জলপাইগুড়ি, 18 অগস্ট: পাঁচ রকমের আমিষ ভোগ দেওয়া হয়ে আসছে 514 বছর ধরে ৷ আজও জলপাইগুড়ির বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়ির মনসাপুজোয় দেওয়া হয় বোয়াল, ইলিশ ও চিতল মাছ-সহ পাঁচ রকমের আমিষ ভোগ । 514 বছরের উত্তরবঙ্গের অন্যতম প্রাচীন এই পুজো মিলন মেলায় পরিণত হয় । মনসা পুজোকে কেন্দ্র করে মেলায় উপচে পড়ল ভিড় ।
জানা গিয়েছে, 1515 খ্রীষ্টাব্দে রাজা শিষ্য সিংহ এই পুজোর প্রচলন করেন । রাজ পরিবারের এই পুজোয় দু'টি প্রধান মূর্তি থাকে । যা ছোট মনসা ও বড় মনসা নামে পরিচিত । জলপাইগুড়ির বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়ির মনসা মূর্তি উত্তরবঙ্গের আর কোথাও দেখতে পাওয়া যায় না । মনসামঙ্গল কাব্যের রীতি মেনে এই চালচিত্র তৈরি বলে দাবি গবেষকদের । আজও এই পুজোয় বলি প্রথা চালু রয়েছে বলে জানান রাজপুরোহিত ।
এই বিষয়ে প্রধান পুরোহিত শিবু ঘোষাল বলেন, "উত্তরবঙ্গের সবথেকে প্রাচীন মনসা পুজো এটি । এখানে মা মনসার সঙ্গে নেতি ও পদ্মা এই দুই প্রধান দেবীরও পুজো হয় । এছাড়াও একই সঙ্গে পুজো পান জরৎকারু মুনি, বেহুলা, লখিন্দর, কুলির নাগ, বাসুকী নাগ, তক্ষক নাগ-সহ অষ্টনাগের পুজো হয় । এই মনসা পুজোকে কেন্দ্র করে মনসামঙ্গল গান হয় । বড়ো মেলা বসে ৷ অসম ও বিহার থেকেও দোকানদাররা এসে থাকেন । রাজবাড়ির পুজোকে কেন্দ্র করে সবাই মুখিয়ে থাকে । আগামী 21 অগস্ট পর্যন্ত মেলা চলবে । রাজ আমল থেকে যেমন নিয়ম রয়েছে সেই নিয়ম মেনেই হচ্ছে পুজো ।"
এই মনসাপুজোর মেলাকে ঘিরে আজও লোক সংস্কৃতির আসর বসে মণ্ডপে । মনসা পুজোকে ঘিরে উত্তরবঙ্গের লোকগান বিষহরার আয়োজন করা হয় । এই মেলায় জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, জেলার পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের সঙ্গে বাসিন্দারাও ভিড় জমান ।
আরও পড়ুন : মনসা পুজো উপলক্ষে হাঁস কেনার হিড়িক পুরুলিয়ায়