সিঙ্গুর, 27 নভেম্বর: রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বোকামি, উদারতায় এবং তৎকালীন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধির মতো মহান ব্যক্তির ভদ্রতার সুযোগ নিয়ে রাজ্য থেকে গুজরাতে শিল্প ভাগিয়েছিলেন তৎকালীন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । সোমবার সিঙ্গুরে এসে এভাবেই রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ।
একশো দিনের কাজ-সহ একাধিক দুর্নীতির অভিযোগে বুধবার কলকাতায় প্রতিবাদ সভা করবে বিজেপি। উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ । তার সমর্থনে বিভিন্ন জায়গায় সভা করেছেন শুভেন্দু অধিকারী । সোমবার সিঙ্গুর স্টেশন সংলগ্ন বুড়ো শান্তির মাঠে সভা করে বিজেপি। শুভেন্দু সেই সভায় সিঙ্গুরের শিল্প ধ্বংস করা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেন । তিনি বলেন, "2006 সালে প্রথমে সিঙ্গুরের অধিকাংশ মানুষ জমির মালিক হিসাবে ক্ষতিপূরণের চেক নিয়ে নিয়েছিল। সামান্য কজন বর্গাদার নেননি, তাদেরকে নিয়ে সিঙ্গুরে শিল্প বিরোধিতা করতে এসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । সিঙ্গুর আর নন্দীগ্রামের দু'টো লড়াই এক লড়াই নয়। সিঙ্গুরের লড়াইতে সাধারণ মানুষের সমর্থন ছিল না । বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য তাঁর বোকামির জন্য এই ধরনের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজকের এই সিঙ্গুরকে শ্মশানে পরিণত করেছেন । বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের উদারতা এবং প্রাক্তন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধির মতো মহান ব্যক্তির ভদ্রতার সুযোগ নিয়ে এই রাজ্যের নেত্রী শিল্প ভাগান গুজরাটে । সিঙ্গুরকে ধ্বংস করেছেন তিনি ৷"
রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্নাকেও এদিন আক্রমণ করেন রাজ্যের বিরোধী দল নেতা শুভেন্দু অধিকারী । তিনি বলেন, "বেচা ঘরে ঢুকে গিয়েছিল একটা সময় । টাটার কারখানায় চুনসুরকির সাপ্লাইয়ে ঢুকে গিয়েছিল । এখন বেচারাম মান্নাকে ভয়ের কি আছে ! বেচারাম মান্নাকে ছেড়ে দেন আমি দেখব ওকে । আমি জানি, ও আগে একটা বিড়িকে নিভিয়ে নিভিয়ে খেত। আগে ফাটা পায়জামা পরত, একটা পাঞ্জাবি পাঁচদিন পড়তো তারপর ধুতে যেত। ও এখন সারাদিনে তিনটে সিল্কের পাঞ্জাবি পরে। পিছনে তুলো লাগানো লম্বা সিগারেট খায় । এখন অনেক কিছু করেছে, কোথা থেকে হয়েছে জানি না। আমাদের ভারতবর্ষে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট আছে । মাটির ভিতরে মাল থাকলে বার করে।"
শুভেন্দু অধিকারীকে পালটা আক্রমণ করেন বেচারাম মান্না। তিনি বলেন, "ইডি,সিবিআই ও আয়কর দফতরের হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন শুভেন্দু, তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না। রাজনৈতিকভাবে শুভেন্দু অধিকারী কোনদিনও জেল খাটেননি, সিপিএম কোনদিনও মামলা দেয়নি কারণ, সিপিএমের সঙ্গে তাঁর একটা বড় আঁতাত ছিল । সিপিএমের সঙ্গে বিরোধিতা করে আন্দোলন করেছি বলে 68টা মিথ্যা মামলা দিয়েছে । জামিন অযোগ্য ধারায় মামলায় 82দিন জেল খেটেছি। পুলিশের মার খেয়েছি, হাসপাতালে ভরতি হয়েছি এটা সিঙ্গুর-সহ সারা পশ্চিমবাংলার মানুষ জানে । তাই মিথ্যা মামলার হুমকিতে আমরা পরোয়া করি না ৷"
আরও পড়ুন: