ETV Bharat / state

Power Cut in Jalpaiguri: জলপাইগুড়িতে দিনে 250 এসি বিক্রি, না জানিয়েই লোড বাড়াচ্ছেন গ্রাহকরা; সমীক্ষার ভাবনা বিদ্যুৎ সংস্থার - জলপাইগুড়ির খবর

জলপাইগুড়ির মতো জায়গাতেও এ বছর গরম এতটাই বেড়েছে যে, দিনে 250টি এসি বিক্রি হতে দেখা গিয়েছে ৷ না জানিয়েই গ্রাহকরা লোড বাড়িয়ে দিচ্ছেন বলে দাবি বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার ৷ এ জন্য তারা সমীক্ষার ভাবনাচিন্তা করছে বলে জানিয়েছে ৷

Power Cut in Jalpaiguri
জলপাইগুড়িতে দিনে 250 এসি বিক্রি
author img

By

Published : Jun 13, 2023, 6:30 PM IST

জলপাইগুড়িতে দিনে 250 এসি বিক্রি

জলপাইগুড়ি, 13 জুন: এ বারের গরম এমন পর্যায়ে গিয়েছে যে, ভরা গ্রীষ্মে দোকানে দেখা গিয়েছে এসি-র আকাল ৷ এসি-র বিক্রি এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে, ক্রেতারা টাকা দেওয়ার প্রায় এক মাস পর বাড়িতে এসি পেয়েছেন ৷ ইনস্টল হয়েছে তারও পরে ৷ শুধু দক্ষিণবঙ্গ নয়, উত্তরবঙ্গেও দেখা গিয়েছে একই ছবি ৷ পাহাড় ঘেরা জলপাইগুড়িতেও পারদ এতটাই চড়েছে যে, হুড়মুড় করে বেড়েছে এসি বিক্রি ৷ জলপাইগুড়ি শহরে দৈনিক গড়ে প্রায় 250টি করে এসি বিক্রি হয়েছে ৷ আর বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানিকে না জানিয়েই বিদ্যুতের লোড বেড়ে চলায় বিকল হচ্ছে ট্রান্সফরমার ৷ হচ্ছে লোডশেডিং ৷ এই পরিস্থিতিতে তাই কার বাড়িতে কত লোড পড়ছে, তা জানতে সমীক্ষা চালানোর কথা ভাবছে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা ৷

প্রতিদিন জলপাইগুড়ি শহরে মুড়িমুড়কির মতো বিক্রি হচ্ছে বাতানুকূল যন্ত্র এবং ঘর ঠান্ডা রাখার অন্যান্য মেশিন। প্রতিদিন গড়ে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যবহার হত, তার কয়েক গুণ বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হচ্ছে, ফলে বাড়ছে ওয়ার্কলোড । বড় ধরনের বিপর্যয় এড়াতে প্রতিদিন লোড কাট করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির তরফে ।

এই ধরনের তীব্র গরমের সঙ্গে পরিচিত নন উত্তরবঙ্গের মানুষ । পাহাড়ে সবে বৃষ্টি শুরু হলেও গত কয়েকদিনে গড়ে 37-39 ডিগ্রি সেলসিয়াসে ঘোরাফেরা করেছে তাপমাত্রার পারদ ৷ অচেনা এই গরম সহ্য করতে না পেরে শহরবাসীর একাংশ বাতানুকূল যন্ত্র কিনতে বাধ্য হয়েছেন । রোজ বাড়িতে বাড়িতে বসছে এসি ৷ কিন্তু তা ঘূণাক্ষরেও জানতে পারছে না বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি । ফলে হঠাৎ করে লোড বেড়ে যাচ্ছে । একটি ফিডার লাইনে বছরের এই সময়টায় 120 অ্যাম্পিয়ার বিদ্যুৎ পরিবাহিত হলেও এখন তা হচ্ছে 151 অ্যাম্পিয়ার । সেই কারণেই ট্রান্সফরমারগুলি অতিরিক্ত লোডের কারণে বিকল হয়ে যাচ্ছে ।

