ETV Bharat / state

সিল্ক-হাব এখনও প্রতিশ্রুতি, লকডাউনে ধুঁকছে শ্রীরামপুরের সিল্ক প্রিন্টিং - অনিশ্চয়তায় সিল্ক হাব

দীর্ঘ লকডাউন ৷ সরকারের সদিচ্ছা না থাকার অভিযোগ ৷ কার্যত খারাপ পরিস্থিতিতে রয়েছে শ্রীরামপুরের সিল্ক প্রিন্টিং ৷

শ্রীরামপুরের সিল্ক প্রিন্টিং
শ্রীরামপুরের সিল্ক প্রিন্টিং
author img

By

Published : Jul 22, 2020, 5:43 PM IST

শ্রীরামপুর, 22 জুলাই : কাপড়ের উপর নানা ধরনের নকশা ৷ নানা ফুলে ছবিতে শিল্পকে একটা নতুন মাত্রা দিয়েছিল শ্রীরামপুরের সিল্ক প্রিন্টিং । কিন্তু, লকডাউনে বেহাল দশা প্রায় 200 বছরের প্রাচীন এই শিল্পের ৷ সমস্যায় শিল্পী ও ব্যবসায়ীরাও । সরকারের তরফে বলা হয়েছিল, তৈরি হবে স্লিক হাব ৷ কিন্তু জমিজটের কারণে তাও থমকে ৷ এই পরিস্থিতিতেও সরকারের তরফে তেমন কোনও সদিচ্ছা দেখানো হয়নি বলে অভিযোগ ৷ সবমিলিয়ে বিপাকে পড়েছে শ্রীরামপুরের সিল্ক প্রিন্টিং ৷

শ্রীরামপুরের তালপুকুর, তারাপুকুর, বৈদ্যবাটি পৌরসভার চাতরা মান্নাপাড়া, নওগাঁ, মরাদান, বৌবাজার, শেওড়াফুলি-সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় সিল্ক প্রিন্টিংয়ের কারখানা রয়েছে । ছোটো-বড় মিলিয়ে প্রায় 250টি কারখানা ৷ কাজ করেন 15 হাজার শ্রমিক ৷ প্রিন্টিংয়ের এই কাজের জন্য 200-300 টাকা মজুরি পান তাঁরা ।

কীভাবে কাজ হয় সিল্ক প্রিন্টিংয়ের

এই স্লিক প্রিন্টিং করাখানায় মূলত পাঁচ ধরনের প্রিন্টিংয়ের কাজ হয় ৷ ব্লক প্রিন্টিং, হ্যান্ড প্রিন্টিং ,স্ক্রিন প্রিন্টিং ,বাটিক প্রিন্টিং ও ডিজিটাল প্রিন্টিং ৷ স্লিক প্রিন্টিংয়ের কাজে মজুরি 80-500 টাকা । কেউ কেউ আবার 400-800 টাকাও পান । দেশের নানা রাজ্য ছাড়াও অ্যামেরিকা ,ফ্রান্স,ইট্যালি ,লন্ডন ও অস্ট্রেলিয়া সহ নানা দেশ থেকে কাজের অর্ডার আসে ৷ প্রথমে সিল্ক ,তসর ,মটকা ও সুতির শাড়ির উপর হাতে ও কম্পিউটারে আঁকা হয় । নানা ধরনের নকশা ফুটিয়ে তোলা হয় । এরপর নকশাগুলিকে রং করা হয় ৷ রং করা হয়ে গেলে, তা পাকা করার জন্য হিট দেওয়া হয় । তৈরি হওয়ার পর সিল্কের ও তসরের এক একটি শাড়ির দাম হয় 800-3000 টাকা পর্যন্ত । সুতি শাড়ি 400-5000 টাকা পর্যন্ত৷ কিন্তু লকডাউন জারি হওয়ায় কারখানাগুলির কাজ বন্ধ হয়ে গেছিল ৷ এখন অল্প শ্রমিক দিয়ে ধীরে ধীরে কয়েকটি কারখানায় কাজ শুরু হচ্ছে ৷ কিন্তু সেই গতি নেই ৷

