিন্তু নেই আড়িয়াদহের ত্রাস জয়ন্ত সিংয়ের বাড়ি, যা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে কামারহাটি পুর এলাকায়। এই নিয়ে পাল্টা যুক্তি খাঁড়া করেছেন কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহা। তিনি বলেন, "নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু, জমির মালিকের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। জমির মালিকের খোঁজ মিললেই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
এদিকে, কোন ওয়ার্ডে, কতগুলি বহুতল ভাঙা পড়বে, তার তালিকাও প্রকাশ করেছে কামারহাটি পুরসভা। 1 নম্বর ওয়ার্ডে 26টি, 2 নম্বর ওয়ার্ডে 1টি, 3 নম্বর ওয়ার্ডে 7টি, 4 নম্বর ওয়ার্ডে 2টি, 5 নম্বর ওয়ার্ডে 3টি, 6 নম্বর ওয়ার্ডে 7টি ও 7 নম্বর ওয়ার্ডে 11টি বাড়ি ভেঙে ফেলার স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে ওই তালিকায়।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি কামারহাটি পুরসভার 7 ও 6 নম্বর ওয়ার্ডের ধোবিয়া বাগান এবং ফাড়ি বাগান এলাকায় দুটি নির্মীয়মান বহুতল হেলে পড়ে।হাইড্রোলিকের সাহায্যে উঁচু করতে গিয়ে ঘটে এই বিপত্তি। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসে পুর কর্তৃপক্ষ। এরপরই চেয়ারম্যানের নির্দেশে পুর এলাকায় শুরু হয় বেআইনি বহুতল চিহ্নিতকরণ! তাতে 57টি বহুতলকে বেআইনি হিসেবে চিহ্নিত করা হয় পুরসভার তরফে।