জলপাইগুড়ি শহরের বৈদ্যুতিন সরঞ্জামের শোরুমের ম্যানেজার শুভঙ্কর দাস বলেন, "অন্যান্য বছরের তুলনায় এসির চাহিদা অনেক বেশি । আমরা গ্রাহকদের সার্ভিস দেওয়ার চেষ্টা করছি । প্রতিদিন প্রচুর বাতানুকূল যন্ত্র বিক্রি হচ্ছে । তবে একটা সমস্যা দেখা দিয়েছে । সেটা হল বাতানুকূল যন্ত্র লাগানোর জন্য পর্যাপ্ত লোক নেই ৷ আমরা গ্রাহকদের কাছ থেকে সময় চেয়ে নিয়েই বাতানুকূল যন্ত্র বিক্রি করছি ।"

এসি-র ক্রেতা অসিত দত্ত জানান, "আমরা গরমে কষ্ট পাচ্ছি, তাই বাধ্য হয়েই এসি নিতে হচ্ছে । এতদিন দরকার হয়নি । কিন্তু জলপাইগুড়িতে এমন গরম আগে ছিল না । গরমে আর পারছি না ।" রেফ্রিজারেটরের ক্রেতা হরীশচন্দ্র রায় বলেন, "ফ্রিজের খুব দরকার ছিল । কিন্তু কিনতে পারছিলাম না । এ বার আর সহ্য করা যাচ্ছিল না ৷ তাই ফ্রিজ কিনলাম ।"

আরও পড়ুন: উত্তর থেকে দক্ষিণ তাপপ্রবাহের সতর্কতা, ভ্যাপসা গরম চলবে পাঁচ দিন

বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির জলপাইগুড়ির আঞ্চলিক ম্যানেজার সঞ্জয় মণ্ডল বলেন, লোডশেডিং হচ্ছে এটা বলা ঠিক নয় । সিস্টেমটাকে ঠিকভাবে চালানোর জন্য সাময়িক লোড কাট করতে হচ্ছে । সাময়িক একটা সমস্যা হওয়ায় এটা করতে হচ্ছে বলে জানান তিনি । তাঁর কথায়, "আমাদের সার্কিটে যে লোড সাধারণত থাকে, সেই লোড হঠাৎ করে বেড়ে গিয়েছে । আমাদের সিস্টেম তা নিতে পারছে না । আমরা যদি লোড আগে থেকে জানতে পারতাম, তাহলে সেই অনুযায়ী আমরা সিস্টেম বানাতাম । কিন্তু হঠাৎ করে লোড সার্কিটে এসেছে । ফলে আমাদের কাট করতেই হচ্ছে । লোকেরা আমাদের না জানিয়ে যেভাবে লোড বাড়িয়ে যাচ্ছে, তাতে আমরা সমস্যায় পড়ে গিয়েছি ।"

তিনি আরও বলেন, আজকাল মানুষ এসি লাগাচ্ছেন । বিদ্যুৎ বেশি ব্যবহৃত হয় এমন গ্যাজেট লাগাচ্ছেন ৷ ফলে বিদ্যুৎ ব্যবহার বেশি হচ্ছে । তার জেরে যাতে বড় কোনও বিপর্যয় না হয়, সে জন্য লোড কাট করা হচ্ছে । গ্রাহকরা বিদ্যুৎ কোম্পানিকে জানাচ্ছেন না বলেও সমস্যা আরও বেশি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি ৷

