কলকাতা, 20 ডিসেম্বর : ক্ষতিপূরণের টাকা নিতে চান না অভিযোগকারী। তিনি চান বিচার । তাই, চিকিৎসায় অবহেলার এক ঘটনায় ক্ষতিপূরণের এক লাখ টাকা একটি অনাথ আশ্রমকে দান করবে রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশন। হাওড়ার এক বেসরকারি নার্সিংহোমে চিকিৎসায় অবহেলার এই ঘটনায় এক প্রসূতির গর্ভস্থ সন্তানের মৃত্যু হয়েছে ।
রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছে, হাওড়ার আমতায় একটি নার্সিংহোম চালান এক চিকিৎসক। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর ওই চিকিৎসকের কাছেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতেন হাওড়ার বাসিন্দা এক গৃহবধূ । ওই চিকিৎসক বলেছিলেন, সব ঠিক আছে, রোগী ঠিক আছেন, গর্ভস্থ সন্তান-ও ঠিক আছে। যে তারিখে ওই নার্সিংহোমে ভরতি হওয়ার কথা এই অন্তঃসত্ত্বার, সেই তারিখে সেখানে গেলে নার্স দেখে বলেন, তাঁর গর্ভস্থ সন্তানের পালস বিট ঠিক আছে। তবে, ওই দিন দুপুরে অপারেশন থিয়েটারে দেখা যায় এই অন্তঃসত্ত্বার গর্ভস্থ সন্তানের মুভমেন্ট হচ্ছে না । ইউএসজি করে দেখা হয়, তাঁর গর্ভস্থ সন্তানের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন : বাদ দেওয়ার 27 বছর পরও রয়েছে গলব্লাডার, হাসপাতালকে 50 হাজার জরিমানা
রোগীর পরিজনরা জানিয়েছেন, ওই চিকিৎসক কিছু করেননি। অন্তঃসত্ত্বার নরমাল ডেলিভারি করান ওই নার্সিংহোমের এক কর্মী। ওই সময় অন্তঃসত্ত্বার রক্তক্ষরণ শুরু হয় । তাঁকে রক্ত দেওয়া হয় । সৌভাগ্যবশত সুস্থ হয়ে ওই নার্সিংহোম থেকে তিনি বাড়িতেও ফিরেছেন । ওই চিকিৎসকের কোনও খামতি থাকলে তার জন্য ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিকেল কাউন্সিলে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে কমিশনের তরফে । পাশাপাশি কমিশন আরও জানায়, এই চিকিৎসক যেহেতু নার্সিংহোমের মালিক এবং নরমাল ডেলিভারি ওই নার্সিংহোমে একজন কর্মীকে দিয়ে করানো হয়েছে যার মেডিকেল ডিগ্রি নেই, ডেলিভারির সময় ব্লিডিং হয়েছে, এর ফলে এই প্রসূতির মৃত্যু-ও হতে পারত। এর জন্য এই মামলায় অন্তর্বর্তীকালীন ক্ষতিপূরণ হিসেবে ওই নার্সিংহোমকে এক লাখ টাকা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।
প্রসূতির স্বামী এই মামলার অভিযোগকারী । তিনি জানিয়েছেন, তাঁর এই ক্ষতিপূরণের টাকার দরকার নেই, তিনি বিচার চান। অভিযোগকারী যেহেতু ক্ষতিপূরণের টাকা নিতে চান না । তাই জন্য হাওড়ার একটি অনাথ আশ্রমকে ক্ষতিপূরণের এই এক লাখ টাকা দেওয়ার জন্য ওই নার্সিংহোমকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।