ETV Bharat / state

Liluah Water Accumulation Problem: ভর গ্রীষ্মেও লিলুয়ায় জমা জলে জেরবার এলাকাবাসী

বর্ষাকাল নয়, কিন্তু লিলুয়ার 66 নম্বর ওয়ার্ডের রামলাল ঘোষ লেন এলাকায় এখনও জমে রয়েছে জল (Liluah facing stagnant water problem)। কার্যত পচা জলে জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে এলাকার সাধারণ মানুষের।

Liluah Water accumulation problem
জলে জেরবার এলাকাবাসী
author img

By

Published : Apr 7, 2022, 9:05 PM IST

হাওড়া, 7 এপ্রিল: রাজ্যে সমস্ত পৌরসভা ও নগর নিগমের নির্বাচন হয়ে গেলেও এখনও আইনি জটিলতায় হয়নি হাওড়া পৌরনিগম ও বালি পৌরসভার নির্বাচন। ফলে নাগরিক পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শহরবাসী (Liluah facing stagnant water problem)। বর্ষা ঘুরে ফের রাজ্যে বর্ষা চলে আসার সময় বেশি দূর নয়, তাও লিলুয়ার 66 নম্বর ওয়ার্ডের রামলাল ঘোষ লেন এলাকায় এখনও জমে রয়েছে জল। আর সেই নোংরা পচা জলে জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে এলাকার সাধারণ মানুষের।

পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে খটখটে রোদ্দুরের মধ্যেও লিলুয়ার 66 নম্বর ওয়ার্ডের রামলাল ঘোষ লেন, দেবী পাড়া ও কুমোর পাড়াতে এখন জল থইথই। এলাকার বিস্তীর্ণ অঞ্চল এখনও ডুবে রয়েছে ঘন কালো পচা জলে। এই পচা জল পেরিয়েই যাতায়াত করছেন এলাকার মানুষ। এই পরিস্থিতি বিগত তিন চার বছর ধরে চলছে বলেই অভিযোগ এলাকাবাসীদের।

স্থানীয়দের অভিযোগ কার্যত স্বীকার করে হাওড়া পৌর প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্য় রিয়াজ আহমেদ জানান, এটা সত্যি ওখানের বাসিন্দারা খুবই খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে বসবাস করছেন। তিনি সম্প্রতি বালি পৌরসভার মুখ্য প্রশাসকের অনুরোধে ওই এলাকা পরিদর্শন করেছিলেন। তিনিও এই শুকনো আবহাওয়াতে এভাবে জল জমা দেখে আশ্চর্য হয়েছিলেন বলেই দাবি করেন। পাশাপাশি চার বছর নির্বাচন না হওয়ার কারণে পরিকাঠামোগত সুবিধা থেকে বালি পৌরসভা বঞ্চিত হওয়ার জন্যই এই দুর্ভোগ বলে অভিযোগ। তিনি আরও জানান, ইতিমধ্যে কেএমডিএ ওই এলাকার বড় নিকাশি নালা ঠিক করার কাজ শুরু করবে। এছাড়াও সেচ দফতর থেকে পঞ্চায়েত এলাকাতে এই জমা জল বের করার যে নিকাশি ব্যবস্থা রয়েছে তা পরিষ্কার করার কাজ ইতিমধ্যে শুরু করেছে। তিনি আশা করেন আগামী 7 দিনের পর থেকে এই পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

হাওড়া পৌর নিগম ও বালি পৌরসভার নির্বাচন বিশ বাঁও জলে, লিলুয়ায় জমা জলে জেরবার এলাকাবাসী

আরও পড়ুন : Nurse Agitation : প্রতিশ্রুতি পূরণ করেননি মন্ত্রী চন্দ্রিমা, আন্দোলনে নামল নার্সেস ইউনিটি

যদিও স্থানীয় বাসিন্দা অশ্বিন ঠক্কর অভিযোগ করে জানান, দীর্ঘ আড়াই-তিন বছর ধরে এই নোংরা জলেই বসবাস করছেন তাঁরা। প্রাক্তন পৌর প্রতিনিধি-সহ সকলকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। জমা জল এতটাই দূষিত হয়ে উঠেছে যে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। রাত্রে মশার উপদ্রপে ঘুমানো যায় না। এই জমা জলের কারণে তাঁর দোকানে কেনাকাটা করতে খরিদ্দার আসছে না। এই 72 বছর বয়সে কীভাবে বেঁচে থাকবেন সেটাই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে তাঁর কাছে।

