গোঘাট, 24 জুলাই : এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে ফের তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ধুন্ধুমার বাধল গোঘাটের শ্যামবাজার এলাকা । দুই গোষ্ঠীর মারপিটের ঘটনায় উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজনকে গুরুতর জখম অবস্থায় কামারপুকুর হাসপাতালে ভর্তি হয় শুক্রবার রাতে । ঘটনার জেরে চাপা উত্তেজনা রয়েছে এলাকায় । এই ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে পুলিশ আটকও করেছে বলে সূত্রের খবর ।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে মূলত তৃণমূলের দুই যুযুধান গোষ্ঠী নিতাই নন্দী ও গিয়াসউদ্দিন খানের মধ্যে দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের । গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছায় । শুক্রবার রাতে তা মারধরের পর্যায়ে চলে যায় । আক্রান্ত নিতাই নন্দীর অভিযোগ, 3-4 দিন আগে পঞ্চায়েত প্রধান গিয়াসউদ্দিন খান শান্তিপুরের পাশে একটি শাখা ক্যানেলের পাড়ে থাকা গাছ পঞ্চায়েতের সদস্যদের অনুমতি না নিয়ে কেটে বিক্রি করে দেয় । এ নিয়ে তিনি থানা ও বিডিও অফিসে জানিয়েছিলেন ৷ এমনকি কাগজেও লেখালিখি হয়েছে বলে শুনেছেন তিনি ৷ সেই জন্যে এ দিন তিনি আক্রান্ত হয়েছেন । রহমত খাঁ মার খেয়েছেন, সাধন দেওকে হেনস্থা করার চেষ্টা চলে, রিয়াজুল মল্লিক মাঠে কাজ করতে গিয়েছিলেন, সেখানে আক্রান্ত হন ৷ এ নিয়ে একটা জিডি করেছেন তাঁরা ৷ এর পর রহমতকে মারধর করার কথা শোনায় তাঁরা তাঁকে বাঁচাতে যান ৷ সেই সময় পার্টি অফিস থেকে বেরতেই শাহাবুদ্দিন, গিয়াসউদ্দিন তেড়ে আসে ৷ শাহাবুদ্দিন তাঁকে কানে খুব জোরে আঘাত করেছে ৷ পঞ্চায়েত প্রধান গিয়াসউদ্দিন ঘুষি মারে ৷ কর্মীরাই তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে ।
আরও পড়ুন : তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে উত্তপ্ত বাসন্তী, চলল গুলি; মৃত এক মহিলা
অন্যদিকে আক্রান্ত গিয়াসউদ্দিন খানের অভিযোগ, পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের স্বামী নিতাই নন্দীর ভোটের আগে থেকে বিজেপির সঙ্গে গোপনে আঁতাত ছিল । এদিন সন্ধেয় তাঁরা পার্টি অফিস খুলে বসেছিলেন ৷ অতর্কিতে তাঁদের কার্যালয়ে নিতাই নন্দী বিজেপির প্রায় 100 জন "হার্মাদ" নিয়ে এসে হামলা চালায় । টাঙ্গি, রড, বাঁশ নিয়ে এসে বেধড়ক মারধর করা হয় তাঁদের। এলাকায় অশান্তির পরিবেশ তৈরি করতে উপ-প্রধানের স্বামী বিজেপির লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে এদিন রাতে হামলা চালিয়েছে । পার্টি অফিস ভাঙচুর করে তারা, সঙ্গে তাদের মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে ৷ আক্রান্ত হয়েছেন তাঁর দাদা শাহাবুদ্দিন খোদ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষও ৷ এই আক্রমণে তিনি নিতাই নন্দী, কাদের খান, হারুন, আখতার শাহ, রহমত শাহ, মিন্টু খাঁ, আখসার খাঁ, নেটু মণ্ডলের নাম উল্লেখ করেন ৷ তাঁর অভিযোগ পুলিশ সহযোগিতা করেনি ৷
পুরো বিষয়টি শীর্ষ নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে । সব দিকে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন, দাবি তৃণমূল ব্লক সভাপতি তপন মণ্ডলের ।