আদিসপ্তগ্রাম, 16 সেপ্টেম্বর : স্কুলের ফি দিতে না পারায় পরীক্ষায় বসতে পারল না ক্লাস থ্রি'র ছাত্রী সিলভি চক্রবর্তী ৷ মগরার খেজুরিয়ায় একটি বেসরকারি ইংরেজ মাধ্যম স্কুলের ঘটনা ৷ গত এপ্রিল থেকে স্কুলের ফি দিতে পারেননি সিলভির মা ৷ তাই সিলভিকে পরীক্ষায় বসতে দেয়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ ৷ জেলাশাসক, DI-কে অভিযোগ জানিয়েছেন তার মা ৷
ওই ছাত্রীর মা কাবেরী প্রামাণিক চক্রবর্তী বলেন, "আমি মেয়েকে এই স্কুলে যবে ভরতি করি, তার কিছুদিনের মধ্যেই আমার স্বামী নিরুদ্দেশ হয়ে যান ৷ আমাদের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ । মিসিং ডায়েরি করে স্কুল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টা জানিয়েছিলাম ৷ স্কুল আমাকে কিছুদিন সময় দিয়েছিল ঠিকই ৷ যতটা পেরেছি স্কুল-ফি দিয়েছি ৷ বর্তমানে স্কুলের ফি ও অন্যান্য খরচ বহন করতে পারছি না ৷ রাইট টু এডুকেশনের আওতায় শিক্ষাক্ষেত্রে কিছু ছাড় পাওয়া যায় ৷ সে কারণেই DI অফিস, জেলাশাসকের দপ্তরে বিষয়টি জানিয়েছিলাম ৷ DI অফিসের চিঠি স্কুল কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করলেও ফোনে আমাকে বলা হয় মেয়েকে TC দেওয়া হবে ৷ আজকের পরীক্ষাতেও বসতে দেওয়া হয়নি ৷ NCPCR-এ বিষয়টি জানাব ৷ শিক্ষামন্ত্রীকেও এই বিষয়টা জানিয়েছি ৷" তিনি আরও জানান, রাইট টু এডুকেশন আক্টের আওতায় সমাজে পিছিয়ে থাকা আর্থিকভাবে দুর্বল ছাত্রছাত্রীদের জন্য 25 শতাংশ সংরক্ষণ দিতে হয় ৷ কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অস্বীকার করে ৷ পাশাপাশি খারাপ ব্যবহারও করে ৷
আরও পড়ুন : কোচের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ, প্রমাণ রাখতে ভিডিয়ো তুলল নাবালিকা সাঁতারু
ওই বেসরকারি স্কুলের প্রিন্সিপাল নূপুর দে সরকার বলেন, "এই স্কুল সরকারি আওতাভুক্ত নয় ৷ একটা বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে স্কুল পরিচালনা করা হচ্ছে ৷ যে টিচার রয়েছেন বা স্কুলে যে বৃত্তিমূলক কোর্সগুলো চালু রয়েছে, সেজন্য খরচ হয় ৷ ওই অভিভাবক যে ছাড়ের দাবি করছেন, সেটা কেবল মাত্র সরকারি অনুমোদনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ৷ স্কুল এখনও পর্যন্ত CBSE বা পশ্চিমবঙ্গ কোনও বোর্ডেরই অধীন নয় ৷ তাই ছাড় দেওয়া সম্ভব নয় ৷ তাছাড়া, উনি যখন ওঁর মেয়েকে ভরতি করেছিলেন, তখন চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করেছিলেন ৷ ওঁর ক্ষেত্রে ছাড় দিলে অন্যান্য পড়ুয়াদের ক্ষেত্রেও ছাড়ের বিষয়টি উঠবে ৷" হুগলির অতিরিক্ত জেলাশাসক প্রদীপ আচার্য জানান, অভিযোগ পেয়েছি ৷ সংশ্লিষ্ট স্কুলকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানতে চাওয়া হবে ৷ ওই ছাত্রী সরকারি কোনও স্কুলে ভরতি হতে চাইলে, তার ব্যবস্থা করা হবে ৷