কলকাতা, 19 অগস্ট: সাগর-সহ উপকূলের বিস্তীর্ণ এলাকার বাঁধের অবস্থা ভালো নয়, স্বভাবতই বঙ্গোপসাগরে ঘনীভূত গভীর নিম্নচাপের (Depression Over Bay of Bengal) কারণে উৎকণ্ঠার প্রহর গুনছে নবান্ন (Nabanna is worried due to deep depression over Bay of Bengal) ৷ সারাবছর তেমন বৃষ্টি হয়নি। কিন্তু শেষবেলায় একের পর এক নিম্নচাপ চিন্তা বাড়াচ্ছে নবান্নের। জেলাগুলিকে এবার সেভাবে বন্যার ভ্রুকুটি নিয়ে ভাবতে হয়নি। কারণ, এতদিন পর্যন্ত নবান্নের চিন্তার কারণ ছিল পর্যাপ্ত পরিমাণে বৃষ্টিপাত না হওয়ার কারণে কৃষিকাজের ক্ষয়ক্ষতি। কিন্তু যেভাবে নিম্নচাপের চোখ রাঙানির ফলে সাগর ও তদসংলগ্ন দক্ষিণ 24 পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের জীবনযাত্রা বারংবার সংকটের সামনে পড়েছে, তাতে কিছুটা হলেও চিন্তিত নবান্ন (Nabanna)।
সরকারি একাধিক প্রকল্পের ধাক্কা, অন্যদিকে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে টাকা না-দেওয়ার কারণে এখন বড় বাঁধের বিপর্যয় হলে এর জন্য অর্থের সংস্থান করায় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করছে নবান্ন। অন্তত রাজ্য প্রশাসনের সদর কার্যালয় সূত্রে তেমনটাই খবর ৷ নবান্নের পাশাপাশি, সুন্দরবন উন্নয়ন দফতর ও সেচ দফতরের কর্তাদের মারফত যে খবর পাওয়া যাচ্ছে তাতে দামোদর, মহানন্দা, দ্বারকেশ্বর, মুড়িগঙ্গা, সাগর-এই নদী বাঁধগুলির অনেকাংশেই দ্রুত মেরামত প্রয়োজন রয়েছে। ক'দিন আগের পূর্ণিমার ভরা কোটাল নদীবাঁধের বেশ ক্ষতি করেছে। এমতাবস্থায় নতুন করে নিম্নচাপ এবং একে কেন্দ্র করে যদি জলস্ফীতি হয়, তাহলে ভুগতে হতে পারে সাগর-লাগোয়া উপকূলবর্তী এলাকার মানুষদের।
নবান্নের তরফে যতটুকু খবর পাওয়া যাচ্ছে তাতে এই মুহূর্তেই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য প্রায় 100 কোটি টাকার প্রয়োজন। আর সামগ্রিকভাবে বাঁধ মেরামতির জন্য প্রয়োজন আড়াইশো কোটি টাকার বেশি অর্থ। কিন্তু সমস্যা হল বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিলে আলাদা করে বাদ মেরামতের জন্য অর্থ জোগাড় করা সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে সরকারের জন্য।
আরও পড়ুন: 30 সেকেন্ডের টর্নেডোয় লণ্ডভণ্ড সন্দেশখালি, ভাঙল পাঁচশোরও বেশি বাড়ি
এ বিষয়ে উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে 100 দিনের কাজ-সহ একাধিক প্রকল্পের অর্থ আটকে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। গরিব মানুষকে পরিষেবা দিতে সরকার নিজের তহবিল থেকে অর্থ বরাদ্দ করছে। এছাড়া করোনা পরবর্তী সময় রাজস্ব সংগ্রহ অতীতের তুলনায় কমেছে। কাজেই চাপ বাড়ছে রাজকোষের উপর। এই অবস্থায় কিভাবে এই অর্থসংস্থান করা যায় তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। কোনওভাবেই সরকার চায় না রাজ্যের মানুষ আর্থিক সংকট থাকলেও বিপদে পড়ুক। তাই এই অর্থ সংস্থানের জন্য সবরকম চেষ্টা চালাচ্ছে রাজ্য। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির একটা সম্ভাবনা কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।