লকডাউনে সমস্যায় শ্রীরামপুরের সিল্ক প্রিন্টিং

লকডাউনে ধুঁকছে সিল্ক প্রিন্টিং

কোরোনা সংক্রমণের জেরে দীর্ঘ লকডাউন চলেছে ৷ আনলক শুরু হলেও কনটেইনমেন্ট জ়োনগুলিতে এখনও লকডাউন ৷ ক্রমবর্ধমান সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে সপ্তাহে দু-একদিন করে সম্পূর্ণ লকডাউনও শুরু হতে চলেছে ৷ এই পরিস্থিতিতে শিল্পী, শ্রমিক থেকে ব্যবসায়ী সবাই অনিশ্চয়তায় ৷ কমেছে আয় ৷ কমেছে শ্রমিক সংখ্যাও ৷ এবিষয়ে শিল্পী অতনু রায় বলেন, "লকডাউন আর কোরোনার জেরে আমাদের বাজারে মন্দা । যে হারে আমরা কাজ পেতাম, সে হারে কাজ পাচ্ছি না । 50 শতাংশ কাজ কমে গেছে । দীর্ঘ কুড়ি বছর ধরে এই শিল্পের সঙ্গে আছি । কিন্তু এইরকম পরিস্থিতি তৈরি হয়নি ৷ এখন আর সেভাবে বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না । কাজের সময়ও কমিয়ে দেওয়া হয়েছে ।" সিল্ক প্রিন্টিংয়ের এক শিল্পী ও ব্যবসায়ী সুভাষ দাস বলেন, "টেক্সটাইল শিল্পে বিপুল ক্ষতি হচ্ছে । দু-একটি রপ্তানি ছাড়া আর কোনও কাজ নেই ৷ স্থানীয় বাজার পুরোটাই বন্ধ ৷ শ্রমিক সংখ্যা অর্ধেক হয়ে গেছে ৷ অনেককে কাজও দিতে পারছি না । শুনেছিলাম, এখানে স্লিক প্রিন্টিং হবে ৷ কুড়ি বছর ধরে শুনে আসছি । কিন্তু কিছুই হয়নি । শ্রীরামপুর প্রিন্টিংয়ের পীঠস্থান । কিন্তু সমস্ত কাজ গুজরাত,দিল্লি, মহারাষ্ট্রে চলে যাচ্ছে । আমরা অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছি । প্রযুক্তিগত দিক থেকে অনেক নতুন নতুন মেশিন এবং প্রযুক্তি এসেছে । কিন্তু আমাদের কাজে তেমন গতি আসেনি । গুজরাতে প্রতিটি কারখানা 24 ঘণ্টা চলছে । আর এখানে কোনও কারখানা তিন মাসের বেশি চলে না । লকডাউনের পর বুঝতে পারছি না, এই শিল্প থাকবে কি থাকবে না ৷"

অনিশ্চয়তায় সিল্ক হাব

ব্যবসায়ী থেকে শিল্পী কিংবা স্লিক প্রিন্টার্স ওনার অ্যাসোসিয়েশন ৷ সবাই সরকারের পদক্ষেপের দিকে তাকিয়ে ৷ তারা জানাচ্ছে, বহু বছর আগে থেকেই বলা হচ্ছে সিল্ক হাব তৈরি হবে ৷ একসময় সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, শ্রীরামপুরের প্রভাসনগরে 156 বিঘা জমির উপরে তৈরি হবে সিল্ক হাব । কিন্তু জমিজটের কারণে তা এখন অথৈ জলে । সরকার জমি নির্ধারিত করেছিল ৷ তবে চাষিরা সেই জমিতে চাষবাস চালিয়ে যান ৷ একবার সরকারের তরফে অধিগ্রহণের চেষ্টা করা হয় ৷ কিন্তু চাষিদের বিক্ষোভ-আন্দোলনের মুখে পড়তে হয় ৷ সিল্ক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত মানুষজনের দাবি, তারপর থেকে বিষয়টি নিয়ে আর সেভাবে মাথা ঘামায়নি সরকার ৷ এখনও তা প্রতিশ্রুতির স্তরেই থেকে গেছে ৷

