চণ্ডীতলা (হুগলি), 23 মার্চ : পণের দাবিতে যুবতিকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠল শ্বশুরবাড়ির লোকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি হুগলির চণ্ডীতলা থানার নৈটি গ্রাম পঞ্চায়েতের কামারনাজ পাড়ার। মৃতের নাম অদিতি পাল (22)। গ্রেপ্তার করা হয়েছে অদিতির স্বামীকে। পলাতক শ্বশুর ও শাশুড়ি। মৃতের শাশুড়ি কল্পনা পাল তৃণমূলের গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য।
তিন বছর আগে হরিপালের চন্দন পালের সঙ্গে বিয়ে হয় দীপা গ্রামের অদিতির। তাদের এক বছরের একটি পুত্রসন্তান আছে। চন্দন বড়বাজারে গয়না ডিজ়াইনের কাজ করে। অদিতির পরিবার জানায়, বিয়ের সময় নগদ 50 লাখ টাকা, 15 ভরি সোনা ছাড়াও অন্য সামগ্রী দেওয়া হয়। তাদের অভিযোগ, বিয়ের পর অতিরিক্ত পণের জন্য চাপ দিতে থাকে চন্দনের বাড়ির লোকরা। মারধর, অশান্তি লেগে থাকত।
গতকাল চন্দনের বাড়ি থেকে ফোন করে অদিতির জেঠু তপন ঘোষকে বলা হয়, অদিতির শরীর খারাপ। চণ্ডীতলায় হাসপাতালে তাঁকে ভরতি করা হয়েছে। অদিতির দাদা রবীন ঘোষ এবং জেঠু তপন ঘোষ ও মা রেণুকা ঘোষ সহ আত্মীয়রা হাসপাতালে যান। কিন্তু সেখানে গিয়ে অদিতিকে পাওয়া যায়নি। তাঁরা তখন অদিতির শ্বশুরবাড়িতে যান। তপন ঘোষ বলেন, সেখানে গেলে দেখা যায় পুলিশের গাড়িতে পোড়া অদিতিকে তোলা হচ্ছে। এরপর দু'পক্ষের বচসা হয়। অভিযোগ, অদিতির শ্বশুরবাড়ির এলাকার লোকরা তাঁর বাবারবাড়ির লোকদের মারধর করে। চণ্ডীতলা থানার পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে।
মৃতের দাদা রবীন ঘোষ চণ্ডীতলা থানায় বোনকে পুড়িয়ে মারার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন অদিতির স্বামী চন্দন পাল, শ্বশুর গণেশ পাল ও শ্বাশুড়ি কল্পনা পালের বিরুদ্ধে। পুলিশ চন্দন পালকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে শ্বশুর এবং শাশুড়ি পলাতক।
অদিতির মা রেণুকা ঘোষ বলেন, "মাঝে মধ্যেই মেয়েকে অত্যাচার করত। মেয়ে চুপ থাকত। ওরাই আমার মেয়েকে মেরে ফেলেছে।"
এব্যাপারে চণ্ডীতলা ব্লকের তৃণমূল নেতা তথা হুগলি জেলা পরিষদের পূর্তের কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখার্জি বলেন, "নৈটি গ্রামে অদিতি পাল নামে একটি মেয়ের অর্ধদগ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য কল্পনা পাল। কিন্তু তার জন্য পুলিশ কোনওভাবে প্রভাবিত হবে না। পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করছে। নিরপেক্ষ তদন্তে যা উঠে আসবে যে মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে না কি তাঁকে মেরে ফেলা হয়েছে তার ভিত্তিতে পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। পুলিশের তদন্তে কেউ প্রভাবিত করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"