হাওড়া, 23 জুন : সম্প্রতি ঝড়-বৃষ্টিতে হাওড়া পৌরনিগমের গেটের পাশের একটি ত্রিফলা বাতিস্তম্ভে সর্ট সার্কিট হয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান জেলা শাসকের দফতরে কর্মরত এক মহিলা । এরপরই বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট সমালোচনার মুখে পড়তে হয় পৌরনিগমকে । বর্ষার বৃষ্টিতে আর যাতে এই ত্রিফলা বাতিস্তম্ভ থেকে এরকম দুর্ঘটনা না ঘটে তার জন্য এইবার ‘ইনসুলেশন জ্যাকেট’ ও ‘সার্কিট ব্রেকার’ লাগানোর পরিকল্পনা নিয়েছে হাওড়া পৌরনিগম (Howrah Municipal Corporation)।
গত শনিবার পৌরনিগমের ত্রিফলা বাতিস্তম্ভ রক্ষণাবেক্ষণকারী 13টি সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করার পরে প্রাথমিক ভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে ৷ পৌরনিগম সূত্রে খবর, পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকটি নির্দিষ্ট এলাকায় এই ‘ইনসুলেশন জ্যাকেট’ ও ‘সার্কিট ব্রেকার’ লাগানো হবে । পাশাপাশি বর্ষায় শহরের সমস্ত ত্রিফলা আলো বন্ধ রাখা হবে । পৌরনিগম মাধ্যমে বরাতপ্রাপ্ত যে সমস্ত ঠিকাদার সংস্থা হাওড়া শহরের ত্রিফলা আলোগুলির দেখাশোনা করেন, তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে করেছেন পৌরকর্তারা । সেই বৈঠকে নেতৃত্ব দেন হাওড়া পৌরনিগমের চেয়ারম্যান (প্রশাসক পর্ষদ) সুজয় চক্রবর্তী । পরে সুজয়বাবু জানান, বৈঠকে ঠিক হয়েছে, বর্ষার সময়ে ত্রিফলা বাতিতে শর্ট সার্কিটের জেরে আবার যাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে, তার জন্য বাতিস্তম্ভগুলিকে উপর থেকে নীচ পর্যন্ত ইনসুলেশন জ্যাকেটে মুড়ে দেওয়া হবে । এর ফলে বাতিস্তম্ভে কেউ হাত দিয়ে ফেললেও সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না । সেই সঙ্গে বাতিস্তম্ভগুলিতে সার্কিট ব্রেকার লাগানোর পরিকল্পনাও করা হয়েছে । যাতে ঝড়বৃষ্টির সময়ে গাছের পাতা বা ডালের মতো কিছু বাতিস্তম্ভে এসে পড়লেই সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় । এর ফলে শর্ট সার্কিট হওয়ার আশঙ্কা কমবে ।
আরও পড়ুন : চলতি অর্থবর্ষে সম্পত্তি কর ও মিউটেশনে রোজগার বেড়েছে, দাবি হাওড়া পৌরনিগমের
সুজয়বাবুর দাবি, ত্রিফলা বাতিস্তম্ভ ঘিরে এমন পরিকল্পনা রাজ্যে এটাই প্রথম । বর্ষা পুরোদমে নামার আগেই এই কাজ শুরু করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি । অপরদিকে গোটা বিষয় নিয়ে রাজ্য বিজেপি সম্পাদক উমেশ রাইয়ের পালটা বক্তব্য, "গোটা বিষয়টি সাধারণ মানুষের চোখে ধুলো দেওয়ার জন্য করা হচ্ছে । নিগম এলাকাতে 70% বেশি ত্রিফলা বাতিস্তম্ভ খারাপ হয়ে রয়েছে । এর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য লোক নেই নিগমের কাছে । তাই লোক দেখানোর জন্য কয়েকটি বিশেষ বিশেষ জায়গায় এই জ্যাকেট পড়ানো হচ্ছে ।" প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে হাওড়া পৌরনিগমের সামনেই বৃষ্টির জমা জলে হাঁটতে গিয়ে ত্রিফলা বাতিস্তম্ভ ছুঁয়ে ফেলায় এক মহিলা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গিয়েছিলেন । সেই ঘটনার পরেই নড়েচড়ে বসে পুর প্রশাসন । ত্রিফলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাকে শো-কজ় করা হয় ।