চুঁচুড়া, 8 জুন: তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরার দুবাই যাত্রী নিয়ে এবার প্রশ্ন তুললেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় ৷ পাশাপাশি দুর্নীতি মামলায় রুজিরার নাম জড়ানো নিয়ে অভিষেককে আক্রমণ করলেন তিনি ৷ হুগলি জেলার বিজেপির সাংগঠনিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে লকেট বলেন, "খারাপ লাগে এমন দুর্নীতি করেছে স্ত্রী শ্যালিকা পরিবারকে যুক্ত করেছে । কালো টাকাকে সাদা করতে কোম্পানি করে জনতার টাকা লুট করে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে । কালো টাকা কীভাবে সাদা করা যায় সেই চেষ্টা চলছে ।"
তিনি আরও বলেন, "রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায় মহিলা বলে তাঁকে সম্মান করি । তাঁকেও এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত করে নেওয়া হয়েছে । কী করে একজন লুক আউট নোটিশ থাকার পরেও বাইরে চলে যান । উনি দুবাই চলে যেতে পারে সেটাই প্রশ্নবোধক চিহ্ন আমাদের কাছে ।" এখান থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে কোথাউ একটা পালানোর চক্রান্ত করা হচ্ছিল ।" অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী কর্মসূচি নিয়ে লকেটের বক্তব্য, এই বারোটা বছরে যতবার ভোট এসেছে দিদিকে বলো, জনজোয়ার-সহ একাধিক নাম দিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি করেছে । নির্বাচনের আগে নতুন নতুন ভাবে মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্যই এই কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে ।
আরও পড়ুন: বিমানবন্দরে আটকানো হল রুজিরাকে, আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন অভিষেক
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আরামবাগের সভা থেকে কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে দিল্লিতে ধরনায় বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন ৷ সেই প্রসঙ্গে হুগলির সাংসদ বলেন, "রাজ্যে এত দুর্নীতি আছে সেই তুলনায় আমরা যদি ধরনায় বসি কোন বাস গাড়ি চলবে না । পাড়ায় পাড়ায় নানা ইস্যু আছে দুর্নীতির । গতকালই সিঙ্গুরে গিয়ে সমবায় ব্যাংকে দুর্নীতির কথা শুনলাম। সিঙ্গুরে সমবায় মহিলারা টাকা তুলতে গেলে টাকা নেই বলছে । এক কোটি থেকে 2 কোটি টাকার উপর দুর্নীতি হয়েছে । এই টাকাগুলো কোথায় গেল ? সেখানকার কষাধ্যক্ষকে বিষ খাইয়ে মারবার চেষ্টা চলছে । এক একটা সমবায় ব্যাংক নিয়েও যে দুর্নীতি তাতে উনি দিল্লিতে যতই ধরনায় বসুক না কেন বাংলার মানুষকে ভুল বোঝাতে পারবেন না ।"
বোলপুরের কালিকাপুর এলাকায় অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ির পরিচারক বিদ্যুৎ বরণ গায়েনের বাড়িতে সিবিআই প্রশ্নে লকেট জানান, এটা হবেই । সায়গল থেকে একাধিক লোক নিয়ে অনুব্রত মণ্ডল সন্ত্রাসের রাজ চালিয়েছে । দু'নম্বরীর রাজ চালিয়েছে । কয়লা গরু পাচারের রাজত্ব করেছেন । তিনি বলেন, "আমরা চাই সাধারণ মানুষের টাকা যেভাবে লুট হয়েছে সিবিআই ও ইডি তদন্ত করে বের করুক ৷ দোষীরা যেন শাস্তি পায় ।"
আদিবাসীদের বনধ নিয়ে তিনি বলেন, "আদিবাসী সমাজকে আমরা শ্রদ্ধা করি ৷ রাজ্য সরকার ব্যবস্থা নেয়নি বলে আজকে আদিবাসীরা অবরোধ করেছে ৷ সরকার এদের দাবি-দাবার নিয়ে চিন্তা ভাবনা করুক, আলোচনায় বসুক । কিন্তু সেই জায়গায় উত্তেজিত করে দিয়ে কী লাভ ৷ সরকার চাইছে বিভাজনের রাজনীতি করে বৈতরণী পার হবে ৷ আমরাও চাই আদিবাসী সম্প্রদায়ের যা স্বীকৃতি দাবি করেছে তা মেনে নেওয়া হোক ৷"
আরও পড়ুন: 100 দিনের কাজে দুর্নীতি হওয়ায় কেন্দ্র টাকা আটকে রেখেছে, দাবি কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত রাষ্ট্রমন্ত্রীর
আবাস যোজনার টাকা প্রসঙ্গে লকেট জানান, এখানে সবাই দুর্নীতি করেছে । গোটা রাজ্যে ও দুর্নীতিতে ভরে গিয়েছে । গোটা সুমুদ্র এখন বিষাকার হয়ে গিয়েছে । গোটা পঞ্চায়েতে দুর্নীতিতে ভরতি । গরিব মানুষগুলোর এমনিই অবস্থা খারাপ । কেন্দ্র সরকার টাকা দিলে গরিব মানুষ টাকা পাবে না । সবই অন্য জায়গায় চলে যাচ্ছে । তৃণমূল সরকার আবাস যোজনা 100 দিনের কাজের আগে হিসেব দিক ৷ তারপর টাকা পাবে ।