হাওড়া, 29 সেপ্টেম্বর: কেন্দ্রের আদিবাসী বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে এবার পথে নামল রাজ্যের 40টি আদিবাসী সম্প্রদায় ৷ আজ রানি রাসমণি সরণিতে আদিবাসীদের সমাবেশের জেরে স্তব্ধ হয়ে গেল কলকাতা ও হাওড়া ৷ আদিবাসীদের এই মিছিলের জেরে হাওড়া ব্রিজে যানচলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় ৷ আর তার জেরে নাজেহাল হতে হল নিত্যযাত্রীদের ৷ অফিসের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে রাস্তায় নাজেহাল নাগরিকরা ৷ আর তার প্রভাব দেখা গেল হাওড়া ফেরিঘাটে ৷ লোকের ভিড় সামলে ফেরি পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে হিমশিম খেতে হল কর্মীদের ৷
সর্বভারতীয় আদিবাসী কো-অর্ডিনেশন কমিটির সহকারী সম্পাদক রামলাল টুডু জানালেন, তাঁদের আজকের এই আন্দোলন ও সমাবেশের প্রধান কারণ কেন্দ্রের ইউনিভার্সল সিভিল কোড ৷ সেটি আদিবাসীদের স্বার্থ বিরোধী বলে তাঁর অভিযোগ ৷ কেন্দ্রের এই ইউসিসি নীতি যাতে লাগু করা হয়, সেই দাবিতে আজকের এই কর্মসূচি ৷ অন্যদিকে, আদিবাসী নয় এমন গোষ্ঠীগুলিও, আদিবাসীদের গোষ্ঠীভুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ ৷ তার বিরুদ্ধেও এই আন্দোলন বলে জানালেন এই আদিবাসী নেতা ৷
মূলত, কুড়মি ও মাহাতোদের বিরুদ্ধেই 40টি আদিবাসী সম্প্রদায়ের আন্দোলন ৷ এই দুই গোষ্ঠী আদিবাসী না হয়েও জবরদস্তি তফসিলি জনজাতির তকমা ও সুবিধা পেতে চাইছে বলে অভিযোগ 'ইউনাইটেড ফোরাম অফ অল আদিবাসী অর্গানাইজেশসনে'র নেতৃত্বের ৷ এদিন হাওড়া স্টেশন থেকে মিছিল করে ধর্মতলায় রানি রাসমণি সরনির সমাবেশে যোগ দিতে যায় আদিবাসীরা ৷ এর জেরে হাওড়া ব্রিজের উপর ব্যাপক যানজট তৈরি হয় ৷ আদিবাসীদের এই কর্মসূচি ঘিরে পুলিশি কোনও ব্যবস্থাই রাস্তাঘাটে চোখে পড়েনি বলে অভিযোগ নিত্য যাত্রীদের ৷
আরও পড়ুন: কুড়মি আন্দোলনের জেরে তীব্র যানজট কলকাতায়, বিপাকে নিত্যযাত্রী থেকে পড়ুয়ারা
আর তার ফল ভূগতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে ৷ তীব্র যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাওড়া সেতু, বড়বাজার, স্ট্র্যান্ড রোড, ধর্মতলা যাওয়ার রাস্তায় গাড়ি লম্বা লাইন লেগে যায় ৷ হাওড়া ব্রিজের উপর ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন থাকলেও, তাঁদের খুব একটা সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায়নি বলেই ক্ষোভ নিত্য যাত্রীদের ৷ হাওড়া ব্রিজ থেকে স্ট্র্যান্ড রোডমুখী রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় বলে অভিযোগ ৷ বাধ্য হয়ে হেটে হাওড়া ব্রিজ টপকে বিকল্প বাহনের সন্ধান করতে হয় অফিস যাত্রীদের ৷ এর জেরে হাওড়া ফেরিঘাটে ব্যাপক চাপ পড়ে ৷
মিছিলের কারণে, শুক্রবার সকালে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ থেকেই রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। রাস্তার উপর চাপ কমাতে রাজবল্লভ পাড়ার মোড় থেকে শ্যামবাজারের দিকে গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। এই মিছিলের জেরে সারা দিনই এই ভোগান্তি চলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বহু যাত্রী । হাওড়া স্টেশনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেও নির্ধারিত সময়ে পৌঁছতে না পারায় ট্রেন ধরতে না পেরে অনেক যাত্রীই ক্ষুব্ধ হয়েছেন।