কলকাতা, 29 জানুয়ারি : আরামবাগের একটি নার্সিংহোমে থেকে সদ্যোজাত পাচারের অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হওয়া মামলায় অভিযুক্ত নার্সিংহোমের লাইসেন্স বাতিল করল রাজ্য সরকার। আরামবাগের নলিনী নার্সিংহোম নামে ওই বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে এক সদ্যোজাত নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। দীর্ঘ শুনানির পর বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিসন বেঞ্চ ওই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে অভিযোগের স্বপক্ষে যথেষ্ট যুক্তি আছে বলে মনে করে রাজ্যকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। সেই নির্দেশের কপি পাঠানো হয় রাজ্যের মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিবকে। তারপরেই সম্প্রতি রাজ্য সরকার নার্সিংহোমের লাইসেন্স বাতিল করল। যদিও মামলাটি এখনও কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে বিচারাধীন রয়েছে।
মামলার বয়ান অনুযায়ী, আরামবাগের একটি নার্সিংহোমে গতবছর 3 সেপ্টেম্বর সন্তানের জন্ম দেন অর্পিতা লাহা নামে এক মহিলা। অর্পিতার শ্বশুরবাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের রামজীবনপুর এলাকায়। স্বামী দুর্ঘটনায় মারা যান৷ তার পর তিনি আরামবাগে বাপের বাড়িতে থাকছিলেন। সন্তান হওয়ার পর শিশুটির কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ। মহিলার শ্বশুরবাড়ির লোকজন খোঁজখবর নিলে প্রথমে জানানো হয় সন্তান মারা গিয়েছে। অগত্যা বাধ্য হয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন ওই ভদ্রমহিলার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তাঁদের বাচ্চাকে পাচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ জানান তাঁরা।
মামলার শুনানিতে আদালতে পুলিশের তরফে জানানো হয় যে সদ্যোজাত ওই শিশুটি অসুস্থ থাকায় পরিবার তাকে নেয়নি৷ তাই সন্তানকে এক চিকিৎসকের গাড়ির চালককে দিয়ে দেন মা। কিন্তু তারপরেই সেই শিশু অসুস্থ হয়ে মারা যায়। তখন দেহটি নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন : চিটফান্ডকাণ্ডে পিসি সরকারের বাড়িতে তল্লাশি সিবিআইয়ের
গত 16 ডিসেম্বর আরামবাগে ওই মামলায় সিবিআই তদন্ত এড়াতে সিট গঠনের কথা জানায় রাজ্য। বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিসন বেঞ্চে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত জানান, এই ঘটনার তদন্ত করে দেখার জন্য একজন সিনিয়র সিআইডি অফিসার এর নেতৃত্বে সিট গঠন করেছে রাজ্য সরকার। তারপরই ডিভিসন বেঞ্চ 22 ডিসেম্বরের মধ্যে নিখোঁজ শিশুটিকে খুঁজে আনার চূড়ান্ত সময়সীমা দেয়। কিন্তু তারপরও নিখোঁজ শিশুটির হদিশ দিতে পারেনি রাজ্য পুলিশ।