image
200 বছরের পুরোনো এই সিল্ক প্রিন্টিং শিল্প

অন্য প্রতিবন্ধকতা

এই সবকিছুর পাশাপাশি আরও কিছু সমস্যায় জর্জরিত সিল্ক প্রিন্টিং ৷ জমি কম থাকায় আর বড় কারখানা তৈরি করা যাচ্ছে না ৷ ছোটো কারখানায় বেশি সংখ্যক শ্রমিকের কাজের সমস্যা রয়েছে ৷ কিছু কারখানা চালু হওয়ার কয়েকমাস পরই বন্ধ হয়ে যায় ৷ প্রিন্টিংয়ের কাজে নানা ধরনের কেমিকেল ও রংয়ের ব্যবহার হয় ৷ যা দূষণ ঘটায় ৷ এক্ষেত্রে দূষণ নিয়ন্ত্রণের ছাড়পত্র পান না ব্যবসায়ীরা । ব্যাঙ্কের ঋণের ক্ষেত্রেও বহু জটিলতা রয়েছে । দেশের অন্যান্য রাজ্যে নিত্য-নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে ৷ শিল্পী ও ব্যবসায়ীদের দাবি, নানা কারণে এখনও পশ্চিমবঙ্গে এখনও পুরোনো পদ্ধতিগুলিই গুরুত্ব পায় ৷ তাই সহজে গুজরাত, মুম্বই এগিয়ে যাচ্ছে ৷ পিছিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ৷

আগের বছর যে পরিমাণ ব্যবসা হয়েছে ৷ এবার তার অর্ধেকও হয়নি ৷ জানাচ্ছেন স্লিক প্রিন্টার্স ওনার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রদীপ বণিক ৷ তিনি বলেন, "লকডাউনের আগে সব ভালোই চলছিল । কিন্তু লকডাউনে সমস্ত কাজ বন্ধ ৷ এখন কাজ না পেয়ে, শ্রমিকরা অন্য কাজে চলে যাচ্ছে ৷ বাইরে থেকে কাঁচামাল, রং কিছুই আসছে না । আমার সিল্ক প্রিন্টিংয়ের এই ব্যবসায় গতবছর 5 কোটি টাকা টাকা লেনদেন হয়েছিল । কিন্তু এবার 50 লাখ টাকারও লেনদেন হবে কি না সন্দেহ আছে । স্লিক হাব পার্ক করার কথা ছিল এই শ্রীরামপুরে। কিন্তু সেটাও জমি জটে আটকে৷ খুব সমস্যায় পড়েছি ৷"

সরকারের কথা মতো কাজ হয়নি বলে অভিযোগ ৷ পাশাপাশি দূষণ নিয়ন্ত্রণের ছাড়পত্র, ব্যাঙ্কের ঋণ সহ নানা জটিলতা৷ তাও চলছিল ব্যবসা ৷ কিন্তু লকডাউনের থাবায় আরও খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ৷ আপাতত অনিশ্চিত ভবিষ্যত নিয়ে সরকারি হস্তক্ষেপের অপেক্ষায় শ্রীরামপুরের স্লিক প্রিন্টিং ৷

শ্রীরামপুর, 22 জুলাই : কাপড়ের উপর নানা ধরনের নকশা ৷ নানা ফুলে ছবিতে শিল্পকে একটা নতুন মাত্রা দিয়েছিল শ্রীরামপুরের সিল্ক প্রিন্টিং । কিন্তু, লকডাউনে বেহাল দশা প্রায় 200 বছরের প্রাচীন এই শিল্পের ৷ সমস্যায় শিল্পী ও ব্যবসায়ীরাও । সরকারের তরফে বলা হয়েছিল, তৈরি হবে স্লিক হাব ৷ কিন্তু জমিজটের কারণে তাও থমকে ৷ এই পরিস্থিতিতেও সরকারের তরফে তেমন কোনও সদিচ্ছা দেখানো হয়নি বলে অভিযোগ ৷ সবমিলিয়ে বিপাকে পড়েছে শ্রীরামপুরের সিল্ক প্রিন্টিং ৷

শ্রীরামপুরের তালপুকুর, তারাপুকুর, বৈদ্যবাটি পৌরসভার চাতরা মান্নাপাড়া, নওগাঁ, মরাদান, বৌবাজার, শেওড়াফুলি-সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় সিল্ক প্রিন্টিংয়ের কারখানা রয়েছে । ছোটো-বড় মিলিয়ে প্রায় 250টি কারখানা ৷ কাজ করেন 15 হাজার শ্রমিক ৷ প্রিন্টিংয়ের এই কাজের জন্য 200-300 টাকা মজুরি পান তাঁরা ।