তাঁর কথায়, "যাঁরা ইলেকট্রিক কানেকশন নিচ্ছেন, তাঁরা যে লোড নিয়ে কানেকশন নিয়েছেন সেই লোডের থেকে বেশি লোড ব্যবহার করলে সমস্যা হবেই । এর ফলে আমাদের সমস্যা নয়, বাড়ির সার্ভিস নষ্ট হতে পারে । কেবল বিস্ফোরণ হতে পারে । আমরা জানতে পারলে আমরা সার্ভিস কেবল বা মিটারটাও পালটে দিতে পারি । আমরা সার্ভে চালু করেছি । লাইন দেখে দেখে সার্ভে করছি । একটা ফিডারের পরিবর্তে দুটো ফিডার দিয়ে লাইন দিচ্ছি । স্থায়ীভাবে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা আমরা করছি ।"

জলপাইগুড়িতে দিনে 250 এসি বিক্রি

জলপাইগুড়ি, 13 জুন: এ বারের গরম এমন পর্যায়ে গিয়েছে যে, ভরা গ্রীষ্মে দোকানে দেখা গিয়েছে এসি-র আকাল ৷ এসি-র বিক্রি এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে, ক্রেতারা টাকা দেওয়ার প্রায় এক মাস পর বাড়িতে এসি পেয়েছেন ৷ ইনস্টল হয়েছে তারও পরে ৷ শুধু দক্ষিণবঙ্গ নয়, উত্তরবঙ্গেও দেখা গিয়েছে একই ছবি ৷ পাহাড় ঘেরা জলপাইগুড়িতেও পারদ এতটাই চড়েছে যে, হুড়মুড় করে বেড়েছে এসি বিক্রি ৷ জলপাইগুড়ি শহরে দৈনিক গড়ে প্রায় 250টি করে এসি বিক্রি হয়েছে ৷ আর বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানিকে না জানিয়েই বিদ্যুতের লোড বেড়ে চলায় বিকল হচ্ছে ট্রান্সফরমার ৷ হচ্ছে লোডশেডিং ৷ এই পরিস্থিতিতে তাই কার বাড়িতে কত লোড পড়ছে, তা জানতে সমীক্ষা চালানোর কথা ভাবছে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা ৷

প্রতিদিন জলপাইগুড়ি শহরে মুড়িমুড়কির মতো বিক্রি হচ্ছে বাতানুকূল যন্ত্র এবং ঘর ঠান্ডা রাখার অন্যান্য মেশিন। প্রতিদিন গড়ে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যবহার হত, তার কয়েক গুণ বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হচ্ছে, ফলে বাড়ছে ওয়ার্কলোড । বড় ধরনের বিপর্যয় এড়াতে প্রতিদিন লোড কাট করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির তরফে ।

এই ধরনের তীব্র গরমের সঙ্গে পরিচিত নন উত্তরবঙ্গের মানুষ । পাহাড়ে সবে বৃষ্টি শুরু হলেও গত কয়েকদিনে গড়ে 37-39 ডিগ্রি সেলসিয়াসে ঘোরাফেরা করেছে তাপমাত্রার পারদ ৷ অচেনা এই গরম সহ্য করতে না পেরে শহরবাসীর একাংশ বাতানুকূল যন্ত্র কিনতে বাধ্য হয়েছেন । রোজ বাড়িতে বাড়িতে বসছে এসি ৷ কিন্তু তা ঘূণাক্ষরেও জানতে পারছে না বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি । ফলে হঠাৎ করে লোড বেড়ে যাচ্ছে । একটি ফিডার লাইনে বছরের এই সময়টায় 120 অ্যাম্পিয়ার বিদ্যুৎ পরিবাহিত হলেও এখন তা হচ্ছে 151 অ্যাম্পিয়ার । সেই কারণেই ট্রান্সফরমারগুলি অতিরিক্ত লোডের কারণে বিকল হয়ে যাচ্ছে ।

