হাওড়া, 27 জুন: "ভোট আসছে ভোট, পাড়ায় পাড়ায় দেখবে এস ভোট ভিখারির জোট। কখনও যে কয়না কথা, তারও আজ কি মাথাব্যথা ? দিনের মধ্যে আসছে বাড়ি, বলছে দেবেন তো ভাই ভোট। আকাশচুম্বী প্রতিশ্রুতি, সাগর সমান আশা । ভদ্রলোকে কি মোলায়েম কী সুন্দর ভাষা, এই ভাবেই দেশকে নিয়ে চলছে তামাশা।" ভোটের সময়ে নানান ছড়া, উক্তি ও ব্যঙ্গাত্মক সংলাপ সঙ্গে নিয়ে সাধারণ মানুষ অর্থাৎ আমজনতাকে ভোটের মর্ম সম্বন্ধে সচেতন করতে বেরোন প্রায় সত্তর ছুঁইছুঁই গোপাল আদক । প্রতি বছর যে কোনও ভোটের আগে ভোটদাতাদের সচেতন করে তোলাই তাঁর কাজ।
যৌবন থেকে শুরু করা এই প্রয়াস আজ বৃদ্ধবস্থাতেও উদ্যম এতটুকু কমেনি আটষট্টির গোপাল আদকের। সকাল হলেই নিজের তাগিদেই একটি টোটো করে বিভিন্ন স্লোগান, সংলাপ টাঙিয়ে মাইক হাতে গোপালবাবু বেরিয়ে পড়েন। তাঁর প্রচার গাড়িতে কোথাও লেখা 'মন্ত্রী যায় মন্ত্রী আসে, চোখের জলে গরীব ভাসে', 'ভোটে সরকার বদলায়, সমাজব্যবস্থা বদলায় না', এই ধরনের ব্যঙ্গাত্মক ও বাস্তব সত্য কথাগুলো। হাওড়ার পাঁচলা ব্লকের দেউলটি এলাকার বহলারডাঙ্গা আশ্রম এলাকার মানুষ একনামে চেনেন গোপালবাবুকে।
তিনি কোনওদিন রাজনীতিতে প্রবেশ না-করে, ভোটে না-দাঁড়িয়েও তাঁর নীতি ও আদর্শকে জনসাধারণের মধ্যে ভোটকে রাজনীতির খামতি ও বাস্তব পরিস্থিতি সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল করে চলেছেন। তাঁর প্রচারের উদ্দেশ্য নিয়ে গোপাল আদক বলেন, "আমরা সকলে ঈশ্বরের সন্তান অর্থাৎ সকলে সমান। সব কিছুর উপরে আমাদের সমান অধিকার রয়েছে। তাহলে এই সমাজে এক শ্রেণির মানুষ দুধে-ভাতে থাকবে, অট্টালিকাতে বসবাস করবে আর বাকি মানুষ ঝুপড়িতে অসহায়-অবস্থায় বসবাস করবে, দুঃখ-কষ্টে থাকবে এটা কেন হবে? কেন তাঁদের দিকে কেউ তাকাচ্ছে না ৷"
তিনি আরও বলেন, "বর্তমানে যে ভোটের ব্যবস্থা চালু রয়েছে এটা সাধারণ মানুষকে ধাপ্পা দেওয়া ছাড়া আর কিছু না।" তিনি এই ব্যবস্থাকে ব্যঙ্গ করে বলেন, "মন্ত্রী যায়, মন্ত্রী আসে, চোখের জলে গরিব ভাসে/ ভোটে সরকার বদলায়, জনগণের অবস্থা বদলায় না ।" তাঁর দাবি, এই ভোট দিয়ে কিছু হবে না । প্রকৃত ভোট হবে সেই নেতার মাধ্যমে যিনি পিতার মতো পুত্রদের স্বার্থে নিজের সর্বস্ব ত্যাগ করতে দ্বিধা করবেন না। তবেই উন্নয়ন সম্ভব ৷"
আরও পড়ুন: এলাকার মানুষ বামপন্থী, অদ্ভুত অভিযোগে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত মধ্যমগ্রামের কয়েকটি পরিবার