কীভাবে কাজ হয় সিল্ক প্রিন্টিংয়ের

এই স্লিক প্রিন্টিং করাখানায় মূলত পাঁচ ধরনের প্রিন্টিংয়ের কাজ হয় ৷ ব্লক প্রিন্টিং, হ্যান্ড প্রিন্টিং ,স্ক্রিন প্রিন্টিং ,বাটিক প্রিন্টিং ও ডিজিটাল প্রিন্টিং ৷ স্লিক প্রিন্টিংয়ের কাজে মজুরি 80-500 টাকা । কেউ কেউ আবার 400-800 টাকাও পান । দেশের নানা রাজ্য ছাড়াও অ্যামেরিকা ,ফ্রান্স,ইট্যালি ,লন্ডন ও অস্ট্রেলিয়া সহ নানা দেশ থেকে কাজের অর্ডার আসে ৷ প্রথমে সিল্ক ,তসর ,মটকা ও সুতির শাড়ির উপর হাতে ও কম্পিউটারে আঁকা হয় । নানা ধরনের নকশা ফুটিয়ে তোলা হয় । এরপর নকশাগুলিকে রং করা হয় ৷ রং করা হয়ে গেলে, তা পাকা করার জন্য হিট দেওয়া হয় । তৈরি হওয়ার পর সিল্কের ও তসরের এক একটি শাড়ির দাম হয় 800-3000 টাকা পর্যন্ত । সুতি শাড়ি 400-5000 টাকা পর্যন্ত৷ কিন্তু লকডাউন জারি হওয়ায় কারখানাগুলির কাজ বন্ধ হয়ে গেছিল ৷ এখন অল্প শ্রমিক দিয়ে ধীরে ধীরে কয়েকটি কারখানায় কাজ শুরু হচ্ছে ৷ কিন্তু সেই গতি নেই ৷

লকডাউনে সমস্যায় শ্রীরামপুরের সিল্ক প্রিন্টিং

লকডাউনে ধুঁকছে সিল্ক প্রিন্টিং

কোরোনা সংক্রমণের জেরে দীর্ঘ লকডাউন চলেছে ৷ আনলক শুরু হলেও কনটেইনমেন্ট জ়োনগুলিতে এখনও লকডাউন ৷ ক্রমবর্ধমান সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে সপ্তাহে দু-একদিন করে সম্পূর্ণ লকডাউনও শুরু হতে চলেছে ৷ এই পরিস্থিতিতে শিল্পী, শ্রমিক থেকে ব্যবসায়ী সবাই অনিশ্চয়তায় ৷ কমেছে আয় ৷ কমেছে শ্রমিক সংখ্যাও ৷ এবিষয়ে শিল্পী অতনু রায় বলেন, "লকডাউন আর কোরোনার জেরে আমাদের বাজারে মন্দা । যে হারে আমরা কাজ পেতাম, সে হারে কাজ পাচ্ছি না । 50 শতাংশ কাজ কমে গেছে । দীর্ঘ কুড়ি বছর ধরে এই শিল্পের সঙ্গে আছি । কিন্তু এইরকম পরিস্থিতি তৈরি হয়নি ৷ এখন আর সেভাবে বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না । কাজের সময়ও কমিয়ে দেওয়া হয়েছে ।" সিল্ক প্রিন্টিংয়ের এক শিল্পী ও ব্যবসায়ী সুভাষ দাস বলেন, "টেক্সটাইল শিল্পে বিপুল ক্ষতি হচ্ছে । দু-একটি রপ্তানি ছাড়া আর কোনও কাজ নেই ৷ স্থানীয় বাজার পুরোটাই বন্ধ ৷ শ্রমিক সংখ্যা অর্ধেক হয়ে গেছে ৷ অনেককে কাজও দিতে পারছি না । শুনেছিলাম, এখানে স্লিক প্রিন্টিং হবে ৷ কুড়ি বছর ধরে শুনে আসছি । কিন্তু কিছুই হয়নি । শ্রীরামপুর প্রিন্টিংয়ের পীঠস্থান । কিন্তু সমস্ত কাজ গুজরাত,দিল্লি, মহারাষ্ট্রে চলে যাচ্ছে । আমরা অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছি । প্রযুক্তিগত দিক থেকে অনেক নতুন নতুন মেশিন এবং প্রযুক্তি এসেছে । কিন্তু আমাদের কাজে তেমন গতি আসেনি । গুজরাতে প্রতিটি কারখানা 24 ঘণ্টা চলছে । আর এখানে কোনও কারখানা তিন মাসের বেশি চলে না । লকডাউনের পর বুঝতে পারছি না, এই শিল্প থাকবে কি থাকবে না ৷"

