হাওড়া, 28 সেপ্টেম্বর : উত্তরবঙ্গের পর এবার হাওড়া জেলার গ্রামাঞ্চলে শিশু জ্বরের আতঙ্ক ছড়াল । হাওড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ক'দিন ধরে হাওড়া জেলা গ্রামীণ আমতা হাসপাতালে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে 25 জন শিশু ভর্তি হয়েছে । ভর্তি থাকা শিশুদের মায়েরা জানাচ্ছেন 7-8 দিন আগে তাদের শিশুদের জ্বর হওয়ায় হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন তাঁরা । ওষুধ দিলে জ্বর সাময়িকভাবে কমছে ৷ পরে আবার জ্বর আসছে । বেশ কিছুদিন ধরে এরকম চলছে ।
হাসপাতালে ভর্তি শিশুর মা কোহিনুর বেগম জানালেন, বিগত 3 দিন ধরে তার বাচ্চার জ্বর ও সর্দি হয়েছে । এখন জ্বর কমলেও সর্দিতে কষ্ট পাচ্ছে শিশুটি । হাসপাতাল তরফে তার বাচ্চার মল, মূত্র ও রক্তের পরীক্ষা করতে দেওয়া হয়েছে । 3 দিন পর্যবেক্ষণে রাখার পরে তার বাচ্চাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি । তিনি বলেন, "অনেক বাচ্চাই এখানে ভর্তি রয়েছে । অনেকের জ্বর বেশি ৷ ঠিক কী কারণে এই জ্বর আসছে, তা এখনও হাসপাতাল থেকে তাঁকে জানানো হয়নি ।"
আরও পড়ুন : Child Fever : উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ফের জ্বরে তিন শিশুর মৃত্যু
ওই ওয়ার্ডে ভর্তি আরেক শিশুর মা নিবেদিত দাস জানান, তার বাচ্চাও গত 3 দিন ধরে জ্বর, সর্দিতে ভুগছে । আর বাচ্চাটির রক্তে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছিল । যদিও বর্তমানে তার বাচ্চার আর জ্বর নেই । তিনিও হাসপাতালের কাছ থেকে জ্বরের কারণ জানতে পারেননি ৷
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে উত্তরবঙ্গে অজানা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বহু শিশুর মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে একের পর এক আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে । জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতাল, শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল সর্বত্রই এই জ্বরের আক্রান্ত শিশুদের খবর পাওয়া গিয়েছে। সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি সামনে আসতেই হাসপাতালগুলি মুখে কার্যত কুলুপ এঁটেছে। এদিকে রাজ্য জুড়ে অজানা জ্বরের এই দাপটকে সাধারণ জ্বর বলেই ব্যাখ্যা করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর । আশ্বাস দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।
রাজ্য স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, জ্বরের কারণ খুঁজতে স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিন এবং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ভাইরাস প্যানেলে নমুনা পরীক্ষা করা হবে । পাশাপাশি, উপসর্গের নিরিখে কী ধরনের চিকিৎসা করতে হবে সেই সংক্রান্ত প্রোটোকল বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করছে । দ্রুত তা জেলাস্তরে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। ভাইরাল প্যানেলে পরীক্ষা খরচসাপেক্ষ। তাই কোভিড, ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া, স্ক্রাব টাইফাস ধরা না পড়লে ভাইরাস প্যানেল করতে বলা হয়েছে। পিএম কেয়ার্সে পাওয়া ভেন্টিলেটরকে পেডিয়াট্রিক ভেন্টিলেটর, হাই ফ্লো ন্যাজাল অক্সিজেন মাস্কে রূপান্তরিত করতে বলা হয়েছে। এছাড়া বাড়তি এইচ এফ এন ও দেওয়া হচ্ছে।