একই অভিযোগ ওই এলাকার বাসিন্দা মহাদেবী চৌধুরীর। তিনি জানান, 35 বছর ধরে এখানে আছি। আগে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও বিগত 5 বছরের বেশি চিত্রটা একই। ভোট এলে নেতারা আসেন, প্রতিশ্রুতি দেন জমা জল ঠিক করে দেওয়ার। কিন্তু ভোট পাওয়া হয়ে গেলেই তাঁদের আর কোনও পাত্তা পাওয়া যায় না। এভাবেই জমা জলের মধ্যে থাকতে হচ্ছে তাঁদের। ভাড়া বাড়িতে থাকলে অন্যত্র চলে যেতেন কিন্তু নিজের বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র যাওয়ার জায়গা নেই ৷

আরও পড়ুন : HMC Property Tax : চলতি অর্থবর্ষে সম্পত্তি কর ও মিউটেশনে রোজগার বেড়েছে, দাবি হাওড়া পৌরনিগমের

এলাকার বর্ষীয়ান বাসিন্দা লক্ষ্মী দাসের অভিযোগ, যত বেলা বাড়তে থাকে ততই জল বেশি করে জমতে শুরু করে। এভাবে থাকলে দুর্গন্ধ ও মশার উপদ্রবে টিঁকে থাকা দায় হয়ে উঠেছে। তাদের সমস্যার কথা শুনতে কেউ আসে না।

যদিও জল নিকাশির বিষয়ে বিজেপির রাজ্য নেতা উমেশ রাই বলেন, "8 ও 66 নম্বর ওয়ার্ডের একাংশ নিয়ে তৈরি হয়েছে বেলগাছিয়ার ভাগার। সেই ভাগারের আবর্জনাকে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে উপযোগী করে তোলার কোনও পরিকল্পনা নেই নগর নিগমের। একবার ভাগারের একাংশ ধ্বসে গিয়ে এই 66 নম্বরের নিকাশি ব্যবস্থা তছনছ করে দিয়েছিল। প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। তবে জলে জমা হাওড়ার ছবির কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না। পৌর নিগমের পরিষেবা না দিতে পারার ব্যর্থতা বারেবারে প্রমাণ হচ্ছে ।"

গত বর্ষার পর থেকে লিলুয়া-সহ উত্তর হাওড়ার বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন ছিল দীর্ঘদিন ধরে। এলাকাবাসীদের ক্ষোভের আঁচ পেয়ে জমা জল বের করার দাবিতে রাস্তায় বসে পৌর নিগমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান উত্তর হাওড়ার বিধায়ক নিজে। পরবর্তীতে অন্যান্য জায়গা থেকে জমা জল নামলেও এখনও জল থইথই অবস্থা 66 নম্বর ওয়ার্ডে। এর থেকে কবে মুক্তি পাবে তাঁরা তার দিকেই তাকিয়ে আছে বাসিন্দারা।

হাওড়া, 7 এপ্রিল: রাজ্যে সমস্ত পৌরসভা ও নগর নিগমের নির্বাচন হয়ে গেলেও এখনও আইনি জটিলতায় হয়নি হাওড়া পৌরনিগম ও বালি পৌরসভার নির্বাচন। ফলে নাগরিক পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শহরবাসী (Liluah facing stagnant water problem)। বর্ষা ঘুরে ফের রাজ্যে বর্ষা চলে আসার সময় বেশি দূর নয়, তাও লিলুয়ার 66 নম্বর ওয়ার্ডের রামলাল ঘোষ লেন এলাকায় এখনও জমে রয়েছে জল। আর সেই নোংরা পচা জলে জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে এলাকার সাধারণ মানুষের।

পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে খটখটে রোদ্দুরের মধ্যেও লিলুয়ার 66 নম্বর ওয়ার্ডের রামলাল ঘোষ লেন, দেবী পাড়া ও কুমোর পাড়াতে এখন জল থইথই। এলাকার বিস্তীর্ণ অঞ্চল এখনও ডুবে রয়েছে ঘন কালো পচা জলে। এই পচা জল পেরিয়েই যাতায়াত করছেন এলাকার মানুষ। এই পরিস্থিতি বিগত তিন চার বছর ধরে চলছে বলেই অভিযোগ এলাকাবাসীদের।