অনিশ্চয়তায় সিল্ক হাব

ব্যবসায়ী থেকে শিল্পী কিংবা স্লিক প্রিন্টার্স ওনার অ্যাসোসিয়েশন ৷ সবাই সরকারের পদক্ষেপের দিকে তাকিয়ে ৷ তারা জানাচ্ছে, বহু বছর আগে থেকেই বলা হচ্ছে সিল্ক হাব তৈরি হবে ৷ একসময় সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, শ্রীরামপুরের প্রভাসনগরে 156 বিঘা জমির উপরে তৈরি হবে সিল্ক হাব । কিন্তু জমিজটের কারণে তা এখন অথৈ জলে । সরকার জমি নির্ধারিত করেছিল ৷ তবে চাষিরা সেই জমিতে চাষবাস চালিয়ে যান ৷ একবার সরকারের তরফে অধিগ্রহণের চেষ্টা করা হয় ৷ কিন্তু চাষিদের বিক্ষোভ-আন্দোলনের মুখে পড়তে হয় ৷ সিল্ক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত মানুষজনের দাবি, তারপর থেকে বিষয়টি নিয়ে আর সেভাবে মাথা ঘামায়নি সরকার ৷ এখনও তা প্রতিশ্রুতির স্তরেই থেকে গেছে ৷

image
200 বছরের পুরোনো এই সিল্ক প্রিন্টিং শিল্প

অন্য প্রতিবন্ধকতা

এই সবকিছুর পাশাপাশি আরও কিছু সমস্যায় জর্জরিত সিল্ক প্রিন্টিং ৷ জমি কম থাকায় আর বড় কারখানা তৈরি করা যাচ্ছে না ৷ ছোটো কারখানায় বেশি সংখ্যক শ্রমিকের কাজের সমস্যা রয়েছে ৷ কিছু কারখানা চালু হওয়ার কয়েকমাস পরই বন্ধ হয়ে যায় ৷ প্রিন্টিংয়ের কাজে নানা ধরনের কেমিকেল ও রংয়ের ব্যবহার হয় ৷ যা দূষণ ঘটায় ৷ এক্ষেত্রে দূষণ নিয়ন্ত্রণের ছাড়পত্র পান না ব্যবসায়ীরা । ব্যাঙ্কের ঋণের ক্ষেত্রেও বহু জটিলতা রয়েছে । দেশের অন্যান্য রাজ্যে নিত্য-নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে ৷ শিল্পী ও ব্যবসায়ীদের দাবি, নানা কারণে এখনও পশ্চিমবঙ্গে এখনও পুরোনো পদ্ধতিগুলিই গুরুত্ব পায় ৷ তাই সহজে গুজরাত, মুম্বই এগিয়ে যাচ্ছে ৷ পিছিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ৷

আগের বছর যে পরিমাণ ব্যবসা হয়েছে ৷ এবার তার অর্ধেকও হয়নি ৷ জানাচ্ছেন স্লিক প্রিন্টার্স ওনার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রদীপ বণিক ৷ তিনি বলেন, "লকডাউনের আগে সব ভালোই চলছিল । কিন্তু লকডাউনে সমস্ত কাজ বন্ধ ৷ এখন কাজ না পেয়ে, শ্রমিকরা অন্য কাজে চলে যাচ্ছে ৷ বাইরে থেকে কাঁচামাল, রং কিছুই আসছে না । আমার সিল্ক প্রিন্টিংয়ের এই ব্যবসায় গতবছর 5 কোটি টাকা টাকা লেনদেন হয়েছিল । কিন্তু এবার 50 লাখ টাকারও লেনদেন হবে কি না সন্দেহ আছে । স্লিক হাব পার্ক করার কথা ছিল এই শ্রীরামপুরে। কিন্তু সেটাও জমি জটে আটকে৷ খুব সমস্যায় পড়েছি ৷"

সরকারের কথা মতো কাজ হয়নি বলে অভিযোগ ৷ পাশাপাশি দূষণ নিয়ন্ত্রণের ছাড়পত্র, ব্যাঙ্কের ঋণ সহ নানা জটিলতা৷ তাও চলছিল ব্যবসা ৷ কিন্তু লকডাউনের থাবায় আরও খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ৷ আপাতত অনিশ্চিত ভবিষ্যত নিয়ে সরকারি হস্তক্ষেপের অপেক্ষায় শ্রীরামপুরের স্লিক প্রিন্টিং ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.