জলপাইগুড়ি শহরের বৈদ্যুতিন সরঞ্জামের শোরুমের ম্যানেজার শুভঙ্কর দাস বলেন, "অন্যান্য বছরের তুলনায় এসির চাহিদা অনেক বেশি । আমরা গ্রাহকদের সার্ভিস দেওয়ার চেষ্টা করছি । প্রতিদিন প্রচুর বাতানুকূল যন্ত্র বিক্রি হচ্ছে । তবে একটা সমস্যা দেখা দিয়েছে । সেটা হল বাতানুকূল যন্ত্র লাগানোর জন্য পর্যাপ্ত লোক নেই ৷ আমরা গ্রাহকদের কাছ থেকে সময় চেয়ে নিয়েই বাতানুকূল যন্ত্র বিক্রি করছি ।"

এসি-র ক্রেতা অসিত দত্ত জানান, "আমরা গরমে কষ্ট পাচ্ছি, তাই বাধ্য হয়েই এসি নিতে হচ্ছে । এতদিন দরকার হয়নি । কিন্তু জলপাইগুড়িতে এমন গরম আগে ছিল না । গরমে আর পারছি না ।" রেফ্রিজারেটরের ক্রেতা হরীশচন্দ্র রায় বলেন, "ফ্রিজের খুব দরকার ছিল । কিন্তু কিনতে পারছিলাম না । এ বার আর সহ্য করা যাচ্ছিল না ৷ তাই ফ্রিজ কিনলাম ।"

আরও পড়ুন: উত্তর থেকে দক্ষিণ তাপপ্রবাহের সতর্কতা, ভ্যাপসা গরম চলবে পাঁচ দিন

বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির জলপাইগুড়ির আঞ্চলিক ম্যানেজার সঞ্জয় মণ্ডল বলেন, লোডশেডিং হচ্ছে এটা বলা ঠিক নয় । সিস্টেমটাকে ঠিকভাবে চালানোর জন্য সাময়িক লোড কাট করতে হচ্ছে । সাময়িক একটা সমস্যা হওয়ায় এটা করতে হচ্ছে বলে জানান তিনি । তাঁর কথায়, "আমাদের সার্কিটে যে লোড সাধারণত থাকে, সেই লোড হঠাৎ করে বেড়ে গিয়েছে । আমাদের সিস্টেম তা নিতে পারছে না । আমরা যদি লোড আগে থেকে জানতে পারতাম, তাহলে সেই অনুযায়ী আমরা সিস্টেম বানাতাম । কিন্তু হঠাৎ করে লোড সার্কিটে এসেছে । ফলে আমাদের কাট করতেই হচ্ছে । লোকেরা আমাদের না জানিয়ে যেভাবে লোড বাড়িয়ে যাচ্ছে, তাতে আমরা সমস্যায় পড়ে গিয়েছি ।"

তিনি আরও বলেন, আজকাল মানুষ এসি লাগাচ্ছেন । বিদ্যুৎ বেশি ব্যবহৃত হয় এমন গ্যাজেট লাগাচ্ছেন ৷ ফলে বিদ্যুৎ ব্যবহার বেশি হচ্ছে । তার জেরে যাতে বড় কোনও বিপর্যয় না হয়, সে জন্য লোড কাট করা হচ্ছে । গ্রাহকরা বিদ্যুৎ কোম্পানিকে জানাচ্ছেন না বলেও সমস্যা আরও বেশি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি ৷

তাঁর কথায়, "যাঁরা ইলেকট্রিক কানেকশন নিচ্ছেন, তাঁরা যে লোড নিয়ে কানেকশন নিয়েছেন সেই লোডের থেকে বেশি লোড ব্যবহার করলে সমস্যা হবেই । এর ফলে আমাদের সমস্যা নয়, বাড়ির সার্ভিস নষ্ট হতে পারে । কেবল বিস্ফোরণ হতে পারে । আমরা জানতে পারলে আমরা সার্ভিস কেবল বা মিটারটাও পালটে দিতে পারি । আমরা সার্ভে চালু করেছি । লাইন দেখে দেখে সার্ভে করছি । একটা ফিডারের পরিবর্তে দুটো ফিডার দিয়ে লাইন দিচ্ছি । স্থায়ীভাবে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা আমরা করছি ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.