স্থানীয়দের অভিযোগ কার্যত স্বীকার করে হাওড়া পৌর প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্য় রিয়াজ আহমেদ জানান, এটা সত্যি ওখানের বাসিন্দারা খুবই খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে বসবাস করছেন। তিনি সম্প্রতি বালি পৌরসভার মুখ্য প্রশাসকের অনুরোধে ওই এলাকা পরিদর্শন করেছিলেন। তিনিও এই শুকনো আবহাওয়াতে এভাবে জল জমা দেখে আশ্চর্য হয়েছিলেন বলেই দাবি করেন। পাশাপাশি চার বছর নির্বাচন না হওয়ার কারণে পরিকাঠামোগত সুবিধা থেকে বালি পৌরসভা বঞ্চিত হওয়ার জন্যই এই দুর্ভোগ বলে অভিযোগ। তিনি আরও জানান, ইতিমধ্যে কেএমডিএ ওই এলাকার বড় নিকাশি নালা ঠিক করার কাজ শুরু করবে। এছাড়াও সেচ দফতর থেকে পঞ্চায়েত এলাকাতে এই জমা জল বের করার যে নিকাশি ব্যবস্থা রয়েছে তা পরিষ্কার করার কাজ ইতিমধ্যে শুরু করেছে। তিনি আশা করেন আগামী 7 দিনের পর থেকে এই পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

হাওড়া পৌর নিগম ও বালি পৌরসভার নির্বাচন বিশ বাঁও জলে, লিলুয়ায় জমা জলে জেরবার এলাকাবাসী

আরও পড়ুন : Nurse Agitation : প্রতিশ্রুতি পূরণ করেননি মন্ত্রী চন্দ্রিমা, আন্দোলনে নামল নার্সেস ইউনিটি

যদিও স্থানীয় বাসিন্দা অশ্বিন ঠক্কর অভিযোগ করে জানান, দীর্ঘ আড়াই-তিন বছর ধরে এই নোংরা জলেই বসবাস করছেন তাঁরা। প্রাক্তন পৌর প্রতিনিধি-সহ সকলকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। জমা জল এতটাই দূষিত হয়ে উঠেছে যে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। রাত্রে মশার উপদ্রপে ঘুমানো যায় না। এই জমা জলের কারণে তাঁর দোকানে কেনাকাটা করতে খরিদ্দার আসছে না। এই 72 বছর বয়সে কীভাবে বেঁচে থাকবেন সেটাই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে তাঁর কাছে।

একই অভিযোগ ওই এলাকার বাসিন্দা মহাদেবী চৌধুরীর। তিনি জানান, 35 বছর ধরে এখানে আছি। আগে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও বিগত 5 বছরের বেশি চিত্রটা একই। ভোট এলে নেতারা আসেন, প্রতিশ্রুতি দেন জমা জল ঠিক করে দেওয়ার। কিন্তু ভোট পাওয়া হয়ে গেলেই তাঁদের আর কোনও পাত্তা পাওয়া যায় না। এভাবেই জমা জলের মধ্যে থাকতে হচ্ছে তাঁদের। ভাড়া বাড়িতে থাকলে অন্যত্র চলে যেতেন কিন্তু নিজের বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র যাওয়ার জায়গা নেই ৷

আরও পড়ুন : HMC Property Tax : চলতি অর্থবর্ষে সম্পত্তি কর ও মিউটেশনে রোজগার বেড়েছে, দাবি হাওড়া পৌরনিগমের

এলাকার বর্ষীয়ান বাসিন্দা লক্ষ্মী দাসের অভিযোগ, যত বেলা বাড়তে থাকে ততই জল বেশি করে জমতে শুরু করে। এভাবে থাকলে দুর্গন্ধ ও মশার উপদ্রবে টিঁকে থাকা দায় হয়ে উঠেছে। তাদের সমস্যার কথা শুনতে কেউ আসে না।

যদিও জল নিকাশির বিষয়ে বিজেপির রাজ্য নেতা উমেশ রাই বলেন, "8 ও 66 নম্বর ওয়ার্ডের একাংশ নিয়ে তৈরি হয়েছে বেলগাছিয়ার ভাগার। সেই ভাগারের আবর্জনাকে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে উপযোগী করে তোলার কোনও পরিকল্পনা নেই নগর নিগমের। একবার ভাগারের একাংশ ধ্বসে গিয়ে এই 66 নম্বরের নিকাশি ব্যবস্থা তছনছ করে দিয়েছিল। প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। তবে জলে জমা হাওড়ার ছবির কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না। পৌর নিগমের পরিষেবা না দিতে পারার ব্যর্থতা বারেবারে প্রমাণ হচ্ছে ।"

গত বর্ষার পর থেকে লিলুয়া-সহ উত্তর হাওড়ার বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন ছিল দীর্ঘদিন ধরে। এলাকাবাসীদের ক্ষোভের আঁচ পেয়ে জমা জল বের করার দাবিতে রাস্তায় বসে পৌর নিগমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান উত্তর হাওড়ার বিধায়ক নিজে। পরবর্তীতে অন্যান্য জায়গা থেকে জমা জল নামলেও এখনও জল থইথই অবস্থা 66 নম্বর ওয়ার্ডে। এর থেকে কবে মুক্তি পাবে তাঁরা তার দিকেই তাকিয়ে আছে বাসিন্দারা।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.