হুগলি, 23 ফেব্রুয়ারি: "অভিভাবকরা ভয় পেয়েছেন ৷ রাজ্য সরকারি স্কুল এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদের উপর তাঁদের আর কোনও আস্থা নেই ৷ সেই কারণেই ছেলেমেয়েদের অন্য়ান্য বোর্ড এবং বেসরকারি স্কুলে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা ৷ সবই রাজ্যের শিক্ষাদুর্নীতির ফল !" বৃহস্পতিবার হুগলিতে এসে এভাবেই মাধ্যমিকে পরীক্ষার্থী কমার কারণ ব্যাখ্যা করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar comments on Madhyamik) ৷ এদিন হুগলির শ্রীরামপুরে আয়োজিত একটি কর্মসূচিতে যোগ দিতে আসেন তিনি ৷ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে নানা ইস্যুতে সরব হন ৷
বৃহস্পতিবার থেকেই শুরু হল এবছরের মাধ্যমিক পরীক্ষা (Madhyamik Exam 2023) ৷ আগেই জানা গিয়েছিল, গতবারের তুলনায় এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্য়া কমেছে প্রায় 4 লক্ষ ৷ যা নিয়ে শিক্ষামহলের পাশাপাশি আদালতও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ৷ এই প্রসঙ্গে এদিন সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে নিশানা করেন সুকান্ত ৷ তাঁর অভিযোগ, পরীক্ষার্থী কমার বিষয়ে সমস্ত দায় ঝেড়ে ফেলতে চাইছে রাজ্যের সরকার ৷ তারা "কোভিডের ঘাড়ে বন্দুক রাখতে চাইছে ৷ আমি তো আগেই বলেছি, আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর একটি বড় হাত হল অজুহাত ! অথচ অন্য়ান্য রাজ্যে কিন্তু করোনার পর পরীক্ষার্থী কমেনি ৷"
আরও পড়ুন: আগামী বছর মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা সাড়ে 10 লক্ষ হবে: ব্রাত্য
প্রসঙ্গত, সুকান্ত নিজেও শিক্ষাজগতের মানুষ ৷ তিনি একজন পেশাদার অধ্যাপক ৷ তাঁর মতে, শিক্ষাদুর্নীতির জেরে পশ্চিমবঙ্গের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে ৷ অভিভাবকরা তাঁদের ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত ৷ গত 11-12 বছরে সরকারি স্কুলগুলির পরিকাঠামো তলানিতে এসে ঠেকেছে ৷ অন্যদিকে, বেসরকারি স্কুলগুলির ব্যবসা ফুলে-ফেঁপে উঠছে ৷ সুকান্তর অভিযোগ, পরিকল্পনা মাফিক সরকারি শিক্ষাব্যবস্থা নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে ৷ যাতে বেসরকারি স্কুলের মালিকরা আরও বেশি করে মুনাফা লুটতে পারেন ৷ এর পিছনে রাজ্যের তৃণমূল সরকারের প্রত্যক্ষ মদত ও বোঝাপড়া খুঁজে পাচ্ছেন সুকান্ত ৷ তাঁর মতে, এটি একটি বিরাট চক্রান্ত ৷
সুকান্ত জানান, তাঁর নিজের মেয়েকেও তিনি একটি রাজ্য সরকারি স্কুলে ভর্তি করেছিলেন ৷ সেখানে পঠনপাঠনের মাধ্যম ছিল ইংরেজি ৷ কিন্তু, পাঠক্রম অনুসারে বই কোথাও পাওয়া যাচ্ছিল না ! ফলে বাধ্য হয়েই মেয়েকে অন্য স্কুলে ভর্তি করেন সুকান্ত ৷ তিনি মনে করেন, আগামী দিনে রাজ্যের সরকারি শিক্ষাব্যবস্থা ও পাঠ্যসূচির আমূল সংস্কার দরকার ৷ তা না হলে জাতীয়স্তরে পিছিয়ে পড়বে বাংলার সরকারি স্কুলের পড়ুয়ারা ৷ এই প্রসঙ্গে ফের একবার কেন্দ্রীয় সরকারের নয়া শিক্ষানীতি গ্রহণের পক্ষে সওয়াল করেন সুকান্ত ৷