উলুবেড়িয়া, 4 জুলাই : হাসপাতাল থেকে উধাও চিকিৎসাধীন এক রোগী। জয়ন্ত বাগ নামে 28 বছর বয়সী ওই রোগী শুক্রবার রাতে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ হন ৷ শনিবার তাঁর ছুটি পাওয়ার কথা ছিল ৷ তাঁর পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতালের কর্তব্যরত নার্সরা জোর করে বের করে দিয়েছেন জয়ন্তকে ৷
জয়ন্ত বাগের বাড়ি উলুবেড়িয়া পৌরসভার 17 নম্বর ওয়ার্ডের বেলে সিজবেরিয়া গ্রামে । তাঁর দিদি অপর্ণা শর্মা বলেন, "1 জুলাই, বৃহস্পতিবার দুপুর 2টো নাগাদ উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ৷ পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত লাগে আর জিভ কেটে গিয়েছিল । শুক্রবারই ডাক্তার মাথার স্ক্যান করে জানায় রোগী ভাল আছে ৷ কোনও সমস্যা নেই ৷ শনিবার বিকেল 4টেয় ছুটি দেওয়ার কথা ৷" তিনি জানান, শুক্রবার সারাদিনই তাঁর ভাইয়ের কাছে তাঁর মা, বোন ছিলেন ৷ রোগীর শারীরিক অবস্থা ভাল থাকায় রাতে হাসপাতাল থেকে সবাই চলে আসেন ৷ তাঁর দাবি, রাত সাড়ে দশটার সময় দুটো ইনজেকশন দেওয়া হয় ৷ সেটা ঘুমাবার ইনজেকশন কি না, তা সঠিক জানেন না তাঁরা ৷ এরপর জয়ন্ত ভুলভাল বকতে শুরু করেন ৷ ওয়ার্ডে থাকা বাকি সদস্যরা জয়ন্তর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে ৷ তখন কর্তব্যরত নার্সরা নিরাপত্তারক্ষীদের ডেকে জয়ন্তকে হাসপাতাল থেকে বের করে দিতে বলেন ৷ নিরাপত্তারক্ষীরা জয়ন্তকে হাসপাতাল থেকে বের করে দেন ৷
আরও পড়ুন : পাগল সেজেও হল না শেষরক্ষা, ধরা পড়ল জোড়া খুনে অভিযুক্ত
এরপর আতঙ্কিত জয়ন্ত তাঁর কাছে থাকা ফোন থেকে বাড়িতে ফোন করে জানান যে তাঁকে হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে ৷ তিনি কিছু বুঝতে পারছেন না, কোথায় যাবেন ৷ তিনি আরও জানান যে তাঁকে ঘিরে রয়েছে 10-15 টা কুকুর ৷ এই কথা বলার পর জয়ন্ত তাঁর দিদিকে বলেন, "আমি ঝাঁপ দিচ্ছি ৷" দিদি অপর্ণা শর্মা বলেন, "কুকুরগুলোর ঘেউ ঘেউ করে চিৎকার করার আওয়াজ পাচ্ছি ৷ তারপর ফোনটা সুইচ অফ হয়ে যায় ৷ আর আমার ভাইয়ের কোনও খোঁজখবর পাইনি ৷" তিনি জানান যে, তাঁদের সই ছাড়া রাত 11.30 নাগাদ রোগীকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ৷ এর পর বাড়িতে যোগাযোগ করা হলে জয়ন্তর মা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করেন যে, তাঁকে বেঁধে রাখা হোক, পরিবারের সদস্য়রা যাচ্ছেন ৷ আধ ঘণ্টার ভিতরে জয়ন্তর মা ও পাড়ার বেশ কিছু লোকজন হাসপাতালে পৌঁছান ৷ জয়ন্তর খোঁজ করলে, হাসপাতাল থেকে জানানো হয় যে রোগী এক ঘণ্টা আগে বেরিয়ে গিয়েছে ৷
জয়ন্তর দিদি জানান যে, ভাইয়ের নিখোঁজ হওয়া নিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ৷ কিন্তু তাঁরা জয়ন্তর বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ ডেকে তাঁদের থামাতে চাইছে ৷ আসল বিষয়টি চাপা দিতে চাইছে হাসপাতাল ৷ জয়ন্তকে না পেয়ে হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ দেখায় পরিজনরা ৷ অপর্ণা শর্মা হুঁশিয়ারি দেন যে ভাইকে না পেলে হাসপাতাল গুঁড়িয়ে দিয়ে, আগুন ধরিয়ে দেওয়া হবে ৷
হাসপাতালে বিক্ষোভ সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিল উলুবেড়িয়া থানার পুলিশ । গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় হাসপাতালে ।